ফাইল চিত্র।
সিনেমায় নামছে আরএসএস।
‘পদ্মাবত’ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। ‘সিনেমায় হিন্দু আবেগ আক্রান্ত’ বলে সরব বিজেপি। ছবির প্রদর্শন আটকাতেও মরিয়া গেরুয়া শিবির। এমন এক সময়ে ‘ভারতীয় চিত্র সাধনা’ নামে বিকল্প একটি মঞ্চ নিয়ে সামনে এল আরএসএস। যার লক্ষ্য, তথাকথিত বাম-প্রভাবিত উদার সিনেমার বদলে ‘রাষ্ট্রবাদী ও ভারতীয় সংস্কৃতি ভিত্তিক’ ছবি পেশ করা। ধাপে ধাপে বিকল্প সিনেমাওয়ালাদের একটি ফৌজও তৈরি করতে চাইছে সঙ্ঘ।
‘বাম প্রভাবিত ইতিহাস’ বদলের কাজে ইতিমধ্যেই হাত দিয়েছে আরএসএস। জনমানসে যে হেতু সিনেমার প্রভাবও যথেষ্ট, সঙ্ঘ তাই নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জোর দিচ্ছে ‘বিকল্প’ ছবি তৈরিতে। সঙ্ঘ-সূত্র জানাচ্ছে, ফেব্রুয়ারিতেই এমন বিকল্প ছবিগুলি নিয়ে ‘চিত্র ভারতী চলচ্চিত্র উৎসব’ হবে দিল্লিতে। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু থেকে কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে। বলিউডের মধুর ভান্ডারকর, সুভাষ ঘাই, জ্যাকি শ্রফরাও আমন্ত্রণ পাবেন।
সঙ্ঘের এক নেতার কথায়, ‘‘এত দিন ভারতে বাম-প্রভাবিত ভাবনা থেকেই সিনেমা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, ভারতের সংস্কৃতি থেকে জন্ম নেওয়া ভাবনাকে মেলে ধরা। সেই কারণে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, ফিল্ম ইনস্টিটিউটে গিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। দেশের আধা শহর বা গ্রামে যাঁদের আগ্রহ আছে, আহ্বান জানানো হচ্ছে তাঁদেরও। আপাতত উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি, তথ্যচিত্র বা অ্যানিমেশন-ভিত্তিক ছবি বানানোয়।’’ সঙ্ঘ জানাচ্ছে, ভারতের ইতিহাসকে ‘ঠিকমতো’ তুলে ধরবেন যাঁরা, ধাপে ধাপে একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি করে তাঁদের সাহায্যের ব্যবস্থা করা হবে। বিদেশেও চলবে এই প্রচার।
কী কী বিষয়ের ছবিকে এই মঞ্চে গুরুত্ব দেওয়া হবে, তা-ও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বিষয়বস্তুর সেই তালিকা এই রকম— মাতৃভূমি, ভারতীয় পরিবার ব্যবস্থা, ভারতের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ, নারী, লোকশিল্প, পরিবেশ। বলা হয়েছে, এই ভাবনাগুলি অবলম্বনে তৈরি ছবিই প্রাধান্য পাবে ফেব্রুয়ারির ‘চিত্র ভারতী চলচ্চিত্র উৎসবে’। যা শুনে এক বিরোধী নেতার মন্তব্য, ‘‘আরএসএস মনে করে, তারাই ভারতীয় সংস্কৃতির একমাত্র ধারক ও বাহক। এত দিন ধরে কি ভারতের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ, মাতৃভূমি, নারী, পরিবেশ নিয়ে ছবি হয়নি? দেশ যখন এগোতে চাইছে, গেরুয়া শিবির তখন সকলকে পিছনের দিকেই টেনে নিয়ে যাচ্ছে নিরন্তর।’’