বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যখন কার্যত তলানিতে নেমেছে, সেই সময় আরও কাছাকাছি এল নয়াদিল্লি এবং কাবুল। বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে কথা বললেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আফগান মুলুকে তালিবান ফের ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম মন্ত্রী পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি কথা হল। চলতি ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দুই মন্ত্রীর এই কথোপকথনকে এই তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর তার নিন্দায় সরব হয়েছিল তালিবান সরকার। আফগান সরকারের মন্ত্রীকে পহেলগাঁও কাণ্ডের নিন্দা জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানান জয়শঙ্কর। সমাজমাধ্যমে বিদেশমন্ত্রী লেখেন, “পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার নিন্দা জানানোর জন্য তাঁকে (তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী) ধন্যবাদ জানাই।” এর পাশাপাশি আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের ‘চিরন্তন’ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে দুই দেশের বোঝাপড়া আরও নিবিড় করার বার্তাও দিয়েছেন জয়শঙ্কর।
প্রসঙ্গত, পহেলগাঁও কাণ্ডের পর পাকিস্তানের একটি অংশ থেকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, এই ঘটনার নেপথ্যে তালিবানের হাত রয়েছে। তালিবান সরকার অবশ্য এই দাবি নস্যাৎ করে দেয়। বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। তিনি লেখেন, “মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন প্রতিবেদনের মাধ্যমে যে ভাবে ভারত এবং আফগানিস্তানের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল, তা দৃঢ় ভাবে খারিজ করে দেওয়ার জন্য আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।”
জয়শঙ্করের সঙ্গে কোন কোন বিষয়ে কথা হয়েছে, সমাজমাধ্যমের একাধিক পোস্টে পাশতুন ভাষায় তা তুলে ধরেন তালিবানের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান হাফিজ় জ়িয়া আহমেদ। তিনি জানান, আফগানদের আরও বেশি ভারতীয় ভিসা দেওয়া, ভারতে বন্দি আফগানদের মুক্তি দেওয়া এবং ইরানের চাবাহার বন্দরের উন্নয়ন নিয়ে তাঁদের সঙ্গে জয়শঙ্করের কথা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নয়া তালিবান শাসনে পাকিস্তানের মাথাব্যথা বেড়েছে আফগানিস্তানকে নিয়ে। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ একাধিক বার বিদ্রোহী গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর হামলায় রক্তাক্ত হয়েছে। তালিবান সরকারের বিরুদ্ধে এই গোষ্ঠীকে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ইসলামাবাদ। অন্য দিকে, এখনও কূটনৈতিক স্বীকৃতি না-দিলেও তালিবান সরকারের সঙ্গে আলোচনার দরজা বন্ধ করে দেয়নি ভারতও। এই আবহে পাকিস্তানকে আরও কোণঠাসা করতে নয়াদিল্লি কাবুলকে আরও কাছে টানছে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে।