লোয়া-রাফাল হাতিয়ারে খোঁচা মোদী, শাহকে

আজ তৃণমূলের ইদ্রিশ আলি, মণীশ গুপ্ত-সহ ১৫টি বিরোধী দলের ১১৪ জন সাংসদের স্বাক্ষর নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে যান রাহুল। তাঁকে বলেন, ২০১৪ সালে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই গণতান্ত্রিক মূল্য, ঐতিহ্যের উপর আঘাত আসছে। হিংসা ছড়িয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩৬
Share:

সাংবাদিকদের মুখোমুখি রাহুল গাঁধী। শুক্রবার সংসদ চত্বরে। ছবি: পিটিআই।

নিশানায় একযোগে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। রাফাল কপ্টার চুক্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আর বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক ব্রিজভূষণ লোয়ার রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে অমিত শাহের উপর উত্তরোত্তর চাপ বাড়াচ্ছেন রাহুল গাঁধী। সঙ্গে নিচ্ছেন বিরোধীদেরও। এই অবস্থায় প্রবল চাপের মুখে আজ প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই অমিত শাহ দলের নেতাদের বলেন, রাহুলের বিরুদ্ধে প্রচার করুন। তাঁর রাজনীতি অগণতান্ত্রিক।

Advertisement

আজ তৃণমূলের ইদ্রিশ আলি, মণীশ গুপ্ত-সহ ১৫টি বিরোধী দলের ১১৪ জন সাংসদের স্বাক্ষর নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে যান রাহুল। তাঁকে বলেন, ২০১৪ সালে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই গণতান্ত্রিক মূল্য, ঐতিহ্যের উপর আঘাত আসছে। হিংসা ছড়িয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। বিরোধীদের বিরুদ্ধে তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগানো হচ্ছে। সাংসদরা মনে করছেন, এক বিচারকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সেই সূত্র ধরে আরও দু’জনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে এর তদন্ত হওয়া উচিত। এ দিনই সুপ্রিম কোর্টে লোয়া-মৃত্যু নিয়ে স্বাধীন তদন্তের দাবির বিরোধিতা করেছে মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার।

সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক ব্রিজভূষণ লোয়ার এজলাসেই চলছিল সোহরাবুদ্দিন শেখ ভুয়ো সংঘর্ষ মামলা। যেখানে অমিত শাহ অভিযুক্ত ছিলেন। লোয়ার মৃত্যুর পরে অমিত শাহ এই মামলায় ক্লিনচিট পান। বিষয়টি নিয়ে কিছু দিন আগে হইচই শুরু হওয়ার পরে ব্রিজভূষণের ছেলে প্রকাশ্যে এই মৃত্যু নিয়ে কোনও সংশয় নেই দাবি করলেও তাতে সন্দেহ কাটেনি। রাহুলের মতে, বিষয়টি নিয়ে সংশয় আছেই। যদিও অমিত শাহ প্রশ্নে কংগ্রেস সভাপতির জবাব, ‘‘রাষ্ট্রপতি ইতিবাচক জবাব দিয়ে বলেছেন, তিনি বিষয়টি দেখবেন।’’ কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বলের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা চলছে। কিন্তু তদন্ত হচ্ছে না। লোয়ার বোন যখন অভিযোগ করেছিলেন, তখনই এফআইআর হওয়া উচিত ছিল। লোয়া-মৃত্যুর পাশাপাশি রাফাল চুক্তি নিয়েও সরব রাহুল। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘ব্যক্তিগত দুর্নীতি’তে মদত দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন তিনি। অরুণ জেটলি কাল লোকসভায় পাল্টা রাহুলকে বিঁধে বলেছিলেন, এর আগে এ কে অ্যান্টনি, প্রণব মুখোপাধ্যায়ও প্রতিরক্ষা চুক্তির হিসেব দেননি জাতীয় স্বার্থের কথা ভেবে। রাহুল জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করছেন।

Advertisement

জেটলির এই বক্তব্য নিয়েও আজ সরব হয়েছেন রাহুল। পাল্টা টুইট করে তিনি জানান, ইউপিএ জমানায় অ্যান্টনি প্রতিরক্ষা চুক্তির হিসেব দিয়েছেন। জেটলিকে ফের ‘জেট-লাই’ (অতীতে এই কথা বলাতেই রাহুলের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ এনেছিলেন জেটলি) সম্বোধন করে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘আপনার মিথ্যা সামনে আনতে ইউপিএ জমানায় প্রকাশ করা তিনটি চুক্তির দাম দিলাম। এ বারে কি প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বলবেন রাফালের দাম বলতে?’’ রাহুলের অভিযোগ, বেসরকারি সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই গোপন চুক্তি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। দাম বললে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্ন হয় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন