শবরীমালার গর্ভগৃহ ‘শ্রীকোভিল’-এর দেওয়াল এবং দ্বারপালকের মূর্তি থেকে সোনা উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। — ফাইল চিত্র।
শবরীমালা থেকে গয়না চুরির ঘটনায় বেশ কয়েক জায়গায় তল্লাশি চালাল বিশেষ তদন্তকারী সংস্থা (সিট)। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত উন্নিকৃষ্ণণ পট্টির বেঙ্গালুরুর বাড়ি এবং বল্লারির একটি গয়নার দোকানে তল্লাশি চালানো হয়েছে। সেখান থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সোনার বাট। তদন্তের স্বার্থে পট্টিকে শুক্রবার বেঙ্গালুরু নিয়ে গিয়েছে পুলিশ।
সিটের সূত্রে জানা গিয়েছে, গোবর্ধন নামে এক ব্যক্তির সোনার দোকানে তল্লাশি চালানো হয়েছে। ওই ব্যক্তিই শবরীমালা মন্দিরের শ্রীকোভিল দরজার সোনা দিয়েছিলেন। সরকারি ভাবে তা পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন অভিযুক্ত পট্টি। তদন্তকারীর জানিয়েছেন, ওই দোকান থেকে বেশ কিছু সোনার বাট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেগুলি দ্বারপালক বিগ্রহের থালা থেকে চুরি করা সোনা কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্য দিকে, বেঙ্গালুরুতে পট্টির বাড়ির পাশাপাশি আগে যে মন্দিরে তিনি পুরোহিত ছিলেন। সেখানেও অভিযান চালিয়েছে সিট।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৯ সালে। শবরীমালার গর্ভগৃহ ‘শ্রীকোভিল’-এর দেওয়াল এবং দ্বারপালকের মূর্তি থেকে সোনা উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, ২০১৯ সালে বিগ্রহের ওজন ছিল ৪২ কেজি ৮০০ গ্রাম। কিন্তু পরে দেখা যায়, বিগ্রহের ওজন হয়ে গিয়েছে ৩৮ কেজি ২৫৮ গ্রাম! কী ভাবে বিগ্রহের ওজন হ্রাস পেল, তা জানতে চেয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। সেই ঘটনার তদন্তেই উঠে আসে উন্নিকৃষ্ণনের নাম।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, বিগ্রহের মেরামতির জন্য ২০১৯ সালের জুলাই মাসে একবার মন্দিরের দ্বারপালক মূর্তি এবং দরজার সোনার আবরণ খোলা হয়েছিল। সে সময় সোনার ওজন ছিল ৪২.৮ কেজি। পরদিন ওই সোনা চেন্নাইয়ের একটি সংস্থায় পাঠানোর জন্য উন্নিকৃষ্ণনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু সোনা চেন্নাইয়ে পৌঁছোয় ৩৯ দিন পর। সে সময় ওজন করতে গিয়ে দেখা যায় সোনার ওজন হয়ে গিয়েছে ৩৮.২৫ কেজি। অর্থাৎ, ৪.৫৪ কেজি সোনা উধাও! তদন্ত জানা যায়, মন্দিরের হিসাবরক্ষকেরা রেকর্ডে সোনার প্রলেপ দেওয়া মূর্তিগুলিকে ‘তামার তৈরি’ বলে লিখেছিলেন। ফেরত দেওয়ার সময় মূর্তিগুলি ঠিক ভাবে ওজনও করে দেখা হয়নি। যার ফলে বছরের পর বছর ধরে অলক্ষিতই রয়ে যায় সোনা উধাওয়ের বিষয়টি।