ঝামেলার হেলমেট পরবেন না, মন্তব্য বিধায়কের

বাবার মাথা ভীষণ দামি, হেলমেটেতে ঢাকা, ছোট্ট মাথার নেই কোনও দাম, আমার মাথা ফাঁকা। বা, হেলমেট পরুন, মাথা বাঁচান। চার মাথার মোড়, কিংবা বড় রাস্তার ডিভাইডার বরাবর এমন বহু সরকারি বার্তা চোখে পড়ে থাকবে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কোটা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৫ ০২:৫৪
Share:

বাবার মাথা ভীষণ দামি, হেলমেটেতে ঢাকা, ছোট্ট মাথার নেই কোনও দাম, আমার মাথা ফাঁকা।

Advertisement

বা, হেলমেট পরুন, মাথা বাঁচান।

চার মাথার মোড়, কিংবা বড় রাস্তার ডিভাইডার বরাবর এমন বহু সরকারি বার্তা চোখে পড়ে থাকবে। যদিও প্রশাসনের উদ্যোগেই আয়োজিত পথ-নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি আলোচনাসভায় গিয়ে বৃহস্পতিবার রাজস্থানের এক বিধায়ক ভবানী সিংহ রাজাওয়াত বলে বসলেন— যাঁরা হেলমেট পরতে চান না, পরবেন না। এই সব জিনিস পরেই দুষ্কতীরা পুলিশের হাত ফস্কে পালিয়ে যায়।

Advertisement

আচমকা বিধায়কের এ হেন মন্তব্যে প্রেক্ষাগৃহে তখন চাপা গুঞ্জন। স্তম্ভিত পুলিশের বড় কর্তারা। অতিথিদের আসনে বসে রয়েছেন ডিভিশনাল কমিশনার, এসপি, প্রাক্তন মেয়র, প্রশাসনের আরও বড়সড় মাথা। হতবাক সকলেই।

ঠিক কী ঘটেছিল গত কাল?

অনুষ্ঠানে তখন কোটার ট্রাফিক এএসপি যাদরাম ফজল সবে বলতে শুরু করেছেন, শহরে দুর্ঘটনা বাড়ছে। আর হেলমেট না পরাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কারণ। হঠাৎই নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠে পরেন রাজাওয়াত। এএসপি-কে থামিয়ে দিয়ে বলেন, রাস্তাঘাটে পুলিশ বড্ড ঝামেলা করে। ‘হেলমেট পরুন, হেলমেট পরুন’ বলে সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করে!

তার পরই বলেন, যাঁরা হেলমেট পরতে চান না, হেলমেট পরবেন না। হেলমেট পরেই তো দুষ্কতীরা পুলিশের হাত ফস্কে পালিয়ে যায়।

এখানেই থামেননি রাজাওয়াত। বলেছেন, ‘‘হেলমেট তো মাথার উপর একটা বোঝা। গরমে খুব কষ্ট হয়।’’

বিধায়কের এ হেন কাণ্ডে হতবাক প্রশাসনের অন্দরমহলই। তবে সকলে অবশ্য নয়। খোদ কোটা শহরের মেয়র তথা বিজেপি নেত্রী সুনীতা ব্যাস সমর্থন জানিয়েছেন রাজাওয়াতকে। বলেছেন, ‘‘উনি তো শুধু সরু, ঘিঞ্জি গলিতে হেলমেট পরতে বারণ করেছেন।’’ অবশ্য এই যুক্তির কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি মেয়রের কাছ থেকে।

বিতর্ক চাপা দিতে মাঠে নেমে পড়েছেন বিজেপি নেতারাও। অস্বস্তিতে পুলিশও। সরকারি প্রচারের বিরোধিতা করছেন সরকারি প্রতিনিধিই! পরিস্থিতি সামাল দিতে নড়ে বসেছে তারাও। এএসপি ফজল পর্যন্ত বলেছেন, সকলেরই নিজের মতামত প্রকাশ করার অধিকার আছে। কিন্তু আইন সকলের জন্য একই। তাই মানতে হবেই।

কিন্তু সরকারি প্রতিনিধিরাই যখন সরকারি নিয়ম মানতে নারাজ, তখন সাধারণ মানুষ কী ভাবে সচেতন হবেন, সে প্রশ্ন থাকছেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন