ডিজেল-ধাক্কায় সব রেলপথে বিদ্যুদয়ন

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটি বুধবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে জানিয়েছে, ১০৮টি সেকশনে মোট ১৬,৫৪০ কিলোমিটার রেলপথ বিদ্যুদয়নের জন্য ১২,১৩৪.৫০ কোটি টাকা খরচ হবে

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:০৫
Share:

ফাইল চিত্র।

ডিজেল রফতানিতে বিপুল বিদেশি মুদ্রা খরচে লাগাম টানতে রেলের সব রুটকে বিদ্যুদয়নের সিদ্ধান্ত নিল সরকার। সবার আগে এই কাজ করা হচ্ছে দিল্লি-হাওড়া এবং হাওড়া-চেন্নাই রুটে।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটি বুধবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে জানিয়েছে, ১০৮টি সেকশনে মোট ১৬,৫৪০ কিলোমিটার রেলপথ বিদ্যুদয়নের জন্য ১২,১৩৪.৫০ কোটি টাকা খরচ হবে। কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে ২০২১-২২ সালকে। কিন্তু এই কাজ শেষ হওয়ার পরে কম ডিডেল খরচের কারণে বছরে সাশ্রয় হবে বছরে ১৩,৫১০ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে ডিজেল পুড়ে যে কালো ধোঁয়া তৈরি হয়, তা বন্ধ হয়ে পরিবেশ দূষণও কমবে।

বর্তমানে দিল্লি-মুম্বই রুটের প্রায় পুরোটাই বিদ্যুদয়িত হওয়ায় এখানে ডিজেল ইঞ্জিন ব্যবহার হয় না। কিন্তু দিল্লি-হাওড়ার মতো অনেক রুটের অনেকটাই বিদ্যুদয়িত হলেও মাঝে কিছু অংশ হয়নি। এর ফলে অনেক দূরপাল্লার ট্রেনকে হয় পুরোটাই ডিজেল ইঞ্জিন দিয়ে চালাতে হয় অথবা মাঝপথে ইঞ্জিন পরিবর্তন করে ডিজেল ইঞ্জিন জুড়তে হয়। একই অবস্থা হাওড়া-চেন্নাই সহ অনেক রুটেরই। প্রধানমন্ত্রী তাই নির্দেশ দিয়েছেন, সবার আগে এই দুই রুটে সম্পূর্ণ বিদ্যুদয়নের কাজ শেষ
করতে হবে।

Advertisement

শুধু ডিজেল খরচই যে কমবে তা নয়, দেশের সব রেলপথে বিদ্যুদয়ন হলে রেল চলাচলে সুরক্ষাও বাড়বে বলে দাবি ক্যাবিনেট কমিটির। কারণ পুরো রেলপথেই তা হলে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত অটোম্যাটিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা কাজ করতে পারবে। আবার এই বিদ্যুদয়নের কাজ যত দিন চলবে, বহু মানুষের হাতে কাজও আসবে। কমিটির হিসেব অনুযায়ী এই কাজে ২০.৪ কোটি শ্রমদিবস
তৈরি হবে। তা ছাড়া বিদ্যুদয়িত রেলপথে পণ্য পরিবহণের ক্ষমতাও বাড়বে। ডিজেল ইঞ্জিন রক্ষণাবেক্ষণের খরচও অনেক বেশি। সে খরচও কমবে। এ ক্ষেত্রেও রেলের সাশ্রয় হবে বছরে ৩৭৯৩ কোটি টাকার মতো।

কিন্তু দেশে যে এত ডিজেল ইঞ্জিন বর্তমানে ব্যবহৃত হয়, তিন-চার বছর পর সেগুলি কী কাজে লাগবে? রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের কথায়, সম্পূর্ণ রেলপথ বিদ্যুদয়নের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হলেও বহু প্রত্যন্ত এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় এটা করা যাবে না। সেখানে ডিজেল ইঞ্জিন ব্যবহার হবে। এ ছাড়া ডিজেল ইঞ্জিনকে বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে পরিবর্তন করার একটি কারিগরি রেলের ইঞ্জিনিয়াররা উদ্ভাবন করেছেন, যার ফলে নতুন ইঞ্জিনের অর্ধেক দামে বৈদ্যুতিক রেল ইঞ্জিন পাওয়া সম্ভব হবে।

ভারতে ডিজেল ইঞ্জিনের ব্যাপক চাহিদার কারণে কম দূষণের এই ইঞ্জিন তৈরির একটি এ দেশে করার কথা ঘোষণা করেছে বহুজাতিক সংস্থা জিই। সেই কারখানার কী ভবিষ্যৎ হবে— এই প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, সেখানে তৈরি ডিজেল ইঞ্জিন রফতানি করা
যেতে পারে। কিছু ইঞ্জিন রেলও ব্যবহার করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন