অযোধ্যা রায় নিয়ে সঙ্ঘের সংযম-বার্তা

অসমের অভিজ্ঞতা থেকে বিজেপি নেতৃত্ব বুঝেছেন, নাগরিকপঞ্জির প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু ফাঁকফোকর থেকে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৯ ০২:১১
Share:

—ফাইল চিত্র।

আর মাত্র সপ্তাহ দুই। তার মধ্যেই অযোধ্যা মামলার চূড়ান্ত রায় বেরোনোর সম্ভাবনা। রায় আসার আগে যেমন ‘চুপ’ থাকতে হবে, তেমনই রায় প্রকাশের পর তা পক্ষে গেলেও যেন ‘উচ্ছ্বাস’ প্রকাশ করা না হয়। মোহন ভাগবতের উপস্থিতিতে দিল্লিতে আরএসএসের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দেশজুড়ে নাগরিকপঞ্জি চালুর পক্ষেও সায় দিয়েছেন সঙ্ঘ নেতৃত্ব।

Advertisement

অসমের অভিজ্ঞতা থেকে বিজেপি নেতৃত্ব বুঝেছেন, নাগরিকপঞ্জির প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু ফাঁকফোকর থেকে গিয়েছে। খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সেই ত্রুটি শুধরে তা গোটা দেশে চালু করার কথা আগেই ঘোষণা করেছেন। এবং সেটি হবে নরেন্দ্র মোদী সরকারের চলতি জমানা শেষের আগেই। গত তিন দিন ধরে দিল্লিতে সঙ্ঘের বৈঠকে হাজির ছিলেন অমিত শাহ। বৈঠকে গোটা দেশে নাগরিকপঞ্জি চালুর পক্ষেই সঙ্ঘ সায় দিয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে আপাতত সঙ্ঘের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ, অযোধ্যা মামলার রায় সামলানো। ক’দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পরোক্ষে আবেদন করেছেন, রায় আসার পর সব পক্ষকেই সংযমী থাকতে হবে। সঙ্ঘও সেই পথে হাঁটল।

সঙ্ঘের এই বৈঠকটি হরিদ্বারে হওয়ার কথা ছিল। স্থান বদলে সেটি নিয়ে আসা হয় রাজধানী দিল্লিতে। সেখানে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কোর কমিটির সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। বিজেপি সূত্রের মতে, রায় ঘিরে দেশে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা মোদী সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। রায় যে দিকেই যাক, সব পক্ষই যাতে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখে, সে দিকেই এখন কড়া নজর রাখা হচ্ছে। সেই মতো সঙ্ঘ নেতৃত্বও সংগঠনের সকলকে জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী দুই সপ্তাহ সব কর্মসূচি বাতিল করতে হবে। প্রত্যেককে নিজ নিজ এলাকায় থাকতে হবে। রায় পক্ষে এলেও কোনও ‘বিজয় উৎসব’ যেন না হয়। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কোনও এলাকায় মিছিল করা যাবে না। ওই সব জায়গায় কোনও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করা

Advertisement

যাবে না।

রায় যদি পক্ষে না-ও যায়, সে ক্ষেত্রেও সংযম বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সঙ্ঘ নেতৃত্ব। বহু দিন ধরে সঙ্ঘ নেতৃত্ব আইন করে রামমন্দির নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে বলে কোনও হস্তক্ষেপ করতে চায়নি মোদী সরকার। সঙ্ঘের এক সূত্রের মতে, এ বারে শীর্ষ আদালতের রায় যদি পক্ষে না যায়, তা হলে মোদী সরকারের পক্ষে আইনি পদক্ষেপ করতে কোনও বাধা থাকার কথা নেই। যা হবে আইন ও সংবিধান মেনেই হবে। গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য, ঘটনা যাই হোক, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। এমনিতেই পশ্চিমী দুনিয়ায় সঙ্ঘের ভাবমূর্তি নিয়ে বহু বার প্রশ্ন উঠেছে। এই অবস্থায় রামমন্দির রায় ঘিরে কোনও রকম চরম মনোভাব যাতে মাথাচাড়া না দেয়, সে দিকে কড়া নজর রাখছে সঙ্ঘ পরিবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন