প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হঠানোর দাবি জোরদার করতে কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গাঁধীর সুরে সুর মেলালেন তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদীর ইস্তফা।
দিল্লিতে মঙ্গলবার এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা ও রাহুল, দু’জনেরই বক্তব্যের মূল নির্যাস, প্রধানমন্ত্রী মোদীর এ বার ইস্তফা দেওয়া উচিত। কারণ, তিনি তাঁর কথা রাখতে পারলেন না। বাজার-চলতি নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর, আগামীকাল, বুধবারই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে ওঠার জন্য তাঁর দেওয়া সময়সীমা ফুরনোর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তিনি বলেছিলেন, ৫০ দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। কিন্তু এখন তা হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই চোখে পড়ছে না। তাই আমজনতার দুর্ভোগের দায়িত্ব নিয়ে এ বার প্রধানমন্ত্রী মোদী ইস্তফা দিন। মোদী সরকারের নোট বাতিল সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এ দিন যৌথ ভাবে বৈঠক করেন বিরোধীরা। তাতে ডিএমকে এবং আরজেডি থাকলেও, বাম দলগুলি, নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল ও শরদ পওয়ারের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) আসেনি। গরহাজির ছিল সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টিও (বিএসপি)।
আরও পড়ুন- নোটকাণ্ডে মোদীকেই বিঁধুন, দাওয়াই রাহুলের
ওই যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে এ দিন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘সিআরপিএফ দিয়ে আয়কর হানা দেওয়ানো হচ্ছে। আচ্ছে দিনের নামে দেশ লুঠ চলছে। একের পর এক নেতাদের ভয় দেখানো হচ্ছে। গ্রেফতারের জুজু দেখানো হচ্ছে। এক বার দেওয়া হচ্ছে সনিয়াকে পাকড়াও করার হুমকি। আর এক বার হুমকি দেওয়া হচ্ছে মমতাকে। আবার লালুপ্রসাদ যাদবকেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ সব কী চলছে? ক্যাশলেসের নামে মোদী সরকারই আসলে ফেসলেস হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ওই ঘোষণার ফলে দেশের সব উন্নয়ন থমকে গিয়েছে। সরকার দুর্বল, কোনও কাজই ঠিকমতো হচ্ছে না। গত ৪৯ দিনে ২০ বছর পিছিয়ে গিয়েছে দেশ। যা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের করার কথা ছিল, তা আপনি করছেন। ব্যাঙ্কের ওপর থেকে মানুষের ভরসা উঠে যাচ্ছে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ব্যাঙ্কের পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে। নোট বাতিল করার ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ভারতে ‘আচ্ছে দিন’ আনবেন বলেছিলেন। এটাই হচ্ছে তার নমুনা! বলেছিলেন, ৫০ দিনে সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে। কিন্তু কিছুই তো হল না। কেন হল না? ৫০ দিন পর ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে সরকার কি এ বার সরে যাবে? নোট বাতিল নিয়ে মানুষের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরার জন্য আমরা সবক’টি বিরোধী দল মিলে একজোট হয়েছি। এটা একটা বড় ইস্যু। ৫০ দিন পর সরকার কি এ বার সরে যাবে?’’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের আগে এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গাঁধী বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ঘোষণার ফলে দেশের গরিব, মধ্যবিত্তদের হাতে টাকা নেই। নরেন্দ্র মোদী জবাব দিন, সাধারণ মানুষের এত দুর্ভোগ কেন?’’
ও দিকে, তাঁর নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার জেরে দেশের আর্থিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট পদস্থ সরকারি কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।