বিশ্রাম কমিয়ে ৫১ ট্রেন বাড়াবে রেলমন্ত্রক

যাত্রী-চাহিদা মেটাতে মেরামতি ও জিরিয়ে নেওয়ার সময় কমিয়ে পুরনো রেককে নতুন পথে দৌড় করানোর ব্যবস্থা করছে রেল মন্ত্রক। হয় যে রুটে ট্রেনটি যাচ্ছিল সেই পথেই তাকে এগিয়ে যেতে হবে।

Advertisement

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৪৪
Share:

অলস সময় আর মিলবে না। ফাঁকা সময় পেলেই দৌড়তে হবে। তা হলে আরও বেশি যাত্রীর চাহিদা মেটানো যাবে।

Advertisement

যাত্রী-চাহিদা মেটাতে মেরামতি ও জিরিয়ে নেওয়ার সময় কমিয়ে পুরনো রেককে নতুন পথে দৌড় করানোর ব্যবস্থা করছে রেল মন্ত্রক। হয় যে রুটে ট্রেনটি যাচ্ছিল সেই পথেই তাকে এগিয়ে যেতে হবে। অথবা, জিরিয়ে নেওয়ার সময় কমিয়ে যাত্রী পারাপার করে আসতে হবে নতুন পথে।

যাত্রী-চাহিদা মেটাতে এবং লাইনের ক্ষমতার কথা মাথায় রেখে নতুন রেক না বাড়িয়ে আয় বৃদ্ধির এমনই অভিনব উপায় বার করেছে রেল মন্ত্রক। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী নভেম্বর মাসে নতুন একটি টাইম-টেবল প্রকাশ করা হবে। সেখানেই ঘোষণা হবে নতুন এই ট্রেনগুলির সময়সূচি।

Advertisement

রেল কর্তারা জানাচ্ছেন, গোটা দেশে সমীক্ষা চালিয়ে কিছু ট্রেন মিলেছে, যার রেকগুলি অনেক সময়েই বসে থাকে। সেগুলিকেই কাজে লাগিয়ে নতুন ট্রেন চালানো হবে। রেল বোর্ডের এক কর্তা জানান, আপাতত দেশ জুড়ে ৫১টি রেককে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই রেকগুলি দিয়ে নতুন ৫১টি ট্রেন চলবে। সাধারণত, দুই যাত্রার মধ্যের সময়ে একটি ট্রেনের রেকগুলি মেরামতি এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ করা হয়। কিন্তু সেই সময় বাদ দিলেও দীর্ঘ সময় রেকগুলি ইয়ার্ডে স্রেফ বসে থাকে। ওই সময় কমিয়ে তাকে অন্য ট্রেন হিসেবে চালানো হবে। যাতে বেশি যাত্রীদের সুবিধা দেওয়া যায়। অথচ, রেকগুলির মেরামতির কাজে ঢিলেমি থাকবে না।

একটি রেককে বিভিন্ন রুটে চালানোর ভাবনা নতুন নয়। যেমন, জগন্নাথ এক্সপ্রেসের রেকই গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস হিসেবে চলে। আবার তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস হাওড়ায় ফেরার পরে চলে কাণ্ডারী এক্সপ্রেস হিসেবে। কিন্তু দীর্ঘ সময় বসে থাকা রেকগুলি দিয়ে নয়া ট্রেন চালানোর
ভাবনা অভিনব।

ধরা যাক দার্জিলিং মেল। শিয়ালদহ থেকে ছাড়ে রাত ১০-০৫ মিনিটে। নিউজলপাইগুড়িতে পৌঁছয় সকাল ৮-১০ মিনিটে। তারপরে রাত ৮টায় আবার নিউজলপাইগুড়ি থেকে ছেড়ে কলকাতায় ফেরে। অর্থাৎ রেকটি ১২ ঘণ্টা নিউজলপাইগুড়িতে বসে থাকে। কিন্তু ওই ট্রেনটির যাত্রাপথ বাড়িয়ে নিউ আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত করা হলে অতিরিক্ত ৫ ঘণ্টা রেকটি চলবে। তাহলেও রেকটির মেরামতির জন্য হাতে থাকছে ৭ ঘণ্টা। রেল কর্তারা বলছেন, ওই রুটে ট্রেন কম। রেকটিকে নিউ আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হলে উত্তরবঙ্গের দু’টি জেলা সদরের (কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার) যাত্রীরা উপকৃত হবেন।

মালগাড়ি চালানোয় নতুন কিছু ভাবনা চিন্তা করা হয়েছে। তৈরি হচ্ছে নতুন নামের মালগাড়ি। ইতিমধ্যেই তৈরি করে চালানো হচ্ছে, অ্যানাকোন্ডা, টাইগার, পাইথন, মারুতি, লং হাউলের মতো সব লম্বা লম্বা মালগাড়ি। মূলত লাইনের ক্ষমতার কথা মাথায় রেখেই দু’টি মালগাড়ি জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। তাতে মালগাড়িটি লম্বায় প্রচুর বড় হলেও লাইন আটকে রাখার সময় কমেছে। রেল কর্তারা বলছেন, এখন একটি মালগাড়ির ৫৯টি কামরা। দু’টি মালগাড়ি জুড়ে দেওয়ায় তা বেড়ে হয়েছে ১১৮টি কামরা। ফলে একটি ট্রেন চলার সময় বেঁচে যাচ্ছে।

মালগাড়ি চালানোর এই নতুন সিদ্ধান্ত যাত্রীবাহী ট্রেনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য কি না, তা নিয়েও ভাবনা চিন্তা করছেন রেল বোর্ডের কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন