ন্যানো নিয়েও মোদীকে খোঁচা দিলেন রাহুল

নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে বিরোধী দলের কোনও নেতার এমন আকর্ষণ সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:৩২
Share:

মোদী ও রাহুল গাঁধী।

অনেক ক্ষণ ধরেই পিছু নিচ্ছিলেন তরুণী। শেষ পর্যন্ত নজরে আসতে নিজেই ভ্যানের মাথায় ডেকে নিলেন রাহুল গাঁধী। নিরাপত্তা কর্মীদের সাহায্যে ভ্যানের মাথায় চড়ে রাহুলের কাঁধে হাত রেখে, ফুলের তোড়া দিয়ে নিজস্বী তুললেন ওই তরুণী।

Advertisement

নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে বিরোধী দলের কোনও নেতার এমন আকর্ষণ সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি। ভারুচে পৌঁছে আজ সকালে যখন সভা করলেন রাহুল, তখনও জনতার সাড়া ছিল স্বতস্ফূর্ত। নোট বাতিল বা জিএসটি হোক কিংবা এ দেশে ব্যবসা করার পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্ট— রাহুল যত বারই নরেন্দ্র মোদীকে বিঁধেছেন, হাততালি কুড়িয়েছেন জনতার। গুজরাতে জলের আকাল, রোজগারের হাহাকার নিয়েও রাহুলের কটাক্ষে সুর মিলিয়েছেন তাঁরা।

আর এর সূত্র ধরেই রাহুল হাতিয়ার করেন গুজরাতের ন্যানো কারখানাকে। বিরোধী দলে থাকার সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের জেরে যেটি সিঙ্গুর থেকে গুজরাতের সানন্দে নিয়ে গিয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাহুল বলেন, ‘‘ন্যানো গাড়ি এখন রাস্তায় দেখা যায় না। অথচ সেই ন্যানো কারখানার জন্যই টাটাদের ৩০ হাজার কোটি টাকার সুবিধা দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সেই টাকাতেই অনায়াসে কৃষকদের ঋণ মাফ হয়ে যেত।’’

Advertisement

মোদী ক্ষমতায় আসার কয়েক দিন পর থেকেই রাহুল অভিযোগ করা শুরু করেন, কেন্দ্রে এখন বাছাই করা শিল্পপতিদের সরকার। এটি আসলে সুট-ব্যুটের সরকার। কিন্তু গুজরাতের ভোটে অন্য শিল্পপতিদের ছেড়ে শুধুমাত্র ন্যানোকেই কেন আক্রমণ করলেন রাহুল? গুজরাতের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌত বলেন, ‘‘আসলে জনসভায় ন্যানোর মতো কোনও বিষয় বললে সাধারণ মানুষ সহজে বুঝতে পারেন। রাস্তাঘাটে আর ন্যানো দেখা যাচ্ছে না, আমজনতা সেটা জানেন।’’

আর রাহুলের সভায় এমন সাড়া দেখেই কপালে ভাঁজ পড়েছে বিজেপির। কংগ্রেসের সংগঠন যে খুব মজবুত এমন নয়, কিন্তু সম্প্রতি তিন যুব নেতাকেও সঙ্গে নিয়ে শক্তি বাড়িয়েছেন রাহুল। ফলে তাঁকে মোকাবিলা করতে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে মোদী ও অমিত শাহকে। মেরুকরণের চেনা ছকে ফিরতে রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী নিতিন পটেল বলেছিলেন, ‘‘রাহুল এ বারে ভোটে জিততে হাফিজ সঈদকেও দলে নেবেন।’’ আবার গুজরাতের এক হাসপাতাল থেকে আইএস জঙ্গি ধরা পড়ার পরে অহমেদ পটেলের ইস্তফার দাবি তোলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী। তাঁর অভিযোগ, হাসপাতালের ট্রাস্টি বোর্ডে ছিলেন পটেল।

রাহুল আজ যে এলাকায় রোড-শো, সভা করেছেন, সেটি মূলত সংখ্যালঘু বহুল এলাকা। অহমেদ পটেল নিজেও ছিলেন মঞ্চে। সেখানেই তিনি পাল্টা তোপ দেগে বলেন, বিজেপির থেকে জাতীয়তাবাদ শিখতে হবে না। আর সদ্য রাজ্যসভা জিতে এসেছেন। ইস্তফা দেওয়ার প্রশ্নই নেই। তবে এ দিনই অহমেদ পটেলের ‘ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ী গগন ধাওয়ানকে গ্রেফতার করেছে ইডি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement