Higher Secondary

Higher secondary: ৩৫% পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান! সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন

মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিষয়ে ৩৫ শতাংশ নম্বর পাওয়া পড়ুয়ারা উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার ছাড়পত্র পেলেও তারা সফল হতে পারবে কি?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২২ ০৭:০৯
Share:

বিপুল সংখ্যক পড়ুয়াকে ভর্তি করলে সমস্যা সমলানো যাবে কী ভাবে? ফাইল ছবি

অতিমারি পর্বে পাঠ্যক্রম কাটছাঁট করার সময় এই প্রশ্ন ও আশঙ্কা বড় হয়ে উঠছিল যে, পুরো পাঠ্যাংশ অধিগত না-করে পড়ুয়ারা এখনকার মতো উতরে গেলেও উচ্চতর শিক্ষায় তাদের কী হবে? এ বার প্রশ্ন উঠছে, মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিষয়ে ৩৫ শতাংশ নম্বর পাওয়া পড়ুয়ারা উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার ছাড়পত্র পেলেও তারা সফল হতে পারবে কি? এই নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা রীতিমতো সংশয়ে। সেই সঙ্গে তাঁদের বক্তব্য, প্রতিটি স্কুল সর্বাধিক ৪০০ জন ভর্তি নিতে পারবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। কিন্তু ৪০০ জনকে ভর্তি করতে গেলে তো উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুলগুলির পরিকাঠামোর উন্নতি দরকার। অনেক উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে তো পর্যাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাই নেই। সেই সব ঘাটতি পূরণের আগে ওই বিপুল সংখ্যক পড়ুয়াকে ভর্তি করলে সমস্যা সমলানো যাবে কী ভাবে?
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মাধ্যমিকে অঙ্ক, জীবনবিজ্ঞান, ভৌত বিজ্ঞানে ৩৫ শতাংশ
নম্বর পেলেই উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞানের কয়েকটি শাখায় ভর্তির জন্য আবেদন করা যাবে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, বেশির ভাগ সময়েই মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিষয়ে ৩৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হলে বিপুল পাঠ্যক্রমের চাপ সামলাতে না-পেরে পড়ুয়ারা ভাল ফল করতে পারছে না। বিজ্ঞানের বিষয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে কম্পার্টমেন্টাল পায় তাদের অনেকেই এবং একাধিক বছর পরীক্ষা দিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করতে হয়। অথচ বিজ্ঞান না-নিয়ে অন্য কোনও বিষয়ে ভর্তি হলে তারা হয়তো ভাল ফল করতে পারত।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর মতে, এখনও অনেক মা-বাবাই চান, তাঁদের ছেলেমেয়ে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ুক, ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হোক।
সন্তানের সেই মেধা আছে কি না বা বিজ্ঞানে তাদের ঝোঁক আছে কি না, সেটা যাচাই করেন না তাঁরা। তাই মাধ্যমিকে বিজ্ঞানের বিষয়ে ৩৫ শতাংশ বা তার থেকে সামান্য কিছু বেশি নম্বর পেলেই ছেলে বা মেয়েকে উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার জন্য আবেদন করতে বলেন। সৌগতবাবু বলেন, “এ ভাবে বিজ্ঞান নিয়ে পাশ করার পরে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তির স্বপ্ন দেখালে আখেরে ক্ষতিই হয় শিক্ষার্থীদের। আমাদের দাবি, উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার জন্য মাধ্যমিকে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর আবশ্যিক করা হোক।”
মাধ্যমিকে ৯০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হয়, অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে থাকে ১০র। শিক্ষক শিবিরের একাংশের মতে, অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে অনেক পড়ুয়াকেই দশের মধ্যে দশ বা নয় দেওয়া হয়।
একশোয় পাশ করতে গেলে ৩০ নম্বর লাগে। তা হলে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে গেলে মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিষয়ে লিখিত পরীক্ষায় কেউ যদি মাত্র ২৫ বা ২৮ পায়, তা হলেই উচ্চ মাধ্যমিকে তার বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার সুযোগ পাওয়ার কথা। কিন্তু বিজ্ঞান বিষয়ে এত কম নম্বর পেলে কি সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার যোগ্য বলে বিবেচনা করা উচিত, প্রশ্ন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “এই ৩৫ শতাংশ নম্বর পেলেই বিজ্ঞানে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের বিধির মধ্যে পড়ে। গত বার করোনার জন্য পরীক্ষা না-হওয়ায় ভর্তির জন্য ন্যূনতম নম্বর ৪৫ শতাংশ করা হয়েছিল।”

Advertisement

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন