জয়ের পাশে কেন কেন্দ্র, উঠল প্রশ্ন  

যে ওয়েবসাইট মোদী-জমানায় জয়ে ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠা সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, আজ তার মালিক, সম্পাদক, সংশ্লিষ্ট  সাংবাদিক-সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মানহানির ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছেন জয়। এর পরে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের মামলাও হবে। তুষার মেটাই জয়ের হয়ে সেই মামলা লড়বেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:০০
Share:

অমিত-পুত্র জয় শাহ

অমিত শাহের পুত্র জয় শাহের ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে রবিবার। বিরোধীরাও রবিবার অমিত শাহর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। তার দু’দিন আগে, শুক্রবারই কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) তুষার মেটাকে জয়ের হয়ে মানহানি মামলা লড়ার অনুমতি দিয়ে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। যে ওয়েবসাইট মোদী-জমানায় জয়ে ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠা সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, আজ তার মালিক, সম্পাদক, সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক-সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মানহানির ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছেন জয়। এর পরে ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের মামলাও হবে। তুষার মেটাই জয়ের হয়ে সেই মামলা লড়বেন।

Advertisement

অমিত-পুত্র জয়ের হয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল কেন সাংবাদিক বৈঠক করছেন, তা নিয়ে রবিবারই প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধীরা। আজ কংগ্রেসের নেতা আনন্দ শর্মার প্রশ্ন, ‘‘সরকারি আইনজীবী কী ভাবে সরকারি পদে না থাকা ব্যক্তির হয়ে মামলা লড়ছেন?’’

আরও পড়ুন:‘চৌকিদার’ মোদীই বিদ্ধ রাহুলে

Advertisement

গয়াল আজ দ্বিতীয়বার জয়ের হয়ে সওয়াল করতে সাংবাদিকদের সামনে হাজির হয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল আগেও অনুমতি নিয়ে সরকারি পদে না থাকা ব্যক্তির হয়ে মামলা লড়েছেন। এ’টা তাঁদের নিজেদের বিষয়।’’ সরকার আগে ভাগেই কী করে অনুমতি দিয়ে দিল? মন্ত্রীর জবাব, এই সরকারের আমলে তড়িঘড়ি কাজ হয়।

এএসজি তুষার মেটা

গয়ালের অধীনে থাকা অপ্রচলিত বিদ্যুৎ মন্ত্রকের সংস্থা অমিত-পুত্রের সংস্থাকে ঋণ দিয়েছিল। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির কটাক্ষ, ‘‘যে মন্ত্রক ঋণ দিচ্ছে, তারই মন্ত্রীকে দিয়ে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে। এ বার এএসজি তাকে রক্ষা করবেন। আরও প্রমাণ দরকার?’’

ওয়েবসাইটটি তাদের প্রতিবেদনের জন্য জয়ের কাছে প্রশ্নাবলি পাঠিয়েছিল গত বৃহস্পতিবার। সে দিনই নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, অরুণ জেটলির দীর্ঘ বৈঠক হয় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে। যে বৈঠক সংক্রান্ত কোনও তথ্য সরকারি ভাবে জানানো হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে, সরকার কি আগেই বুঝতে পেরেছিল, ওই প্রতিবেদন নিয়ে ঝড় উঠতে চলেছে?

বিজেপি নেতাদের যুক্তি, দলে সকলেই একটি পরিবারের মতো। একে অন্যের মতামত নিতে অসুবিধা নেই। বিরোধীদের প্রশ্ন, এএসজি-ও সেই পরিবারের সদস্য? বিরোধীদের যুক্তি, বাবার পদকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছে অমিত শাহের ছেলের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের বিরুদ্ধে লড়তেও তিনি কেন্দ্রের ঘনিষ্ঠতাকে কাজে লাগাচ্ছেন। কেন্দ্রের এএসজি পদে আসার আগে তুষার মেটা গুজরাতের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন। সে সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে গোধরা-অভিযুক্তদের সাহায্য করার অভিযোগ উঠেছিল। জয়ের আইনজীবী মাণিক ডোগরা ওয়েবসাইটের প্রশ্ন পেয়েই এএসজি তুষার মেটার সঙ্গে শলাপরামর্শ করেন, সেই তথ্যও প্রকাশ্যে এসেছে।

এর আগে অরবিন্দ কেজরীবালের বিরুদ্ধে জেটলি ১০ কোটি টাকার মানহানি মামলা করেছিলেন। এখন অমিত-পুত্র জয় মানহানির মামলা করছেন ১০০ কোটি টাকার। এমন প্রশ্নও করা হয় যে, জয় কি তবে জেটলির থেকেও দশ গুণ বড় নেতা?

জবাব দিতে থতমত গয়াল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন