মোদীর সব মিথ্যে, সুর চড়ালেন রাহুল গাঁধী

কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে প্রথম ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে আজ এক দিকে সনিয়া গাঁধী ও অন্য দিকে মনমোহন সিংহকে পাশে বসিয়ে তিনি তুলোধোনা করলেন প্রধানমন্ত্রীকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৪১
Share:

উদ্যম: কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে এলেন দলের সভাপতি রাহুল গাঁধী। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে দলের সদর দফতরে। ছবি: পিটিআই।

গুজরাত ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে লাগাতার ঝাঁঝালো আক্রমণ শানিয়ে গিয়েছেন রাহুল গাঁধী। টুজি মামলায় রেহাই পেতেই মনমোহন সিংহের পাশে দাঁড়িয়ে মোদী-বিরোধিতার ধার এ বার আরও বাড়ালেন তিনি।

Advertisement

কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে প্রথম ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে আজ এক দিকে সনিয়া গাঁধী ও অন্য দিকে মনমোহন সিংহকে পাশে বসিয়ে তিনি তুলোধোনা করলেন প্রধানমন্ত্রীকে। রাহুলের কথায়, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর গোটা মডেলটাই ভুয়ো। টুজি নিয়েও সম্ভবত সব থেকে বড় অস্ত্র আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হয়েছে। সেটিও ভুয়ো বেরোলো।’’ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে ক্ষুব্ধ রাহুল বললেন, ‘‘মরিয়া মোদী মিথ্যা প্রচারকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেন, যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকেও অপমান করতে ছাড়েন না। মানুষ এখন এই অপমান নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।’’

রাহুলের সুরে কমিটির সদস্যরাও একযোগে অভিযোগ করেন, ইউপিএ সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসতে মোদী, অরুণ জেটলিরা তৎকালীন সিএজি বিনোদ রাইয়ের সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্র করেছেন। বিনোদের ডেপুটি আর পি সিংহ বলেছিলেন, রাজস্ব ক্ষতি বড় জোর ২,৬৪৫ কোটি টাকা। কিন্তু বিনোদ জোর করে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা লিখিয়ে নেন। আদালতে সিবিআই বলেছিল, অঙ্কটা তিরিশ হাজার কোটি। কিন্তু এখন আদালত স্পষ্ট করে দিল, রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ শূন্য। কোনও দুর্নীতিই হয়নি। ভোটে জিততে মোদী এতই মরিয়া যে, পূর্বসূরিকে দেশদ্রোহী বলতে তাঁর বাধে না। আর ভোট শেষ হতে তিনি রহস্যজনক ভাবে চুপ।

Advertisement

বৈঠকের পরে রাহুল বাইরে এসে বলেন, ‘‘টুজি নিয়ে সত্য সামনে এসেছে। পুরোটাই মিথ্যে। মোদী মডেল বলেও কিছু নেই। সবটাই ভাঁওতা। রাফাল থেকে অমিত শাহের ছেলের দুর্নীতি— কোনও প্রশ্নেরই জবাব দেননি প্রধানমন্ত্রী।’’ কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘টুজি নিয়ে তিন বছরে ৫০০ ঘণ্টা সংসদ অচল করে রেখেছিল বিজেপি। অপচয় হয়েছে ৭৫০ কোটি টাকা। আজ মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চহ্বাণও রেহাই পেয়েছেন। সেখানেও রাজ্যপালের মতো সাংবিধানিক পদের অপব্যবহার করেছে বিজেপি। একে একে খোলসা হচ্ছে বিজেপির মিথ্যা।’’

আরও পড়ুন: হিংস্রতাই বড় সঙ্কট আজ, বললেন কৌশিক বসু

সংসদের শীত অধিবেশনের গোড়া থেকেই কংগ্রেস লাগাতার দাবি তুলছে, পাক নেতাদের সঙ্গে গুজরাত ভোট নিয়ে আলোচনা করার মিথ্যা অভিযোগ তুলে মনমোহনকে অপমান করার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। কিন্তু মোদী এড়িয়ে যাচ্ছেন সংসদ। আজও এ নিয়ে হল্লার জেরে মুলতুবি হয়ে যায় সংসদের দুই কক্ষই। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদের সঙ্গে বৈঠক করলেও কংগ্রেস অনড়।

এ দিন দিল্লির পথেও কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের প্রতিবাদে নামান রাহুল। দলের বক্তব্য, বফর্সের মতো টুজি মামলাও সাজানো হয়েছিল শুধু ভোট জিততে। বফর্স প্রমাণ হয়নি, টুজিও হল না। অথচ মোদী একেই অস্ত্র করে মনমোহনকে গদিচ্যুত করেছেন। তবে দলের অনেকের মত, টুজি নিয়ে খুব বেশি হাঙ্গামা করা উচিত নয়। এ মামলায় মূল অভিযুক্ত ডিএমকে নেতারাই। বরং মোদী যে ভাবে মনমোহনকে অপমান করেছেন, সেটিকেই পুঁজি করে আন্দোলন হোক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন