প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, ভাবছিই না এখন: রাহুল

দলের রাজনৈতিক কৌশল শুধু নয়,  সব বিষয়েই রাহুল আজ নিজেকে খোলামেলা ভাবে তুলে ধরে মোদীর সঙ্গে তফাতটা বুঝিয়ে দেন।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৮ ০৪:০০
Share:

বক্তা: লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স-এর অনুষ্ঠানে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।

নরেন্দ্র মোদীকে সমানে নিশানা করে চলেছেন তিনি। কিন্তু তাঁর বিকল্প হবেন কে? বিলেতেও ফের এই প্রশ্নের মুখে পড়তে হল রাহুল গাঁধীকে। সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা মায়াবতী প্রধানমন্ত্রী হতে চাইলে কী করবেন?

Advertisement

এ বারেও প্রশ্নটার মো়ড় ঘুড়িয়ে দিয়ে কংগ্রেস সভাপতি জানালেন, মোদীর জমানায় দেশ ও দেশের প্রতিষ্ঠানগুলি আক্রান্ত হচ্ছে। এই অবস্থায় বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করার একমাত্র লক্ষ্য নিয়েই এগোতে চান তিনি। এবং সেই লক্ষ্যেই সব বিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছে তাঁর দল। রাহুলের কথায়, ‘‘২০১৯-এ প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সেই আলোচনায় আমরা এখন যাচ্ছিই না। সংবাদমাধ্যমই একে বড় করে দেখাচ্ছে। এই ফাঁদে আমরা পা দেব না। ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে না কংগ্রেস। ভোটের পরে শরিকদের সঙ্গে কথা বলে সেটা ঠিক করা হবে।’’

দলের রাজনৈতিক কৌশল শুধু নয়, সব বিষয়েই রাহুল আজ নিজেকে খোলামেলা ভাবে তুলে ধরে মোদীর সঙ্গে তফাতটা বুঝিয়ে দেন। লন্ডনের ‘ইন্ডিয়ান জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (আইজেএ)’ আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে রাহুলের মন্তব্য, ‘‘অনেক সময় আমার ভুল হয়। তবে সেটা বড় কথা নয়। ভুল থেকেই আমি শিখি। যাতে পরের বার আরও ভাল জবাব দিতে পারি। প্রশ্ন নেওয়ার ফাঁকে রাহুল নিজেই জানতে চান, ‘‘আমার তো ভালই লাগছে। এমন প্রশ্নোত্তরের মুখোমুখি হওয়ার জন্য নরেন্দ্র মোদীকেও কি আমন্ত্রণ জানিয়েছেন?’’ আইজেএ-র সভাপতি আশিস রায় বলেন, ‘‘তিনি সম্ভবত আমাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন না।’’ এতে রাহুলের মন্তব্য, ‘‘খোলামেলা আলোচনা ভয় পান, তিনি কখনওই আসবেন না। আমি তো এখানে ওঁর মুখোমুখি বসতেও রাজি। কিন্তু তিনি রাজি হবেন না।’’

Advertisement

জার্মানিতে দু’দিন কাটিয়ে রাহুল ব্রিটেনে এসেছেন দু’দিনের জন্য। দেশে ফিরবেন কাল। এর মধ্যে ইন্ডিয়ান ইসস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (আইআইএসএস), লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স-এর অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিয়েছেন। ‘কমিটি রুম অব হাউস অব কমনস’-এও বক্তব্য রাখার কথা। ইতিমধ্যেই তিনি আরএসএস ও মুসলিম ব্রাদারহুডের মধ্যে তুলনা টানায় সঙ্ঘ-বিজেপি তুমুল চটেছে। এ নিয়ে আইআইএসএস-এ রাহুল বলেন, ‘‘আমার মন্তব্যে চায়ের কাপে ঝড় উঠেছে। কিন্তু দু’টি সংগঠনেরই লক্ষ্য প্রতিষ্ঠানগুলি কব্জা করা। দু’টিই এক সময়ে নিষিদ্ধ হয়েছে। দু’টিতেই মেয়েদের কোনও কোনও স্থান নেই।’’

এ দিনও প্রশ্ন আসে পরিবারতন্ত্র নিয়ে। রাহুলের স্পষ্ট জবাব, ‘‘আমি একটি পরিবার থেকে এসেছি বলেই কি আমার নিন্দা করবেন? আমি কী, সেটা দিয়ে আমাকে বিচার করুন।’’ তাঁর রাজনীতিতে আসা নিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘বীজটা ছিলই। খাবার টেবিলে ঠাকুরমা বলতেন কোন রাজ্যে কী হচ্ছে। তবে ৯০-এর দশক থেকে কিছু পরিবর্তন আমাকে বিচলিত করতে শুরু করে।’’ পরে এক অনুষ্ঠানে এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমার রাজনৈতিক আদর্শের বিবর্তন সবচেয়ে বেশি হয়েছে গত চার বছরে। বিজেপি এবং আরএসএস আমাকে এই দারুণ উপহারটা দিয়েছে। এর জন্য তাদের ধন্যবাদ দেওয়া উচিত আমার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন