রবার্ট বঢরা। ফাইল চিত্র।
রাহুল, প্রিয়ঙ্কার পর এবার কি রবার্ট বঢরা?রাজনীতির প্রত্যক্ষ ময়দানে কি এ বার দেখা যাবে গাঁধী পরিবারের জামাই রবার্টকেও?ফেসবুকে তাঁর করা একটি পোস্টের বক্তব্যে মিলছে সেই ইঙ্গিত। সেখানে তিনি স্পষ্টই লিখেছেন, ‘এত দিনের অভিজ্ঞতা আর শিক্ষা নষ্ট না করে ভাল কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। যে দিন আমার বিরুদ্ধে আর কোনও অভিযোগ থাকবে না, সেই দিন মানুষের ভালর জন্য কিছু করা উচিত বলে আমার মনে হচ্ছে।’
আগামী লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভার রাহুলের কাঁধেই। অন্য দিকে এক মাস হল সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করে দিয়েছেন প্রিয়ঙ্কাও। পূর্ব উত্তরপ্রদেশের মতো গেরুয়াদুর্গে কংগ্রেসের তরফে নির্বাচন পরিচালনা করছেন তিনিই। অন্য দিকে গত এক মাস তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ সামলাতেই জেরবার রবার্ট। লন্ডনে বেনামি সম্পত্তি কেনাবেচায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের ম্যারাথন জেরার মুখেও পড়তে হয়েছে। রবার্ট অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বার বারই বলে এসেছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে শাসক বিজেপি।
শ্যালক রাহুল এবং স্ত্রী প্রিয়ঙ্কার পথ অনুসরণ করে কি এ বার রাজনীতিতে নামছেন রবার্টও। তাঁর করা একটি ফেসবুক পোস্টে অন্তত তেমন ইঙ্গিতই মিলছে। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘বছরের পর বছর, মাসের পর মাস আমি দেশের নানা প্রান্তে প্রচারের কাজ করেছি। আমার মনে হচ্ছে সাধারণ মানুষের ভাল-র জন্য আমার আরও বেশি কিছু করা উচিত। মানুষের জীবনে খুব ছোট ছোট পরিবর্তন এনেই যে ভালবাসা, আশীর্বাদ ও সম্মান পেয়েছি, তা আমার মাথা নত করে দিয়েছে।’
আরও পড়ুন: আলিঙ্গনেও সাড়া দেয় না মোদীর শরীর! কটাক্ষ রাহুলের
একই পোস্টে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও মুখ খুলেছেন ৪৯ বছরের রবার্ট। তাঁর কথায়, ‘এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আমার পিছনে পড়ে আছে বিভিন্ন সরকার। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে আসল সমস্যা থেকে মানুষের মন ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু এই দেশের সাধারণ মানুষ সেই ষড়যন্ত্রের বিষয়টি বুঝতে পেরে গিয়েছে। দেশবাসী জানে, এই সমস্ত অভিযোগই মিথ্যা। এখন মানুষ নিজেই আমার কাছে এসে সম্মান দিচ্ছে আর আমার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আশীর্বাদ করছে।’
বাঁ দিক থেকে রবার্ট, সনিয়া, রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। ফাইল চিত্র।
তাঁর বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের চলতে থাকা তদন্ত নিয়ে রবার্ট বলেছেন, ‘দিল্লি এবং রাজস্থানের বিভিন্ন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট অফিসে আমাকে অন্তত আট বার জেরা করা হয়েছে। আমি আইনের ঊর্ধ্বে নই, তাই আমি সব সময়ই আইন মেনে চলার চেষ্টা করি। আর প্রতি ঘটনা থেকেই আমি শিক্ষা নিই।’
আরও পড়ুন: গোরক্ষপুর থেকে ৭৫ হাজার কোটি টাকার কৃষক প্রকল্পের সূচনা করবেন মোদী
‘দেশের ভাল-র জন্য আরও সক্রিয় ভাবে কিছু করতে চাই’, রবার্টের এই মন্তব্য নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা। অনেকেই বলছেন, আসলে রাজনীতিতে আসার স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে এই পোস্ট থেকে। অনেকে আবার বলছেন, ইডি-র জেরার জেরবার হয়ে পাল্টা চাপ তৈরির উদ্দেশ্যেই রাজনীতিতে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছেন রবার্ট।
রবার্ট রাজনীতিতে এলে আক্ষরিক অর্থেই সম্পূর্ণ হবে গাঁধী পরিবারের ক্ষমতার অলিন্দ। এই মুহূর্তে ইউপিএচেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী, কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গাঁধী আর কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা। অপেক্ষা শুধু রবার্টেরই।