শীঘ্রই রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দেখা করে রামমন্দির নিয়ে চাপ বাড়ানোর কৌশল। অন্য দিকে, এম কে স্ট্যালিনের সঙ্গে দেখা করে বিরোধী জোটে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা। বিজেপির ভোটযু্দ্ধে পুরোদস্তুর এ ভাবেই মাঠে নামল আরএসএস। সেইসঙ্গে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ জানিয়ে দিলেন, ‘সাংবিধানিক’ পথেই রামমন্দির গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অযোধ্যা মামলার শুনানি কবে থেকে শুরু, জানুয়ারির আগে তা জানাবে না সুপ্রিম কোর্ট। গত কালও এই মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি ১০ সেকেন্ডে খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। আজ বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘রামমন্দির শুনানি কবে হবে তা জানুয়ারি মাসে জানাবে সুপ্রিম কোর্ট। সেই মামলার রায় জানতে অপেক্ষা করতেই হবে। বিজেপির বিশ্বাস রাম জন্মভূমিতেই রামমন্দির গড়তে হবে। সাংবিধানিক পথেই রামমন্দির গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ সঙ্ঘ এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) স্থির করেছে, সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরুর মুখে ২৫ নভেম্বর থেকে অযোধ্যা, বেঙ্গালুরু, নাগপুর এবং দিল্লিতে এ নিয়ে পর-পর সভা করা হবে। ৯ ডিসেম্বর দিল্লিতে বিরাট সভা হবে রামলীলা ময়দানে। আর অধ্যাদেশ নয়, এ বার আইনের দাবিতেই সরব হবে গেরুয়া পরিবার। তার পরেই রাহুল গাঁধী-সহ দেশের সব সাংসদকে এই আইনের দাবিকে সমর্থন করতে চাপ দেবেন।
কিন্তু রাহুল যদি রাজি না হন? ভিএইচপি নেতা অলোক কুমারের কথায়, ‘‘কেন হবেন না? তিনিও তো শিবভক্ত, রামভক্ত। তাঁর দলও তো এখন ইস্তাহারে গো-শালা নির্মাণের কথা বলছে। আমরা দেশের সব সাংসদের নির্বাচনী কেন্দ্রে গিয়ে সভা করব। জনমত গড়ে তুলব।’’
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এই নেতা আদতে মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের ইস্তাহারের কথা বলেছেন। যে ইস্তাহারে ক্ষমতায় এসেই সরকারি ভবনে আরএসএসের শাখাকে নিষিদ্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কংগ্রেস। এ নিয়ে আরএসএস থেকে বিজেপিতে আসা কিছু নেতা প্রতিবাদ করেছেন বটে, কিন্তু সঙ্ঘ এখন মন্দিরের হাওয়া তুলতেই বেশি মনোযোগী। একই সঙ্গে ভোটের আগে বিরোধী জোটকে দুর্বল করে মোদীর হাতও কিছুটা শক্ত করতে চাইছে। সেই সমীকরণেই করুণানিধির মৃত্যুর প্রায় তিন মাস পরে স্ট্যালিনের সঙ্গে দেখা করতে চলে গেলেন আরএসএসের প্রতিনিধিরা। বললেন— সৌজন্য।
সম্প্রতি মুম্বইয়ে সঙ্ঘ-প্রধান মোহন ভাগবতের উপস্থিতিতে আরএসএসের যে ‘কার্যকরী মণ্ডল’-এর বৈঠক হয়েছে, সেখানে করুণানিধির মৃত্যুতে দু’মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। করুণানিধির অবদান নিয়ে একটি প্রস্তাবও পাশ করে সঙ্ঘ। এর পরেই আরএসএসের তামিলনাড়ুর সঙ্ঘচালক কুমারস্বামী, প্রান্ত প্রচারক পিএম রবিকুমার চেন্নাইয়ে দেখা করতে চলে যান স্ট্যালিনের সঙ্গে। তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় আরএসএসের শোকবার্তাও। সঙ্গে সঙ্ঘের একটি ‘কফি টেবিল বুক’।
এ নিয়ে দিল্লিতে কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া— এত কিছু করে কী লাভ? বিরোধী জোট ভাঙবে না। রাফাল থেকে নজর ঘোরাতে মন্দিরের হাওয়া তুললেও মানুষকে আর বোকা বানানো যাবে না।