ফাঁড়ি থেকে পুলিশের নজর এড়িয়ে পালাল হাতকড়া-পরা দুষ্কৃতী। ঘটনার কথা ধামাচাপা দিতে অন্য ফাঁড়ি থেকে হাতকড়া এনে দেখানো হল তদন্তকারী অফিসারদের!
পুলিশ সূত্রে খবর, গত রাতে বাঁশাইল এলাকা থেকে আলি নামের এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কালীগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে। ধৃতের বিরুদ্ধে ডাকাতির পাশাপাশি বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়েছিল তাকে। সুযোগ পেয়ে সে পালায়। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওই ফাঁড়ির ইন-চার্জ লিটন নাথের বিরুদ্ধে। কালীগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি করিমগঞ্জ সদর থানার অন্তর্গত। ওসি শঙ্কর মণ্ডল ঘটনার খবর পেয়ে রাত ২টো নাগাদ সদর থানার সেকেন্ড অফিসার পবন কলিতাকে সঙ্গে নিয়ে কালীগঞ্জ ফাঁড়িতে যান। সেখানকার কর্মীদের কাছে জানতে চান, হাতকড়া পরা অবস্থায় কী ভাবে বন্দি পালিয়ে গেল।
পুলিশ সূত্রে খবর, সংশ্লিষ্ট ফাঁড়ির ইন-চার্জ লিটন নাথ দাবি করেন, আলিকে ফাঁড়িতে আনা যায়নি। মাঝরাস্তাতেই সে পালিয়েছে। কিন্তু আলিকে ফাঁড়িতে হাতকড়া পরিয়ে বসিয়ে রাখার ছবি লিটনবাবুকে মোবাইল ফোনে দেখানো হয়। কিন্তু তিনি তা মানতে অস্বীকার করেন।
সদর থানার দুই আধিকারিক ফাঁড়ির হাতকড়ার হিসেব চান। রাত ৩টে নাগাদ করিমগঞ্জ সদরে ফিরে যান দুই আধিকারিক। ঠিক তখনই সদর থানায় খবর যায়, তদন্তের আশঙ্কায় লিটনবাবু মনসাঙ্গণ ফাঁড়ি থেকে একটি হাতকড়া নিয়ে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন। যাতে ফাঁড়িতে থাকা হাতকড়ার হিসেব থানার কর্তাদের দেখাতে কোনও সমস্যা না হয়। পুলিশের একাংশের দাবি, কালীগঞ্জ ফাঁড়ির টেবিল-চেয়ারগুলির স্থানবদল করা হয়েছিল। যাতে ওই দুষ্কৃতী ফাঁড়িতে বসে থাকা অবস্থার সঙ্গে কিছুর সামঞ্জস্য না থাকে। টেবিলে থাকা লাল রঙের কভারও বদলে দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, মনসাঙ্গণ ফাঁড়ির ইন-চার্জ গুলজার হুসেন জানিয়েছেন, গত রাতে কালীগঞ্জ ফাঁড়ির পুলিশ তাঁদের কাছ থেকে একটি হাতকড়া নিয়ে গিয়েছিলেন।
অন্য দিকে, এ দিনই করিমগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে গেল সাজাপ্রাপ্ত বন্দি। স্থানীয় সূত্রে খবর, বাড়িতে ফেরার পর তাকে ধরে ফেলেন এলাকাবাসী। তবে ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন জেল কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সূত্রেই খবর মিলেছে, ওই বন্দির নাম আজিরউদ্দিন। তবে জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপরঞ্জন করের প্রশ্নে জেল সুপার হবিবুর রহমান জানিয়েছেন, গুণতির সময় আজিরউদ্দিনের খোঁজ মেলেনি। তিনি ফের জেলে গুণতির ব্যবস্থা করছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অজিরের বাড়ি কাছাড় জেলার কাটিগড়া এলাকায়। কারাগার থেকে পালিয়ে সে সেখানে চলে গিয়েছিল। স্থানীয় লোকজন তাকে ধরে ফেলেন। জেল কর্তৃপক্ষের তরফে অজিরকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।