ধনীদের উপরে বেশি কর কি বাড়াবে ফাঁকি?

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেটে ২ কোটি টাকার বেশি আয়সম্পন্ন ব্যক্তিদের আয়করে বাড়তি সারচার্জ বসিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৯ ০৩:১২
Share:

বাজেট পেশের আগে লাল ব্যাগ হাতে নির্মলা।

একশো টাকা আয় করে কি ৪২ টাকাই কর মেটাতে ইচ্ছে করবে! খুব কম লোকেরই সেই ইচ্ছে হবে। তাই ধনীদের উপরে আয়করের বোঝা বাড়ানোয় কর ফাঁকির মাত্রা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কর-বিশেষজ্ঞরা। যার অর্থ, দেশে কালো টাকার পরিমাণও বাড়বে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেটে ২ কোটি টাকার বেশি আয়সম্পন্ন ব্যক্তিদের আয়করে বাড়তি সারচার্জ বসিয়েছেন। ৫ কোটি টাকার বেশি আয়ে আরও বেশি সারচার্জ গুণতে হবে। ফলে বছরে ২ কোটি টাকা থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত আয়ে আয়করের হার ৩৯ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াবে। ৫ কোটি টাকার বেশি আয় হলে আয়কর চাপবে ৪২.৭৮ শতাংশ। এ দেশে বিভিন্ন বহুজাতিক বা কর্পোরেট সংস্থার উচ্চপদে কর্মরত পেশাদারদেরও সমস্যা হবে। কারণ তাঁদের আয়করের বোঝা সংস্থাই বহন করে এবং সেই অনুযায়ী বেতন ঠিক হয়। ফলে তাঁদের আয়ে করের বোঝা আরও বেশি হবে।

২০১৭-১৮-র হিসেবে দেশে এক কোটি টাকার বেশি আয়সম্পন্ন করদাতার সংখ্যা ৮১,৩৪৪ জন। তার মধ্যে ২ কোটি টাকার বেশি আয়সম্পন্ন নাগরিকের সংখ্যা স্বাভাবিক ভাবেই আরও কম। কিন্তু টাকার অঙ্কে তাঁদের দেয় করের পরিমাণ যথেষ্ট বেশি। তাই কর ফাঁকির প্রবণতাও বেশি হবে।

Advertisement

বাড়তি আয়ের রাস্তা খুঁজতে এ বার মোদী সরকার ধনীদের উপরে কর চাপানোর চেষ্টা করবে বলে আশঙ্কা ছিলই। অনেকেই ভেবেছিলেন, সম্পদ কর, গয়না, শেয়ার, ফিক্সড ডিপোজিটের উপরে কর চাপানো হবে। বিশেষ করে সম্পত্তি কর আবার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন। বস্তুত নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলেই ২০১৫-র বাজেটে সম্পদ কর তুলে দেওয়া হয়। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির যুক্তি ছিল, সম্পদ কর আদায় করতে যা খরচ হয় সেই তুলনায় আয় হয় না। তার বদলে ১ কোটি টাকার বেশি আয়সম্পন্নদের আয়করের উপরে ২ শতাংশ সারচার্জ বসান তিনি। এ বার নির্মলাও সেই পথেই হেঁটেছেন। অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেট বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘‘আয়ের মাত্রা বাড়ছে। দেশে যাঁরা বেশি আয়ের বন্ধনীতে আছেন, তাঁদের দেশের উন্নয়নে আরও বেশি যোগদান করতে হবে।’’ কিন্তু অর্থমন্ত্রীর পদক্ষেপে প্রধানমন্ত্রীর কালো টাকার বিরুদ্ধে ঘোষিত যুদ্ধেই তাতে বাধা পড়বে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

এ বারের বাজেটে ২০১৬-র কালো টাকা ঘোষণা প্রকল্পের জানলা আর এক বার খোলার কথাও বলা হয়েছে। সে সময় যাঁরা কালো টাকা ঘোষণা করেছিলেন কিন্তু তার উপরে কর, সারচার্জ ও জরিমানা মেটাননি তাঁদের আরও এক বার সুদ-সহ বকেয়া মেটানোর সুযোগ দেওয়া হবে। সরকার এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করবে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন