Rajnath Singh

Rajnath Singh: ভোগাল কপ্টার, তবু রাজনাথের বার্তা শিখেদের

বিভাজনের প্রশ্ন তুলে সমাজবাদী পার্টিকে ‘ডুবন্ত নৌকা’ বলে বিঁধতেও ছাড়েননি রাজনাথ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লখনউ শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:৩৭
Share:

ফাইল চিত্র।

নির্বাচনী প্রচারে আজ উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরিতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সকাল ১১টায় বরেলী পৌঁছেও গিয়েছিলেন। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে তিনি পিলিভিট ও লখিমপুর খেরিতে যাবেন, এই ছিল পরিকল্পনা। কিন্তু রওনা হয়েও খারাপ দৃশ্যমানতার কারণে দু’টি গন্তব্যের কোনওটিতেই পৌঁছতে না পেরে ফিরে এল রাজনাথের হেলিকপ্টার। অগত্যা সড়কপথেই রাজনাথ গেলেন পিলিভিট। সেখানে ভোটারদের দরজায় গিয়ে প্রচার সারলেন, কর্মীদের উদ্দেশে বক্তৃতাও দিলেন। পিলিভিট থেকে ফোনে সেই বক্তৃতা শোনানো হল লখিমপুরের বিজেপি নেতা-কর্মীদের।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশে চতুর্থ দফায়, ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোট হবে লখিমপুরে। সেই লখিমপুর, যেখানে বিক্ষোভরত কৃষকদের গাড়িচাপা দিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলের বিরুদ্ধে। কৃষক বিক্ষোভের আঁচ রয়েছে পিলিভিটেও। চাষিরা সেখানে ধান ও আখের দাম না পাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত পিলিভিটে এসে অভিযোগ তুলে গিয়েছেন যে, মিথ্যা বলায় সোনার মেডেল পেয়েছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। এমনকি পিলিভিটের বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধীও দলের বিভিন্ন নীতি নিয়ে বেসুর গাইছেন। স্বাভাবিক ভাবেই ভোটের আগে কৃষক বিক্ষোভ প্রশমিত করার বাড়তি দায় রয়েছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের।

এ দিন রাজনাথও সেই চেষ্টাই করেছেন। বলেছেন, ‘‘এ বারের বাজেটে আমাদের সরকার ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান এবং গম কেনার জন্য ২ লক্ষ ৩৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। লখিমপুর এবং পিলিভিটকে হয়তো অন্যান্য দিক থেকে উত্তরপ্রদেশের খুব একটা উন্নত এলাকা বলে ধরা হয় না। কিন্তু কৃষির দিক থেকে এই এলাকা অনেক এগিয়ে। বিশেষত শিখ সমাজ এই এলাকায় কৃষিকাজকে যে ভাবে লাভজনক করে তুলেছেন, তা প্রশংসনীয়।’’ শিখদের উদ্দেশে রাজনাথের এই আলাদা বার্তাও তাৎপর্যপূর্ণ। লখিমপুর খেরির ঘটনায় নিহত চার জন কৃষকই ছিলেন শিখ পরিবারের। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশে ৬ লক্ষ ৪৩ হাজারেরও বেশি শিখ ধর্মাবলম্বী রয়েছেন। বহু শিখ রয়েছেন লখিমপুর খেরি এলাকায়, যাঁদের অধিকাংশের পরিবার দেশভাগের পরে এই এলাকায় এসে বসতি স্থাপন করে মূলত কৃষিকাজকেই জীবিকা হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। রাজনাথ তাই তাঁদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘শিখ সমাজ এই দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে নিজের মাথাও বলিদান দিয়েছে। কিছু শক্তি সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়।’’ আজ উত্তরপ্রদেশে গিয়ে কৌশলে ভোটমুখী পঞ্জাবকেও এই ভাবে বার্তা দিয়ে রাখলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

Advertisement

বিভাজনের প্রশ্ন তুলে সমাজবাদী পার্টিকে ‘ডুবন্ত নৌকা’ বলে বিঁধতেও ছাড়েননি রাজনাথ। বলেছেন, ‘‘সমাজবাদী পার্টির লোকেদের প্রশ্ন করতে চাই, আপনাদের সরকার ক্ষমতায় এলেই রাজ্যে দাঙ্গা হয় কেন? কেনই বা গুন্ডাগিরি বেড়ে যায়? রাজনীতি জাতি-ধর্মের ভিত্তিতে হওয়া উচিত, না কি সুবিচার ও মানবতার ভিত্তিতে?’’ তা শুনে বিরোধীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তো উত্তরপ্রদেশের ভোটের আগে মেরুকরণের রাজনীতিই করে চলেছেন! আগামিকালও উত্তরপ্রদেশের একাধিক কেন্দ্রে প্রচারের কর্মসূচি রয়েছে রাজনাথের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন