(বাঁ দিকে) রোহিণী আচার্য এবং তাঁর বাবা তথা আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে আরজেডি-র ভরাডুবির পরের দিনই ভাঙন ধরেছে লালু প্রসাদ যাদবের পরিবারে। তাঁর কন্যা রোহিণী আচার্য পরিবারের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে বেরিয়ে গিয়েছেন। জানিয়েছেন, রাজনীতিতেও আর থাকবেন না। এই রোহিণীই লালুকে কিডনি দান করেছিলেন কয়েক মাস আগে। ভোটে পরাজয়ের পর বাড়িতে কী এমন ঘটল যে, এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে হল? রবিবার ফের তা নিয়ে মুখ খুলেছেন লালকন্যা।
রোহিণী নিজের সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন, তাঁকে অপমান করা হয়েছে। অভিযোগ, তাঁকে মারতে জুতোও তোলা হয়েছিল। কেবল সত্যের পক্ষ ত্যাগ করেননি বলেই এই হেনস্থা, দাবি করেছেন রোহিণী। তিনি লিখেছেন, ‘‘গত কাল এক জন কন্যা, বোন, এক জন বিবাহিত মহিলা এবং এক জন মাকে অপমান করা হয়েছে। নোংরা গালিগালাজ করা হয়েছে। মারার জন্য জুতো তোলা হয়েছে। আমি আমার আত্মসম্মানের সঙ্গে আপস করিনি। সত্যকে ত্যাগ করিনি। শুধুমাত্র সেই কারণেই আমাকে এই অপমান সহ্য করতে হয়েছে।’’
এর পর পরিবারের প্রতি ক্ষোভ এবং অভিমান উগরে দিয়েছেন লালুকন্যা। দাবি, ক্রন্দনরত বাবা-মা, বোনেদের ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে তাঁকে। রোহিণীর কথায়, ‘‘গত কাল এক জন অসহায় কন্যা তাঁর ক্রন্দনরত বাবা-মাকে এবং বোনেদের ছেড়ে এসেছে। আমাকে আমার বাবার বাড়ি ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। আমাকে অনাথ করে দেওয়া হয়েছে। আপনাদের কাউকে যেন আমার এই পথ অনুসরণ করতে না-হয়। যেন কোনও বাড়ি কোনও দিন রোহিণীর মতো মেয়ে বা বোন না-পায়।’’
উল্লেখ্য, কার সঙ্গে মতবিরোধ, জানাননি রোহিণী। রবিবারের পোস্টে কারও নাম উল্লেখ করেননি। তবে শনিবার পরিবার ত্যাগের ঘোষণার সময় তিনি তিনটি নাম করেছিলেন। ভাই তেজস্বী যাদবের সঙ্গে যে দ্বন্দ্ব, তা সেখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। রোহিণী বলেছিলেন, ‘‘পরিবারের সঙ্গে আমার আর কোনও সম্পর্ক নেই। সঞ্জয় যাদব আমাকে এটা করতে বলেছে।’’ সঞ্জয়, রমীজ় এবং তেজস্বীকে জিজ্ঞেস করলে এর উত্তর পাওয়া যাবে, দাবি করেছিলেন লালুকন্যা। সঞ্জয় এবং রমীজ়, উভয়েই তেজস্বী ঘনিষ্ঠ।
দলের হারের কথা উল্লেখ করে রোহিণী বলেছিলেন, ‘‘কেন দল এ ভাবে হারল, এটা গোটা দেশের প্রশ্ন। কিন্তু সঞ্জয়, রমীজ়ের নাম করলেই অপমানিত হতে হচ্ছে।’’
উল্লেখ্য, বিহারের ভোটে শোচনীয় পরাজয় হয়েছে আরজেডি-র। গত বারের বিধানসভা নির্বাচনে যে দল সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছিল, সেই দল এক থেকে এ বার নেমে গিয়েছে তিন নম্বরে। পেয়েছে মাত্র ২৫টি আসন। এই ফলাফলের পরেই তেজস্বী এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে রোহিণীর গোলমাল হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তেজস্বী এখনও এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি।