নাগরিকত্ব বিল নিয়ে সুস্মিতাকে খোঁচা রাজদীপের

উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব ইস্যুতে কংগ্রেস নেতৃত্বকে সহানুভূতিশীল করে তুলতে সাংসদ সুস্মিতা দেবের প্রতি আহ্বান জানালেন বিজেপির রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজদীপ রায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:০৪
Share:

উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব ইস্যুতে কংগ্রেস নেতৃত্বকে সহানুভূতিশীল করে তুলতে সাংসদ সুস্মিতা দেবের প্রতি আহ্বান জানালেন বিজেপির রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজদীপ রায়।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘‘এখানে-ওখানে মন্তব্য করে সুস্মিতাদেবী উদ্বাস্তুদের মঙ্গল করতে পারবেন না। বিল-এ কোথাও সংশোধনীর প্রয়োজন বা আরও কিছু জুড়তে হবে, সে সব সাধারণ জনতাকে বলে লাভ নেই।’’ শিলচরের সাংসদ নিজেই যে যৌথ সংসদীয় কমিটির সদস্য, সে-কথা উল্লেখ করে রাজদীপবাবু বলেন, ‘‘তাঁর কাছে মানুষ যাবে, এ ব্যাপারে পরামর্শ দেবে। তিনি নিজে আবার ঘুরে ঘুরে কী বলবেন! ’’

বিজেপির রাজ্য সম্পাদকের সোজা কথা, ‘‘বিল নিয়ে তাঁর বেশি ভেবে লাভ নেই। তিনি সমর্থন না করলেও এই বিল পাশ হয়ে যাবে। এর চেয়ে বরং প্রদেশ কংগ্রেস যে একেক সময় একেক অবস্থান গ্রহণ করছে, সে নিয়ে সুস্মিতাদেবী সরব হোন।’’

Advertisement

২০১১ সাল থেকে কী ভাবে কংগ্রেস সরকার হিন্দু বাঙালির নাগরিকত্বের পক্ষে নিজেদের অভিমত প্রকাশ করেছেন, তার নাতিদীর্ঘ বিবরণ তুলে ধরে রাজদীপবাবু বলেন, ‘‘এত কিছুর পর বিজেপি সরকার বিল পেশ করতেই কংগ্রেসের একেবারে বিপরীত মেরুতে চলে যাওয়াটা বিপজ্জনক।’’ শুধু উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্বের প্রশ্নে নয়, তাঁর কথায়, ‘‘এই অবস্থানের বৈপরীত্য বাঙালি-অসমিয়া সম্পর্ককেও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। রাজ্যে শান্তির পরিবেশকে বিষিয়ে তুলছে কংগ্রেসের বাঙালি বিদ্বেষী কথাবার্তা।’’ এই অবস্থা বদলের কাজকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে রাজদীপবাবু সুস্মিতাদেবীকে পরামর্শ দেন।

বিজেপির প্রদেশ নেতা বলেন, ‘‘কংগ্রেস সাংসদ তাঁর দলীয় নেতাদের বাঙালি বিদ্বেষ থেকে সরাতে পারলে ভবিষ্যতের জন্যও একটা কাজের কাজ হবে। রাজ্যে সম্প্রীতির বাতাবরণ দৃঢ়তর হবে।’’ তাঁর কথায়, উসকানিমূলক কথাবার্তা বাদ দিলে অসমে এখন আর জাতি বা ভাষাগত বিদ্বেষ নেই। এর পক্ষে তিনি কিছু যুক্তিও দেখান। বলেন, ‘‘যে সব অসমিয়া চাকরি সূত্রে বরাক উপত্যকায় আসেন, তাঁদের অনেকে ব্রহ্মপুত্রে ফিরতে চান না। এখানেই বাড়িঘর করে অবসর জীবন কাটাচ্ছেন, এমন অসমিয়াদের সংখ্যাটা মন্দ নয়। আবার ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বাঙালিরা আপনমনে অসমিয়া সংস্কৃতির সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলছেন। এমনকী, বরাকেও এখন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অসমিয়া সংস্কৃতি মেনে ‘গামোছা’ পরানো হয়।’’ একে পারস্পরিক ভাব বিনিময়ের ফসল বলে মন্তব্য করেন রাজদীপবাবু।

বিজেপি পুরনো অবস্থানে অটল রয়েছে, সে দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘যিনিই যে অবস্থান গ্রহণ করুন না কেন, তাঁরা বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নির্যাতিত শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেবেনই। আর তা দেওয়া হবে নেহরু-লিয়াকত চুক্তি অনুসারেই। ওই চুক্তিতেই দুই দেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার কথা বলা হয়েছিল। নিজেদের সুরক্ষিত বোধ না করলে তাঁরা যে কোনও সময় সীমান্ত পেরিয়ে আসবেন, উল্লেখ রয়েছে সে কথারও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন