শুধু নরেন্দ্র মোদী নন, সামনে রাখলেন মোহন ভাগবতকেও। ভাগবতের মস্তিষ্ক থেকে বেরোনো ভাবনাকে ‘ঠুনকো’ ও ‘মধ্যমেধা’-র আখ্যা দিয়ে রাহুল গাঁধী নিজের দলকে বোঝালেন, কংগ্রেস কোথায় এঁদের থেকে আলাদা? সঙ্গে জানালেন, মোদী-ভাগবতের ভাবনার কোন বিকল্প নিয়ে ভোটে যাবেন তিনি?
রাফাল থেকে বেকারি, কৃষি সঙ্কট থেকে বিভাজনের রাজনীতি— মোদীকে নিরন্তর তোপ দেগে চলেছেন রাহুল। বিজেপি তাতে প্রশ্ন তুলছে, রাহুল শুধু নিন্দাই করেন। ভোটে জিতলে বিকল্প কী দেবেন মানুষকে? রাহুল সেই কাজটিই শুরু করলেন এ বার। দিল্লিতে দলের যুবকদের সম্মেলনে আজ কবুল করলেন, ২০১৪ সালে মানুষ কংগ্রেসকে শিক্ষা দিয়ে বলেছিল, ঔদ্ধত্য এসেছে। বিনম্র হওয়া প্রয়োজন। জনতার সঙ্গে আরও জুড়তে হবে। আর সেই কাজটি করার পরেই পরিস্থিতি বদলেছে। আগে নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেস-মুক্ত ভারত করার কথা বলতেন। এখন এ দিক, ও দিক, যে দিকেই তাকান, শুধুই কংগ্রেস দেখেন। এমনকি বিজেপির সাংসদও কংগ্রেসে আসতে চান। বিজেপিতেও এখন কংগ্রেস!
কিন্তু এখানেই থামলেন না রাহুল। দলকে বোঝালেন, আরএসএসের মতো শর্ট আর টুপি পড়িয়ে হাতে লাঠি নিয়ে কোনও নির্দেশ পালন করা বা প্রতিষ্ঠানকে কব্জা করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে না কংগ্রেসে। বরং সব ধর্ম, জাতি, মহিলা-পুরুষকে ‘ফুলের তোড়া’-র মতো সামিল করতে হবে। দেশ এখন আরএসএস এবং নরেন্দ্র মোদীকে শিক্ষা দিতে চায়। তাদের পরাস্ত করতে কংগ্রেস আর ব্যাকফুটে খেলবে না। ফ্রন্টফুটে খেলেই মোদীকে জনতার শক্তি দেখাবে। রাহুলের কথায়, ‘‘সাভারকরের মতো ব্রিটিশদের কাছে ক্ষমা চাওয়া নয়, গাঁধীর মতো সাহস দেখিয়ে জেলে যাওয়ার দল কংগ্রেস।’’
শুধু সাংগঠনিক বিষয় নয়, আগামী দিনে কংগ্রেস সরকার কী দিতে চায় তা-ও তুলে ধরেন রাহুল। আগেই তিনি কৃষকদের ঋণ মাফ, মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশের কথা বলেছেন। হালে গরিবদের ন্যূনতম আয় সুনিশ্চিত করার প্রকল্পও সামনে এনেছেন। আজ ছোট ও মাঝারি শিল্পকে জোর দিয়ে আয় বাড়ানোর কথা শোনালেন। নোটবন্দি ও ‘গব্বর সিংহ কর (জিএসটি)’ যাদের বেহাল করেছে। রাহুলের দাবি, চিনের মোকাবিলা করতে ছোট ও মাঝারি শিল্পই তুরুপের তাস। রাফাল নিয়ে তোপ দেগে তললেও রাহুল জানান, কংগ্রেস আদৌ শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে নয়। ইমানদার শিল্পপতিও আছেন। কংগ্রেস শুধু মুষ্টিমেয় শিল্পপতিদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে।