নরেশ অগ্রবাল।
উত্তরপ্রদেশে রাজ্যসভার ভোটে সপা-বসপা জোটের অঙ্ক ঘেঁটে দিতেই নরেশ অগ্রবালকে আজ তড়িঘড়ি দলে নেয় বিজেপি। কিন্তু যোগদানের মঞ্চেই জয়া বচ্চনকে সিনেমায় ‘নাচা-গানা করা মহিলা’ বলে বিজেপিকে বিপদে ফেলে দিলেন নরেশ। সেই ক্ষত মেরামতে আসরে নামতে হল সুষমা স্বরাজের মতো শীর্ষ বিজেপি নেত্রীকে। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, দল এ ধরনের মন্তব্য একেবারেই সমর্থন করে না।
উত্তরপ্রদেশে চলতি রাজ্যসভা নির্বাচনে নরেশের বদলে জয়া বচ্চনকে টিকিট দিয়েছেন অখিলেশ-মুলায়ম। সেই ক্ষোভ আজ যোগদানের মঞ্চে উগরে দিয়ে নরেশ বলেন, ‘‘সিনেমায় নাচা-গানা করা এক জনের সঙ্গে আমার তুলনাটা বেশ কষ্টের!’’ নাম না করলেও নরেশের নিশানা যে অভিনেত্রী জয়া বচ্চন, তা বুঝেই তড়িঘড়ি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামেন সম্বিত পাত্র, সুষমারা। কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার কটাক্ষ, ‘‘অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিজেপিতে যোগ দিয়ে সেই দলের সংস্কৃতি বুঝেই মন্তব্য করেছেন নরেশ।’’
প্রশ্ন হল— যে নরেশকে রাজ্যসভার টিকিটও দেয়নি সপা, কেন তড়িঘড়ি তাঁকে দলে নিল বিজেপি? কারণ নরেশের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তাঁর ছেলে নিতিনও। সে হরদওইয়ের সপা বিধায়ক। এ দিকে উত্তরপ্রদেশে দশম আসনে প্রার্থী দিয়েছে বিএসপি। ওই আসনটি জিততে হলে সপা-কংগ্রেস-আরএলডি ও নিষাদ পার্টির সমর্থন লাগবে দলিত নেত্রীর। সব ক’টি দল হাত মেলালে প্রয়োজনের চেয়ে একটি ভোট বেশি থাকে। নিতিন বিজেপিকে ভোট দিলে দু’পক্ষের ভোট হবে সমান। সে ক্ষেত্রে এক জন বিধায়ক ভাঙাতে পারলেই বিজেপি আসন জেতার পাশাপাশি, ওই রাজ্যে মহাজোটের রসায়ন শুরুতেই ভেস্তে দিতে পারবে।
সব দল ঘুরে নরেশের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে অবশ্য আজ প্রশ্ন করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। ঘোষিত বিজেপি-বিরোধী নরেশ এক সময়ে কুলভূষণ যাদবকে সন্ত্রাসবাদী বলা ছাড়াও, প্রশ্ন তুলেছিলেন ভারতীয় সেনার যোগ্যতা নিয়ে। হিন্দু দেবদেবীদের তুলনা করেন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদের সঙ্গেও। নিয়মিত নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনাতেও সরব ছিলেন তিনি। আর বিজেপির কাছে নরেশ ছিলেন পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের এজেন্ট। আজ তাঁর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সুরজেওয়ালার মন্তব্য, ‘‘নারায়ণ রাণে থেকে নরেশ অগ্রবাল— তবে কি বিজেপিতে ডুব দিলেই সব পাপ ধুয়ে যায়?’’