National News

তিন বছর জটা না কাটায় কিশোরীর মাথায় উকুনের বাসা! উদ্ধার করল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন

হর্ষদার বাবা-মা জানিয়েছেন, স্থানীয় এক গুণিন জট কাটতে নিষেধ করেছিল। তাঁদেরও বিশ্বাস ছিল, ওই জটা ভগবানের দান। তাই কাটা হয়নি। কিন্তু মাঝে মধ্যেই মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ত। ওই গুনিনকে জানালে গুনিন বলেন, স্কুলে ঋতুমতী অবস্থায় মেয়েরা হর্ষদাকে ছুঁয়ে দেওয়াতেই এভাবে রোগভোগ হয় তার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

পুণে শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ২০:৫৫
Share:

উদ্ধারের পর পার্লারে চুল কাটা হচ্ছে হর্ষদার। ছবি: সংগৃহীত

মাথায় বড় বড় চুল। পিছনের দিকে মোটা একটি ‘জটা’। তাতে বেয়ে বেড়াচ্ছে উকুন। কখনও মাথা থেকে ঝরে পড়ছে নীচে। চুলের নীচে গলায়-ঘাড়ে ময়লার আস্তরণ। পুণেতে বছর বারোর এমনই এক কিশোরীকে উদ্ধার করলেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। গ্রামের এক গুণিনের পরামর্শেই মেয়ের এই অবস্থা বলে স্বীকার করে নিয়েছেন বাড়ির লোকজন।

Advertisement

পুণের রাজগড়ের কাছে গবর গ্রামের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী হর্ষদা রঞ্জনে। আচমকাই এক দিন দেখা যায় হর্ষদার মাথার দিকে একটি ‘জটা’। তার পর থেকে গত প্রায় তিন বছ ধরে আর সেই ‘জটা’ অথবা মাথার চুল কোনওটাই কাটা হয়নি। কারণ ওই গ্রামের মতো কার্যত গোটা মহারাষ্ট্রেই প্রচলিত বিশ্বাস, ‘জটা’ ভগবানের দান। চুলের ওই ‘জট’ কাটলে বা সাবান শ্যাম্পু ব্যবহার করলে রোগভোগ হয়। দীর্ঘদিন চুল না কাটায় এবং সাবান শ্যাম্পু কিছুই না দেওয়ায় হর্ষদার ওই ‘জট’ আরও বড় হয়ে যায়। বাসা বাঁধে উকুন।

নরেন্দ্র দাভোলকর প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অন্ধশ্রদ্ধা নির্মূলন সমিতি (এএনএস) এর সদস্য নন্দিনী যাদব প্রথমে হর্ষদা রঞ্জনের খবর পান। প্রথম ফোনে কিশোরীর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু কিশোরীর মা-বাবা কিশোরীর চুল কাটতে রাজি হননি। এর পর গ্রামের কাউকে না জানিয়েই মঙ্গলবার বাড়িতে হানা দেন। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বুঝিয়ে শেষ পর্যন্ত হর্ষদার বাবা-মাকে রাজি করান এবং কিশোরীকে উদ্ধার করেন। পরে হর্ষদার চুলও কাটা হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: ত্রাণ তহবিলে জমা পড়েছে ৪০০ ভুয়ো চেক! জানালেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী

হর্ষদার বাবা-মা জানিয়েছেন, স্থানীয় এক গুণিন জট কাটতে নিষেধ করেছিল। তাঁদেরও বিশ্বাস ছিল, ওই জটা ভগবানের দান। তাই কাটা হয়নি। কিন্তু মাঝে মধ্যেই মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ত। ওই গুনিনকে জানালে গুনিন বলেন, স্কুলে ঋতুমতী অবস্থায় মেয়েরা হর্ষদাকে ছুঁয়ে দেওয়াতেই এভাবে রোগভোগ হয় তার।

আরও পড়ুন: পোশাক নিয়ে মন্তব্যে বিতর্কে জড়ালেন বিজেপিতে যোগ দেওয়া অভিনেত্রী মৌসুমী

নন্দিনীদেবী বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্র জুড়েই জটা সম্পর্কে নানা অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার রয়েছে। এই মেয়েটির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে গিয়েছিল। মাথা থেকে উকুন খসে খসে পড়ছিল। শেষ পর্যন্ত তাকে যে উদ্ধার করতে পেরেছি, এবং ওর বাবা-মাকে বোঝাতে পেরেছি, এটাই ভাল লাগছে।’’

(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন