Rahul Gandhi

ভারত জুড়েছেন, ভাইকে জড়াবেন কি সাংসদ রাহুল? বরুণকে আলিঙ্গন করতে চেয়েও ‘কিন্তু’ রাখলেন!

বরুণ গান্ধী সম্পর্কে মুখ খুললেন রাহুল গান্ধী। মঙ্গলবার পঞ্জাবে কংগ্রেস সাংসদ বলেছেন, ‘‘ওর সঙ্গে ভালবেসে দেখা করতে পারি, আলিঙ্গন করতে পারি।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চণ্ডীগড় শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:৩২
Share:

বরুণ গান্ধী সম্পর্কে রাহুলের মন্তব্যে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনীতিতে। ফাইল চিত্র।

ভালবেসে আলিঙ্গন করতে পারেন ‘ভাই’ বলে। তাই বলে বরুণ গান্ধীর মতাদর্শকে তিনি গ্রহণ করতে পারবেন না। ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় তুতোভাই বরুণ পা মেলাবেন কি না, সে প্রশ্নের জবাবে এমনটাই জানিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী।

Advertisement

গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর কন্যাকুমারী থেকে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ শুরু করেন রাহুল। শেষ হবে কাশ্মীরে গিয়ে। রাহুলের এই কর্মসূচিতে ডাক পেয়েছেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। ডাকা হয়েছে রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরও। সেই কর্মসূচিতে বিজেপি সাংসদ বরুণ পা মেলাবেন কি না, এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে কংগ্রেসে বরুণের যোগদান নিয়ে জল্পনাও চলছে। সেই আবহে রাহুল বললেন, ‘‘ওর (বরুণ) সঙ্গে ভালবেসে দেখা করতে পারি। ওকে আলিঙ্গন করতে পারি। কিন্তু ওর মতাদর্শকে গ্রহণ করতে পারব না। আমার লড়াই মতাদর্শের।’’

ইন্দিরা গান্ধীর দুই পৌত্র একই পরিবারের হয়েও ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী। ‘দাদা’ রাহুলের অনেক বারই প্রশংসা করেছেন বরুণ। এ জন্য নিজের দলকে মাঝেমাঝে বিড়ম্বনাতেও ফেলেছেন। তবে এর উল্টো পথেই বরাবর হেঁটেছেন রাহুল। বরুণকে নিয়ে নিজে থেকে কখনই কোনও মন্তব্য করেননি সনিয়া-পুত্র। মঙ্গলবারও তিনি বলেন, ‘‘আমার একটা পরিবার রয়েছে। একটা মতাদর্শ রয়েছে। বরুণ অন্য মতাদর্শ গ্রহণ করেছে। আমি ওই মতাদর্শ গ্রহণ করতে পারব না।’’

Advertisement

চার দশক আগে ইন্দিরার সরকারি বাংলো ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন পুত্র সঞ্জয়ের স্ত্রী মানেকা। সেই সময় এক হাতে স্যুটকেস আর অন্য হাতে বরুণকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি ছেড়েছিলেন তিনি। তখন বরুণের মাত্র ২ বছর বয়স। তার পর থেকেই গান্ধী পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে বরুণদের। তাঁদের রাজনৈতিক পথও আলাদা দিকে মোড় নিয়েছে। বিজেপিতে যোগ দেন মানেকা। মায়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পদ্মশিবিরে যোগ দেন বরুণও।

রাজনীতির ময়দানে রাহুলকে অতীতে নিশানাও করেছেন বরুণ। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে রাহুল ও বরুণ প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক কখনই তিক্ত হয়নি। যার আভাস পাওয়া গিয়েছিল কয়েক বছর আগেই। দাদা সম্পর্কে বরুণ বলেছিলেন, ‘‘রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে একটা কথাও বলব না। এটা আমার রাজনীতি নয়।’’ মঙ্গলবার পঞ্জাবে রাহুলও বরুণের প্রতি তাঁর ‘ভালবাসা’র কথা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ওর (বরুণ) সঙ্গে ভালবেসে দেখা করতে পারি। ওকে আলিঙ্গন করতে পারি।’’ এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রাহুল এ-ও বলেছেন, ‘‘আরএসএসের অফিসে যেতে পারব না। গেলে আমার আগে শিরশ্ছেদ করতে হবে।’’ রাহুল আরও বলেন, ‘‘ও যদি হাঁটে, তা হলে ওরই সমস্যা হবে।’’

রাহুলের সঙ্গে বরুণের বয়সের ফারাক ১০ বছরের। দু’জনের রাজনীতিতে আসার সময়ও আলাদা। ২০০৪ সালে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় সনিয়া-পুত্রের। সে বার লোকসভা নির্বাচনে অমেঠী কেন্দ্র থেকে জিতে প্রথম বার সাংসদ নির্বাচিত হন রাহুল। এর ৫ বছর পর ২০০৯ সালে ভোটের লড়াইয়ে শামিল হন বরুণ। উত্তরপ্রদেশের পিলভিট কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সাংসদ হন মানেকা-পুত্র। স্বাভাবিক ভাবেই একই পরিবারের সদস্য হওয়ায় দুই ভাইয়ের মধ্যে তুলনা চলেছে। কিন্তু সেই তুল্যমূল্য বিচারে কখনই মাথা ঘামাননি বরুণ। এক বার এ নিয়ে বিজেপি সাংসদ বলেছিলেন, ‘‘রাহুলজি আমার থেকে ১০ বছরের বড়। উনি আমার প্রজন্মেরই নন।’

সনিয়ার পরিবারের মধ্যে ‘দিদি’ প্রিয়ঙ্কার সঙ্গেই বেশি ‘ভাব’ বরুণের। মানেকা-পুত্রকে বেশ পছন্দও করেন প্রিয়ঙ্কা। বরুণ সম্পর্কে অতীতে প্রিয়ঙ্কা বলেছিলেন, ‘‘অবশ্যই ও আমার পরিবারের অংশ। আমার ভাই। কিন্তু ও পথভ্রষ্ট হয়েছে। যখন বাড়ির কনিষ্ঠ পুত্র ভুল পথ বাছে, তখন তাকে সঠিক পথ দেখাতে হয় বড়দের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন