মেহুল চোক্সীর টাকা পেয়েছেন জেটলির মেয়ে, গুরুতর অভিযোগ রাহুলের

কংগ্রেস সভাপতির অভিযোগ, ‘‘জেটলির মেয়ে ‘চোর’ চোক্সীর থেকে বেতন পেতেন। আর তাঁর অর্থমন্ত্রী ‘ড্যাডি’ মেহুলের ফাইল নিয়ে বসে থেকে কোনও ব্যবস্থা নেননি। উল্টে তাঁকে পালাতে দিয়েছেন।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:০৩
Share:

রায়পুরের জনসভায় রাহুল গাঁধী। (ডান দিকে) মেহুল চোক্সী ও জেটলির মেয়ে সোনালি

রাফাল-কাণ্ডের পাশাপাশি এবার মেহুল চোক্সী প্রসঙ্গে আক্রমণ তীব্র করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। এ বিষয়ে আজ অরুণ জেটলির মেয়ে-জামাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে অর্থমন্ত্রীর ইস্তফা চাইলেন তিনি। টুইটারে এবং ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরে নির্বাচনী প্রচার সভায় এই অভিযোগ আনেন তিনি। শুধু মৌখিক অভিযোগই নয়, জেটলি-কন্যার একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরও তিনি টুইট করে দাবি করেন, এই অ্যাকাউন্টেই কয়েক লক্ষ টাকা দিয়েছেন চোক্সী। প্রসঙ্গত, এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী চোক্সীকে (তখনও তিনি পিএনবি কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত নন) ‘মেহুলভাই’ বলে সম্বোধন করেছিলেন বলে পরে জানাজানি হওয়ায় বিস্তর বিতর্ক হয়েছিল।

Advertisement

বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, এই অভিযোগ অতীতেও তুলেছে কংগ্রেস। তা ধোপে টেকেনি। জেটলি তখনও ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছিলেন, আইনি সাহায্যের জন্য তাঁর মেয়ে-জামাইয়ের সংস্থা অর্থ নিতেই পারে। কিন্তু মেহুল দেশ ছেড়ে পালানোর পর তাঁর সংস্থাকে আইনি সাহায্যই করেনি তারা। পুরো টাকাই ফেরত দেওয়া হয়।

কংগ্রেস সভাপতির অভিযোগ, ‘‘জেটলির মেয়ে ‘চোর’ চোক্সীর থেকে বেতন পেতেন। আর তাঁর অর্থমন্ত্রী ‘ড্যাডি’ মেহুলের ফাইল নিয়ে বসে থেকে কোনও ব্যবস্থা নেননি। উল্টে তাঁকে পালাতে দিয়েছেন।’’ কংগ্রেসের এক ঝাঁক নবীন নেতা আজ সকালেই দিল্লিতে এআইসিসি অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে অভিযোগ করেছিলেন, জেটলির মেয়ে সোনালি ও জামাই জয়েশ বক্সীর আইনি সংস্থা ২৪ লক্ষ টাকা নিয়েছিল মেহুলের সংস্থার থেকে। নীরব মোদী-চোক্সী দেশ ছেড়ে পালানোর পর এফআইআর হওয়ার অনেক পরে সেই টাকা ফেরত দেন। প্রধানমন্ত্রী ‘না খাব, না খেতে দেব’ স্লোগান তুলেও অর্থমন্ত্রীর জামাই ও মেয়েকে সেই অনুমতি দিয়েছিলেন।

Advertisement

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ব্যাখ্যা, জেটলিকে সামনে রেখে নরেন্দ্র মোদীকেও নিশানা করছে কংগ্রেস। মোদী-জেটলির সম্পর্ক তেমন ‘মধুর’ নয়। তবে অসুস্থতা কাটিয়ে কাজে যোগ দেওয়ার পর থেকেই জেটলি লাগাতার মোদীর হয়ে রাহুলকে আক্রমণ করে আসছেন। রাফাল-কাণ্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে ব্লগ লিখে রাহুল এবং কংগ্রেসকে নিশানা করছেন। সুষমা স্বরাজ, রাজনাথ সিংহ, নিতিন গডকড়ীরা সে ভাবে কিছু বলছেন না। বরং জেটলিকেই প্রধানমন্ত্রীর প্রধান ‘মুখপাত্র’ করে তোলা হয়েছে। তাই অতীতে জেটলিকে সে ভাবে আক্রমণ না করলেও এখন তাঁকেও রেয়াত করতে চাইছেন না রাহুল। সকালে দলের নেতারা অভিযোগ তোলার পরেও তা তেমন প্রচার না হওয়ার পর সন্ধেয় রাহুল নিজেই জেটলি-কন্যার আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট নম্বর টুইট করেন। বলেন, ‘‘মিডিয়া এই খবর দেখাচ্ছে না। কিন্তু ভারতের মানুষকে আটকানো যাবে না। জেটলির পদত্যাগ করা উচিত।’’

সোমবার রাহুলের সেই টুইট

সচিন পাইলট, সুস্মিতা দেবের মতো কংগ্রেসের নবীন নেতারা আজ অভিযোগ করেন, বিজয় মাল্যও বলেছিলেন জেটলিকে বলেই তিনি বিদেশে পালিয়েছেন (যদিও কোনও বৈঠকের কথা আগেই অস্বীকার করেছিলেন জেটলি)। ২০১৫ সাল থেকেই প্রধানমন্ত্রীর দফতর, অর্থমন্ত্রকে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছিল, মেহুলও পালাতে পারেন। তা হলে ‘যোগসাজশ’ না থাকলে জেটলির মেয়ে-জামাইয়ের আইনি সংস্থা কী করে ২৪ লক্ষ টাকা নেয়?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন