Special Intensive Revision

বিহারে খসড়া ভোটার তালিকা থেকে ‘বাদ’ লালু-পুত্র তেজস্বীর নাম! অভিযোগ খারিজ করে কী জানাল জাতীয় নির্বাচন কমিশন

লালুপ্রসাদ যাদবের পুত্র জানিয়েছেন, কমিশনের অ্যাপে ভোটার কার্ডে থাকা এপিক নম্বর দিয়ে নাম খোঁজার চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু স্ক্রিনে বার বার লাল কালির লেখা ভেসে উঠে জানান দিচ্ছিল, এই সংক্রান্ত কোনও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৫ ১৪:২৩
Share:

পটনায় সাংবাদিক বৈঠকে তেজস্বী যাদব। শনিবার। ছবি: সংগৃহীত।

বিহারে খসড়া ভোটার তালিকায় নাম নেই সে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদবের। শনিবার একটি সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেই এই কথা জানিয়েছেন তিনি। লালুপ্রসাদ যাদবের পুত্র জানিয়েছেন, কমিশনের অ্যাপে ভোটার কার্ডে থাকা এপিক নম্বর দিয়ে নাম খোঁজার চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু বার বার লাল কালির লেখা স্ক্রিনে ভেসে উঠে জানান দিচ্ছিল, এই সংক্রান্ত কোনও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। তার পরেই খানিক বিদ্রুপের সুরে তিনি বলেন, “ভোটার তালিকায় আমার নিজেরই নাম নেই। এই পরিস্থিতিতে আমি ভোটে লড়ব কী ভাবে?

Advertisement

কমিশনের অভিযোগের ভিত্তিতে মুখ খুলেছে কমিশন। তেজস্বীর দাবি খারিজ করে কমিশন জানিয়েছে, ক্রমিক নম্বর ৪১৬-তে তেজস্বীর নাম রয়েছে। তাই তেজস্বীর দাবিকে মিথ্যা বলে জানানো হয়‌েছে কমিশনের তরফে। কমিশনের দেওয়া তালিকায় তেজস্বীর এপিক নম্বর আরএবি০৪৫৬২২৮। অন্য দিকে, সাংবাদিক বৈঠকে তেজস্বী নিজেই জানান তাঁর ভোটার কার্ডে থাকা এপিক নম্বর আরএবি২৯১৬১২০।

বিহারে বিধানসভা ভোটের আগে ‘বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা’ (স্পেশ্যাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা এসআইআর) চালাচ্ছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার দুপুরে সংশোধিত খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। ওই তালিকায় বাদ পড়েছে ৬৫ লক্ষের বেশি নাম। বাদ পড়া তালিকায় মৃত, স্থানান্তরিত এবং ভোটার তালিকায় থাকা একাধিক ঠিকানার ব্যক্তিদের নাম রয়েছে বলে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিহারে ভোটার তালিকায় প্রায় সাত কোটি ৯০ লক্ষ নাম ছিল। এসআইআর পর্বের পরে তা কমে সাত কোটি ২৪ লক্ষে নেমে এসেছে বলে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য জানাচ্ছে রাজধানী পটনায় বাদ পড়া ভোটারের সংখ্যা সর্বোচ্চ— ৩ লক্ষ ৯৫ হাজার। এ ছাড়া মধুবনীতে ৩ লক্ষ ৫২ হাজার, পূর্ব চম্পারণে ৩ লক্ষ ১৬ হাজার এবং গোপালগঞ্জ জেলায় ৩ লক্ষ ১০ হাজার নাম বাদ পড়েছে। তবে এই সমীক্ষা নিয়ে বিতর্কও থেমে নেই। বিরোধীদের অভিযোগ, কমিশন বিজেপির কথায় ‘ভোট চুরি’ করছে। তা ছাড়া, কমিশন ভোটাধিকার যাচাইয়ের জন্য যে সমস্ত নথি চেয়েছে, সেই তালিকায় ভোটার কার্ড, আধার কার্ড বা রেশন কার্ডের মতো সহজলভ্য নথি রাখা হয়নি। এর বিরুদ্ধেও আওয়াজ তুলেছে বিরোধীরা। এই নিয়ে মামলাও চলছে সুপ্রিম কোর্টে।

Advertisement

এমতাবস্থায় কমিশনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী। শনিবার তিনি বলেন, “কমিশন ৬৫ লক্ষ মানুষের নাম বাদ দিয়েছে। কমিশন কি বাদ পড়া মানুষদের নোটিস দিয়েছিল? তাঁদের সময় দেওয়া হয়েছিল? খসড়া তালিকা থেকে স্পষ্ট, কমিশন নির্দিষ্ট লক্ষ্যে কাজ করছে। আমি কমিশনের কাছে জানতে চাই কেন তারা স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে পারছে না?” তেজস্বী দাবি করেন, তাঁর সঙ্গে কাজ করা আরজেডি-র বহু কর্মীর নামও খসড়া তালিকায় নেই। এই বিষয়ে শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপ চাইছেন তেজস্বী। তিনি চান সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই বিষয়ে কমিশনের কৈফিয়ত তলব করুক। কমিশন ‘বড় মাত্রায়’ ভোট কারচুপি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

কমিশন আগেই জানিয়েছিল, শুক্রবার বিহারে সংশোধিত খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। কারও নাম যদি খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়ে গিয়ে থাকে, তাঁর নাম জোড়ার জন্য আবেদন জানানো যাবে। তালিকায় যদি এমন কোনও নাম থাকে, যা থাকার কথা নয়, তা বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন জানানো যাবে। ১ অগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অভিযোগ বা দাবিদাওয়া জানানো যাবে। তার পর সংশোধিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement