রাহুল গাঁধী।
নাগরিক পঞ্জি নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর দল মেরুকরণের রাজনীতি করছে বলে প্রথম থেকেই অভিযোগ করছে বিরোধীরা। এর মোকাবিলায় এ বারে মোদীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও বেকারি নিয়ে নিরন্তর প্রচার চালানোর কৌশল নিলেন রাহুল গাঁধী।
কংগ্রেস সভাপতির বক্তব্য, গুজরাত এবং কর্নাটক নির্বাচনেও মেরুকরণের রাজনীতি করার চেষ্টা চালিয়েছে বিজেপি। কিন্তু কংগ্রেস সে ফাঁদে পা না দিয়ে নিজস্ব মতাদর্শে অবিচল ছিল। তাতে ফলও এসেছে। গুজরাতে অল্পের জন্য ফস্কে গেলেও কর্নাটকে সরকার গড়েছে কংগ্রেস। এখন যখন অসমের নাগরিক পঞ্জি নিয়ে ফের মেরুকরণের রাজনীতি করতে চাইছে বিজেপি, তখন রাহুল বেছে নিলেন দু’টি বিষয়। বেকারি ও দুর্নীতি। এর সঙ্গে কৃষি সঙ্কটের মতো বিষয়ও থাকবে। তবে কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, এই দু’টি বিষয়েই জনতা, বিশেষ করে যুব সমাজকে কাছে টানা যাবে।
মূলত মোদী-বিরোধী প্রচারের কৌশল ঠিক করতেই আজ সকালে দিল্লিতে কংগ্রেস দফতরে দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বসেন রাহুল। নাগরিক পঞ্জি নিয়ে দলের অবস্থান নির্ধারণ করতে অসমের নেতাদেরও ডেকে নেওয়া হয়। অসুস্থতার জন্য এই বৈঠকে থাকতে পারেননি সনিয়া গাঁধী। ফলে বৈঠকের রাশ পুরোটাই ছিল রাহুলের হাতে। বৈঠকের পরে দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা জানান, রাজীব গাঁধীর সময়েই অসমের নাগরিক পঞ্জির প্রক্রিয়া শুরু হয়। যার লক্ষ্য ছিল, অবৈধ ভাবে ভারতে আসা বিদেশিদের চিহ্নিত করা। মনমোহন জমানায় তার জন্য অর্থ বরাদ্দও করা হয়। কংগ্রেস এতে দায়বদ্ধ। কিন্তু এখন বিষয়টি নিয়ে বিভাজনের রাজনীতি করছে বিজেপি। সম্প্রীতি নষ্টের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সব নাগরিককে নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণের সুযোগ দেওয়া উচিত।
পরে রাহুল টুইটারে বলেন, ‘‘ওয়ার্কিং কমিটিতে দেশের রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুর্নীতি ও যুবকদের রোজগার দিতে সরকারের ব্যর্থতার বিষয়টি তোলার বড় সুযোগ এসেছে।’’ সেই সঙ্গেই রাফাল-প্রসঙ্গ টেনে তিনি লেখেন, ‘‘দেশের মানুষের ১ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা লুঠ করে দেওয়া হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা দেনা থাকা বন্ধুকে!’’
কংগ্রেসের অবস্থান সামনে আসতেই বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘‘যাবতীয় দুর্নীতি তো দশ জনপথেই মিশে যায়। উইকিলিকস বলছে, ২০০৬-এ সনিয়া গাঁধী অনুপ্রবেশকারীদের বাঁচাতে ‘ফরেনার্স অ্যাক্ট’-এ বদল আনতে চেয়েছিলেন। এখন রাহুল সেই বিড়ম্বনা থেকে বাঁচতে মোদী সরকারের দুর্নীতি হাতড়ে বেড়াচ্ছেন।’’