(বাঁ দিকে) চিকিৎসকের হাতের তালুতে লেখা সুইসাইড নোট। রাহুল গান্ধী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের সাতরায় কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসকের আত্মহত্যাকে ‘প্রাতিষ্ঠানিক খুন’ বলে মন্তব্য করলেন কংগ্রেসের লোকসভার নেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘মহারাষ্ট্রের মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যু চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল শাসক বিজেপির অমানবিক ও অসংবেদনশীল চেহারা।’’
সাতারার একটি হোটেল থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে এক মহিলা চিকিৎসকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর হাতের তালুতে লেখা ছিল এক সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) এবং এক সফট্অয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের নাম। মহিলা চিকিৎসক লিখে যান, ওই এসআই তাঁকে পাঁচ মাসে চার বার ধর্ষণ করেছেন এবং ইঞ্জিনিয়ার তাঁকে মানসিক নির্যাতন করেন। তাঁদের কারণে নিজেকে শেষ করে দিচ্ছেন তিনি। শুক্রবার ওই ঘটনা সামনে আসার পরেই এসআই-কে বরখাস্তের নির্দেশ দেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস। শনিবার দুই অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। চিকিৎসকের আত্মহত্যার নেপথ্যে নানা দাবি এবং পাল্টা অভিযোগ করা হচ্ছে।
এই প্রেক্ষিতে সমাজমাধ্যমে রাহুল লেখেন, ‘‘সাতারার ফলটন উপ-জেলা হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনা আত্মহত্যা নয়। বরং এটি প্রাতিষ্ঠানিক খুন এবং ক্ষমতার বর্মে থাকা আদর্শের অপরাধের একটি নির্লজ্জ উদাহরণ।’’ রবিবার তিনি আরও লেখেন, ‘‘অপরাধীদের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য যে ব্যক্তির কাঁধে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনিই ধর্ষণ এবং শোষণের মতো জঘন্য কাজ করে বসে আছেন!’’ বিভিন্ন প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে কংগ্রেস নেতার অভিযোগ, বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত প্রভাবশালী কিছু লোক ওই চিকিৎসকের উপর আগেও চাপ সৃষ্টি করেছেন। সবই করেছেন তাঁদের দুর্নীতির লক্ষ্যপূরণের জন্য।’’ রাহুল জানান, মহিলা চিকিৎসকের মৃত্যুর সুবিচারের জন্য তাঁরা লড়াই করছেন। যত দিন না মৃতার পরিবার সুবিচার পাবে, তত দিন তাদের পাশে থেকে তাঁরা লড়াই চালিয়ে যাবেন।
উল্লেখ্য, আত্মহত্যার আগেও মহারাষ্ট্রের ওই এসআই-সহ কয়েক জন পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে মানসিক চাপ সৃষ্টি করা, হুমকি দেওয়ার মতো অভিযোগ করেছিলেন মহিলা চিকিৎসক। পুলিশ সূত্রেই সে কথা জানা গিয়েছে। মেডিক্যাল অফিসারের দাবি ছিল, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বিকৃত করা, ভুয়ো ফিট সার্টিফিকেট ইত্যাদি তৈরি করে দেওয়ার জন্য পুলিশের একাংশ তাঁর উপর জোর খাটাতেন। কিন্তু ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত হয়েছে, এমন কোনও প্রমাণ মেলেনি। এখন পুলিশের তরফে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগের কথা প্রকাশ্যে আনা হয়েছে।