Cooperative Banks

Cooperative Banks: নিজেদের হাতে সব সমবায়ই কি লক্ষ্য বিজেপির

মন্ত্রিসভার রদবদলের ঠিক আগে নতুন সমবায় মন্ত্রক তৈরি হয়েছে। সরকারি ভাবে এর নাম সহকারিতা বা সমন্বয় মন্ত্রক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২১ ০৫:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

মহারাষ্ট্র থেকে কেরল, গুজরাত থেকে পশ্চিমবঙ্গ— সাধারণত জেলায়-জেলায় রাজনৈতিক নেতা, বিধায়কদের হাতেই থাকে সমবায় সংস্থা বা সমবায় ব্যাঙ্কের নিয়ন্ত্রণ। ফলে কেন্দ্রে বা রাজ্যে যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক, স্থানীয় অর্থনীতির এই ‘চাবিকাঠি’ থাকে নেতা-বিধায়কদের হাতে। কিন্তু মহারাষ্ট্র, কেরল, পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে মূলত বিরোধী শিবিরের নেতাদের হাতে থাকা সমবায় ব্যাঙ্ক ও সংস্থার রাশও এ বার মোদী সরকার নিজেদের হাতে নিয়ে আসতে চাইছে কি না, তা নিয়ে দানা বাঁধছে সংশয়।

Advertisement

মন্ত্রিসভার রদবদলের ঠিক আগে নতুন সমবায় মন্ত্রক তৈরি হয়েছে। সরকারি ভাবে এর নাম সহকারিতা বা সমন্বয় মন্ত্রক। কিন্তু জানানো হয়েছে যে, এর কাজ হবে সমবায় মন্ত্রকের। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পাশাপাশি খোদ অমিত শাহ এর দায়িত্বে। অথচ মন্ত্রকের কাজ কী হবে, কোন আইনে তা ক্ষমতা প্রয়োগ করবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফলে সংশয় গভীর হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, কাজ যদি সমবায়েরই হয়, তাহলে মন্ত্রকের নাম সমন্বয় রাখা হল কেন?

তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য, সমবায় বিষয়টি রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। সেখানে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। তার পরেও যদি কেন্দ্র নাক গলানোর চেষ্টা করে, তা সব রকম ভাবে রোখা হবে। কেরলের কংগ্রেস নেতা রমেশ চেন্নিথালার প্রশ্ন, ‘‘সংবিধান অনুযায়ী, সমবায় রাজ্যের বিষয়। সংসদে আইন না-এনে কী ভাবে কেন্দ্র এ বিষয়ে মন্ত্রক তৈরি করতে পারে?’’ তাঁর অভিযোগ, বিজেপি সারা দেশে সমবায় সংস্থা ও ব্যাঙ্কগুলির নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইছে।

Advertisement

কী ভাবে? সিপিএম নেতা থমাস আইজ্যাকের ব্যাখ্যা, বিজেপি গুজরাতে কংগ্রেসের হাতে থাকা সমবায় সংস্থাগুলি দখল করেই নিজেদের রাজনৈতিক শিকড় ছড়িয়েছিল। সংসদে আইন করে শহরের সমবায় ব্যাঙ্কগুলির নিয়ন্ত্রণ রাজ্যের সমবায় রেজিস্ট্রারের থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এ বার গ্রামের প্রাথমিক সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকেও তার আওতায় আনা হবে। নাবার্ডের হিসাব অনুযায়ী, দেশে প্রায় ৯৬ হাজার প্রাথমিক, জেলা ও রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক রয়েছে। এই সব ব্যাঙ্কে জমা অর্থের পরিমাণ ৫ লক্ষ কোটি টাকার বেশি।

অমিত শাহ নিজে আমদাবাদ জেলা সমবায় ব্যাঙ্কের অন্যতম ডিরেক্টর ছিলেন। নোট বাতিলের পরে ওই ব্যাঙ্কে সব থেকে বেশি বাতিল নোট জমা পড়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্ক-সহ একাধিক সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান। তাঁকে ওই সব পদ থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য সমবায় দফতর। পর্যবেক্ষকরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, নতুন মন্ত্রক ঘোষণা ও মন্ত্রিসভার রদবদলের আগে শাহ-শুভেন্দুর একাধিক বার বৈঠক হয়েছে। যদিও ওই বৈঠকে সমবায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, এমন নিশ্চিত খবর নেই।

বিজেপি নেতারা বলছেন, এই মন্ত্রকের উদ্দেশ্য সমবায় আন্দোলন গড়ে তুলে কর্মসংস্থান। কারণ, বেসরকারি সংস্থার পক্ষে সব ব্যবসা করা সম্ভব নয়। কিন্তু এখন সারা দেশেই সমবায় সংস্থাগুলির নিয়ন্ত্রণ রাজনৈতিক নেতাদের হাতে। সেখানেই বাধা। তবে মহারাষ্ট্র, কেরলের মতো রাজ্য থেকে যে বাধা আসবে, তা বিজেপি নেতারা বুঝতে পারছেন। এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার, অজিত পওয়ারের উত্থানই সমবায় আন্দোলন থেকে। এনসিপি নেতাদের বক্তব্য, শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট সরকারের আগে বিজেপির দেবেন্দ্র ফডণবীস মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু তখনও এনসিপি, কংগ্রেসের হাতে সমবায়ের লাগাম থেকেছে। বিজেপি সেখানেও ঢুকতে চাইছে বলে বিরোধীদের আশঙ্কা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন