খুব খারাপ ট্রেনের খাবার: রিপোর্ট

গত দু’বছরে খাবার নিয়ে করা সমীক্ষায় রেলকে কার্যত তুলোধনা করেছে সিএজি। রিপোর্টে প্রথমেই প্রশ্ন করা হয়েছে রেলের ক্যাটারিং নীতি নিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৭ ০৪:০১
Share:

বছর বছর পাল্টায় ক্যাটারিং নীতি। এক বছর রেলের হাতে থাকে তো, পরের বছর চলে যায় আইআরসিটিসি-র কাঁধে। ঘন ঘন এই দায়িত্ব পাল্টানোর ছাপ পড়েছে রেলের খাবারে। আজ কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) রেলের খাওয়া-দাওয়া নিয়ে যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, অত্যন্ত নিম্নমানের, খাওয়ার অযোগ্য খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে ভারতীয় রেলে। শুধু খাবারই নয়, ট্রেন সফরে যে জল যাত্রীরা খান তা-ও পানের অযোগ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে এই রিপোর্টে। খাবার রান্না বা জল ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বাস্থবিধির ধার না ধারলেও, সেই খাবার বিক্রির সময়ে কিন্তু বাড়তি দাম নিতে পিছপা হচ্ছেন না প্যান্ট্রি কর্মীরা।

Advertisement

গত দু’বছরে খাবার নিয়ে করা সমীক্ষায় রেলকে কার্যত তুলোধনা করেছে সিএজি। রিপোর্টে প্রথমেই প্রশ্ন করা হয়েছে রেলের ক্যাটারিং নীতি নিয়ে। বলা হয়েছে, ক্যাটারিং-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এক বছর রেলের হাতে তো পরের বছর চলে যায় আইআরসিটিসির কাছে। ফের পরের বছর ফিরে আসছে রেলের কাছে। বছর বছর নতুন নীতি ও দায়িত্ব দেওয়া-নেওয়ার কারণে জোনগুলির জন্য মাস্টার প্ল্যান গড়ে তুলতে ব্যর্থ রেল। ফলে এত দিনেও রেলের প্রতিটি জোনে মাস্টার কিচেন গড়ে ওঠেনি। পরিকাঠামো গড়ে না ওঠার কারণে স্টেশনগুলি থেকে ট্রেনের যাত্রীদের গরম খাবার সরবরাহ করতে ব্যর্থ হচ্ছে রেল।

আরও পড়ুন: অসম্মান করতেই নারদ, সারদা

Advertisement

মাস্টার প্ল্যান ও পরিকাঠামোগত বিষয়টি ছাড়া যে ক্ষেত্রগুলি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিএজি, সেগুলি হলো:

জল

যে ৭৪টি স্টেশনে সমীক্ষা চালানো হয়েছে, তারমধ্যে ২১টি স্টেশনের জল পানের যোগ্য নয়। স্টেশনের স্টলগুলিতে থাকছে না রেলের নিজস্ব জলের বোতল। পরিবর্তে সস্তার জলের বোতল বেশি মুনাফার লোভে বা রেলের শৌচাগার ভরার জল পানীয় জলের বোতলে ভরে তা বিক্রি করা হচ্ছে স্টেশনের কাউন্টারে। এমনকী, ওই নোংরা জল ব্যবহার করা হচ্ছে চা-কফি বা টোম্যাটো স্যুপেও।

প্যান্ট্রি

রান্নার কাজে ব্যবহার হচ্ছে শৌচাগারে ব্যবহারের জল। দুরন্তের মতো ট্রেনেও প্যান্ট্রিকার ইঁদুর-আরশোলায় ভর্তি। মাছি ভনভন করা না-খাওয়া খাবার ফের যাত্রীদের খেতে দেওয়া হচ্ছে! লখনউ-আনন্দবিহার ডবল ডেকার ট্রেনের এক যাত্রীর কাটলেটে পেরেক পাওয়া গিয়েছে বলে রিপোর্টে জানিয়েছে সিএজি। নিরাপত্তার কথা না ভেবে শুধু স্টেশনেই নয়, চলন্ত ট্রেনে ব্যবহার হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। রান্নার দায়িত্বে যাঁরা থাকেন, তাঁরা অধিকাংশই গ্লাভস বা মুখে মাস্ক পরার যে স্বাস্থ্যবিধি রয়েছে, তা মানেন না।

প্যাকেটজাত খাবার

স্টেশন বা ট্রেনে বিক্রি হওয়া অধিকাংশ প্যাকেটজাত খাবার খাওয়ার অযোগ্য বলে জানিয়েছে সিএজি। নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার, সময় পেরিয়ে যাওয়া খাবার, দুধ ও ফলের রস স্টেশন ও ট্রেনে বিক্রি করা হচ্ছে।

সমস্যা নিরাময়ে অবিলম্বে একটি দীর্ঘমেয়াদি ক্যাটারিং নীতির পাশাপাশি বড় স্টেশনগুলিতে বেস কিচেন গঠন করার কথা রিপোর্টে বলেছে সিএজি। নিম্নমানের বা নিয়ম না মানা খাবার পরিবেশনকারী সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে বিপুল অর্থের জরিমানা ও কালো তালিকাভুক্ত করারও সুপারিশ করেছে সিএজি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন