মোদীর বিরুদ্ধে মুখ খুললেই জেল, আক্রমণে রাহুল

বন্দিপুর অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়কে রাতে যান চলাচল বন্ধ করা নিয়ে উত্তপ্ত কর্নাটক। আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়াতে আজ নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র কেরলের ওয়েনাডে ছিলেন রাহুল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়েনাড শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৪৫
Share:

রাহুল গাঁধী।

গণপিটুনি, ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতার মতো বিষয়গুলি নিয়ে মাস কয়েক আগে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন, রামচন্দ্র গুহ-সহ ৪৯ জন বিশিষ্ট জন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খোলা চিঠি লিখেছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে বিহারের সদর থানায় গত কাল রাষ্ট্রদ্রোহ, শান্তিভঙ্গ-সহ বিভিন্ন অভিযোগে এফআইআর করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আজ সরাসরি মোদীকে নিশানা করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী।

Advertisement

বন্দিপুর অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়কে রাতে যান চলাচল বন্ধ করা নিয়ে উত্তপ্ত কর্নাটক। আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়াতে আজ নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র কেরলের ওয়েনাডে ছিলেন রাহুল। বিশিষ্টজনদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা নিয়ে সেখানেই তাঁর অভিযোগ, দেশ স্বৈরতন্ত্রের দিকে এগোচ্ছে। রাহুল বলেন, ‘‘দেশে কী চলছে তা সকলেই জানেন। এর মধ্যে কোনও গোপনীয়তা নেই। এমনকি, গোটা বিশ্বও তা জেনে গিয়েছে। আমরা ক্রমশ স্বৈরতন্ত্রের দিকে এগোচ্ছি।’’

কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতির অভিযোগ, মোদী সরকার বিরোধী মত শুনতে চায় না। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ যদি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিছু বলেন, সরকারের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তা হলে তাঁকে জেলে ঢোকানো হচ্ছে ও আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমকেও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ রাহুলের অভিযোগ, দেশে এখন দুই মতাদর্শের লড়াই চলছে। তিনি বলেন, ‘‘এক দিকে, ধারণা তৈরি হচ্ছে যে এক জন ব্যক্তিই দেশ চালাবেন। দেশে একটাই আদর্শ থাকবে, আর সকলে মুখে কুলুপ এঁটে থাকবেন। অন্য দিকে, কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা বহু ভাষা, বহু সংস্কৃতি এবং বাক্‌স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালাচ্ছেন। দেশে এখন এই যুদ্ধই চলছে।’’

Advertisement

দেশে ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা, গণপিটুনি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যে ৪৯ জন বিশিষ্টজন প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন, তাতে অপর্ণা, আদুর গোপালকৃষ্ণনও ছিলেন। এফআইআর নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অপর্ণা বলেন, ‘‘বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করব না।’’ তাঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ নিয়ে গোপালকৃষ্ণনের প্রশ্ন, ‘‘ওই চিঠির ভিত্তিতে কোনও আদালত আমাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার নির্দেশ দিতে পারে, এমনটা বিশ্বাসই হচ্ছে না... এটা চিঠির মূল বক্তব্যের বিরোধী। সরকারের সমালোচনা করলেই রাষ্ট্রদ্রোহ! আমরা গণতান্ত্রিক দেশে বাস করছি?’’

প্রধানমন্ত্রীকে লেখা বিশিষ্টজনদের চিঠি নিয়ে বিহারের মুজফ্ফরপুরের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট সূর্যকান্ত তিওয়ারির কাছে আবেদন দাখিল করেছিলেন সুধীরকুমার ওঝা নামে এক আইনজীবী। সেই আবেদনের ভিত্তিতে একটি নির্দেশ দেন ওই ম্যাজিস্ট্রেট। গত কাল ওই আইনজীবী বলেন, ‘‘২০ অগস্ট মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আমার আবেদন গ্রহণ করে আদেশ দিয়েছেন। তার প্রেক্ষিতেই সদর থানায় ওই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে।’’ আদালতে সুধীরকুমার অভিযোগ করেছিলেন, ওই ৪৯ জন বিশিষ্টজন দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর চমৎকার কাজকর্মগুলিকে খাটো করে দেখিয়েছেন। এ ছাড়াও ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতাকেই’ সমর্থন করেছেন ওই বিশিষ্টজনেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন