ছেলে তেজস্বীর সঙ্গে রাবড়িদেবী। ফাইল চিত্র।
রাষ্ট্রীয় জনতা দল এবং কংগ্রেসের তৈরি করা মহাজোটে ফিরতে কতটা মরিয়া হয়ে উঠেছেন নীতীশ কুমার, এই প্রশ্নেই এখন তোলপাড় বিহারের রাজনীতি। সেই জল্পনাকে এ বার আরও উসকে দিলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবী। সংবাদমাধ্যমকে রাবড়ি বললেন, ‘‘নীতীশের প্রস্তাবিত জোটের বার্তা নিয়ে দূত হিসেবে আমাদের কাছে অন্তত পাঁচ বার এসেছেন জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর নেতা প্রশান্ত কিশোর। জোটের শর্ত হিসেবে নীতীশ বলেছিলেন, তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে সমর্থন করুক আমাদের মহাজোট। তাঁর বদলে বিহারের মুখ্যমন্ত্রিত্বে বসানো হবে আমার ছেলে তেজস্বীকে।’’
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিহারে বিজেপি এবং জেডিইউ জোট করে লড়ার সিদ্ধান্ত নিলেই বইছে অসন্তোষের চোরা স্রোত। বিভিন্ন সময় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছেন দুই দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা। সেই জন্যই ফের কংগ্রেস এবং লালুপ্রসাদের আরজেডির সঙ্গে মহাজোট তৈরি করতে চেয়েছিলেন কি না, সেই প্রশ্নে রাবড়ির উত্তর, ‘‘নীতীশকে কোনও গুরুত্ব দেয় না এনডিএ, বিজেপি বা নরেন্দ্র মোদী, কেউই। বিজেপি ওঁকে খুবই চাপে রেখেছে, সেই জন্যই উনি আমাদের কাছে আসতে চাইছেন। অন্তত পাঁচ বার ওঁর বার্তা নিয়ে আমাদের কাছে এসেছেন প্রশান্ত কিশোর। নীতীশ জানিয়েছেন, ও তেজস্বীকে ২০২০ সালে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। তার বদলে যেন আমরা ওঁকে এই লোকসভা নির্বাচনে মহাজোটের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরি।’’
২০১৫ সালে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে নীতীশ কুমারের নির্বাচন কৌশলী হিসেবে কাজ করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। ২০১৮ সালে তিনি যোগ দিয়েছিলেন নীতীশের জেডিইউতে। তিনি কি সত্যিই নীতীশের দৌত্যের বার্তা নিয়ে আরজেডি ক্যাম্পে হাজিরা দিয়েছিলেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে লালু-রাবড়ির ছেলে এবং এই মুহূর্তে আরডেজির অন্যতম কাণ্ডারী বলছেন, ‘‘লালুপ্রসাদের বই, ‘গোপালগঞ্জ টু রাইসিনা’তেই সব কিছু বলা আছে। প্রশান্ত কিশোর রাজনৈতিক ভাবে সক্রিয় নন, অথচ টুইটারে পুরোদস্তুর সক্রিয়। উনি কি নীতীশের অনুমতি নিয়ে আমাদের কাছে এসেছিলেন? ওঁর আগে সম্মতি নিয়েই আসা উচিত ছিল।’’
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক দলগুলির দুর্বলতা জেনে ফেলাই কি প্রশান্ত কিশোরের উন্নতির অন্তরায়?
আরজেডির সঙ্গে ফের মহাজোট তৈরিতে নীতীশের উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তেজস্বী বলেন, ‘‘এই সত্য কেউই অস্বীকার করার জায়গায় নেই। নীতীশজির নিজেরই সামনে এসে বলা উচিত, এনডিএ-তে যাওয়ার ছ’মাসের মধ্যে তিনি আমাদের কাছে ফিরে আসতে মরিয়া হয়ে উঠলেন কেন। ওঁর দূত হিসেবে প্রশান্ত কিশোর আমাদের সবার সঙ্গে কথা বলছেন। লালুপ্রসাদের সঙ্গেও বলেছেন। কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গেও বলেছেন।’’
আরও পড়ুন: রামমন্দির নিয়ে মতভেদ, বিহারের হাজিপুরে বিজেপি-জেডিইউ সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি, সংঘর্ষ
এর আগে প্রাক্তন জেডিইউ নেতা শরদ যাদবও বলেছিলেন, নীতীশ আবার সম্পর্ক ঠিক করার প্রস্তাব দিয়েছেন। জেডিইউ থেকে বেরিয়ে আসার পর মাধেপুরায় আরজেডির টিকিটে এই নির্বাচনে লড়ছেন শরদ।