ছেলে তো গেলই, মেয়েটা ফিরবে তো!

সাইমা কী দোষ করেছিল সে দিন? প্রশাসনের দাবি, জঙ্গিদের সঙ্গে তখন গুলির লড়াই চলছিল বাহিনীর। সাইমা হঠাৎ তার মাঝে পড়ে যায়।

Advertisement

সাবির ইবন ইউসুফ

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩১
Share:

মাথায় গুলি লেগেছে ১৮ বছরের মেয়েটার। সোপিয়ানের সাইমা ওয়ানি। তাঁকে বাঁচাতে ডাক্তাররা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ দিকে বাড়ির লোকেরা দু’ভাগ! কয়েক জন ছ’দিন ধরে ঠায় বসে রয়েছেন হাসপাতালে। যদি কোনও ভাবে মেয়েটাকে ফিরিয়ে আনা যায়। আর বাকিরা পড়ে বাড়িতেই। পুত্রশোকে কাতর। তিন মাস আগে বাড়ি থেকে পালিয়ে জঙ্গি দলে নাম লিখিয়েছিল সামির আহমেদ। খুব সম্প্রতি তাকে নিকেশ করেছে সেনা।

Advertisement

কিন্তু সাইমা কী দোষ করেছিল সে দিন? প্রশাসনের দাবি, জঙ্গিদের সঙ্গে তখন গুলির লড়াই চলছিল বাহিনীর। সাইমা হঠাৎ তার মাঝে পড়ে যায়। বোরখা পরে কয়েক জন সেই অভিযানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ প্রশাসনের। স্থানীয়রা যদিও অন্য তথ্য দিচ্ছেন। বলছেন অন্য ঘটনার কথাও। সাইমাদের কাকা মহম্মদ আয়ুব ওয়ানির দাবি, ‘‘পাড়ার ছেলেরা সে দিন মাঠে ক্রিকেট খেলছিল। এক দল সেনা হঠাৎ এসে গুলি চালাতে শুরু করে। আর তাতে শাকির আহমেদ নামে একটি ছেলে মারা গিয়েছে শুনেই আমাদের মেয়ে-বউরা পর্যন্ত রাস্তায় নামে। সাইমার বন্ধু সুমাইয়াও সে দিন গুলি খেয়েছে।’’

তার পর? স্থানীয়দের অভিযোগ, আহতদের সে দিন হাসপাতালে পর্যন্ত নিয়ে যেতে দেয়নি বাহিনী। অন্তত ১০ জায়গায় তাঁদের আটকানো হয়েছিল। তিন-চারটি হাসপাতাল হয়ে সাইমা এখন শের-ই কাশ্মীর ইনস্টিটউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এ ভর্তি। সুমাইয়া অবশ্য বিপন্মুক্ত।

Advertisement

দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় বেশ ভাল ফল করেছিলেন সাইমা। এই বছরেই কলেজে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছে ছিল তাঁর। কিন্তু এখন মেয়েটা শুধু বেঁচে ফিরুক, চাইছে ওয়ানি পরিবার। তাঁদের কথায়, ‘‘সামির বাড়ি ছাড়ার পরে প্রথমে আমরা ডায়েরি করেছিলাম পুলিশে। ও যে জঙ্গি দলে ভিড়েছে, সেটা অনেক পরে জানতে পারি। কষ্টও পেয়েছি। কিন্তু মেয়েটাকে নিয়ে আমাদের কোনও ভাবনাই ছিল না। ছেলে তো গেলই, এ বার মেয়েটা ফিরলে হয়!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন