বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। — ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের জঙ্গি-যোগ নিয়ে আবার সরব হলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। নেদারল্যান্ডসে একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়ে তিনি জানালেন, পাকিস্তানের শহরে দিনের আলোয় সন্ত্রাসবাদীরা ঘুরে বেড়ায়। সে দেশে সন্ত্রাসবাদীদের ঠিকানা সকলে জানেন। পাকিস্তান সরকারের অজান্তে এটা কি সম্ভব, প্রশ্ন বিদেশমন্ত্রীর।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে দেশগুলির সঙ্গে ভারত বাণিজ্য করে, তাদের মধ্যে অন্যতম হল নেদারল্যান্ডস। দুই দেশের সম্পর্ক মজবুত করার জন্য নেদারল্যান্ডস সফরে গিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। সেখানেই ডাচ সংবাদপত্র ‘ভোকসক্রান্ট’-কে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে পাকিস্তানের দিকে আঙুল তুলেছেন তিনি। স্পষ্ট জানিয়েছেন, পাকিস্তানের মাটিতে জঙ্গিদের কার্যকলাপ সে দেশের সরকারের অজানা নয়। ভারতীয় সেনার ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্র। আমি এই নিয়ে পরামর্শ দিচ্ছি না, বিবৃতি দিচ্ছি।’’ আর পাকিস্তানের প্রশাসনও যে এই বিষয়ে অবহিত, তা-ও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘ধরা যাক, আমস্টারডামের মতো শহরের মধ্যভাগে সেনাকেন্দ্র রয়েছে। সেখানে হাজার হাজার মানুষ সেনার প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। আপনার সরকার কিছুই জানে না, এটা কি বলতে পারেন? অবশ্যই নয়।’’
এখানেই থামেননি জয়শঙ্কর। তিনি ওই সংবাদমাধ্যমকে আরও বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদীরা সকলে পাকিস্তানেই রয়েছে। দিনের আলোয় তারা বড় শহরগুলিতে সক্রিয়। তাদের ঠিকানা সকলেই জানেন। তাদের কাজকর্মও সকলেই জানেন। ওদের সঙ্গে কাদের যোগ রয়েছে, তা-ও সকলের জানা। তাই পাকিস্তান জড়িত নয়, এটা মনে করার কোনও কারণ নেই। এই রাষ্ট্রও জড়িত। তাদের সেনাও জড়িত।’’ জয়শঙ্করের হুঁশিয়ারি, পাকিস্তান এই সন্ত্রাস হামলা বন্ধ না করলে ‘ফল ভুগতে হবে’।
তবে তিনি এ-ও মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে কাশ্মীর বিষয়ক আলোচনার কোনও সম্পর্ক নেই। সেই বিষয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে বসে আলোচনা করবে ভারত। এখানে তৃতীয় দেশের হস্তক্ষেপ মানা হবে না বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তানের সঙ্গে বসে আমরা কথা বলব।’’ প্রসঙ্গত, এই বিষয়ে মধ্যস্থতা করার কথা জানিয়েছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বিষয়টি আগেই নাকচ করে দিয়েছে ভারত। এ বার নেদারল্যান্ডসে বসে আবার তা মনে করিয়ে দিলেন জয়শঙ্কর। সেই সঙ্গে জানালেন, নিজেদের স্বার্থে কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পে থাবা বসাতে চাইছে জঙ্গিরা। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের হামলা সেই কথাই বলে। ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন ওই ঘটনায়। বেশির ভাগই পর্যটক। জয়শঙ্করের কথায়, ‘‘জঙ্গিরা কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পকে নিশানা করেছে। নিজেদের স্বার্থে তারা কাশ্মীরের জিনিস ধ্বংস করছে। ইচ্ছা করেই হামলার সঙ্গে ধর্মীয় বিষয়ও জড়িয়ে দিয়েছে। এ ধরনের কাজকে গোটা বিশ্বের মেনে নেওয়া উচিত নয়।’’