বিতর্কে শিবসেনা

এ বার সংখ্যালঘুদের ভোটাধিকার নিয়ে তোপ

ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি হয় মুসলিম সম্প্রদায়কে নিয়ে। সমাধানের রাস্তা— তাঁদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া, দলের মুখপত্র সামনা-র সম্পাদকীয়তে এমনটাই লিখেছেন শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত। রাজ্যসভার সদস্যের এ হেন বিতর্কিত মন্তব্যে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। এ রকম কথা বলে রাউতও মেরুকরণের রাজনীতিই করছেন বলে অভিযোগ বিরোধীদের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৪৪
Share:

সঞ্জয় রাউত

ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি হয় মুসলিম সম্প্রদায়কে নিয়ে। সমাধানের রাস্তা— তাঁদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া, দলের মুখপত্র সামনা-র সম্পাদকীয়তে এমনটাই লিখেছেন শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত। রাজ্যসভার সদস্যের এ হেন বিতর্কিত মন্তব্যে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। এ রকম কথা বলে রাউতও মেরুকরণের রাজনীতিই করছেন বলে অভিযোগ বিরোধীদের।

Advertisement

দলীয় মুখপত্রে রাউত লিখেছেন, মুসলিমদের প্রতি এক কালে বঞ্চনা করা হয়েছিল দাবি করে এখন যেটা করা হচ্ছে তা নিছকই ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি। রাজনীতির খেলা এ ভাবে চলতে থাকলে ওই সম্প্রদায়ের মানুষদের কিন্তু কোনও উন্নতি হবে না। এই প্রসঙ্গেই রাউত টেনে এনেছেন বালসাহেব ঠাকরের কথাও। তাঁর যুক্তি, যত দিন মুসলিমদের উন্নতির নামে রাজনীতি চলবে তত দিন তাঁদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার, তা আঁচ করতে পেরেই প্রায় ১৫ বছর আগে তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার কথা বলে গিয়েছিলেন বালসাহেব। আর তিনি ঠিকই বলেছিলেন— মন্তব্য সঞ্জয় রাউতের।

বছর তিপান্নের এই নেতার আরও দাবি, যাঁরা মুসলিমদের নিয়ে রাজনীতি করছেন, ভোটের অধিকার এক বার চলে গেলে তাঁদের আসল মুখটা সামনে চলে আসবে।

Advertisement

কেন্দ্রে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর ধর্মান্তরণ, সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের একাধিক ঘটনা সামনে আসায় খানিক কোণঠাসা প্রশাসন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে দাঁড়িয়ে আশ্বস্ত করতে হয়েছে, ধর্মের ভিত্তিতে আলাদা আচরণ কারও সঙ্গে করা হবে না। মহারাষ্ট্রে বিস্তর টালবাহানার পর শিবসেনারই হাত ধরেছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসবাণীর পরও শরিক দলের হিন্দু নেতাদের বিতর্কিত মন্তব্যে যে ছেদ পড়েনি, রাউতের লেখা আজ আরও এক বার তা প্রমাণ করে দিল।

শিবসেনা নেতার এই মন্তব্যের কথা জানাজানি হলে সমালোচনায় সরব হয়েছে সব রাজনৈতির দল। সমাজবাদী পার্টি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দেশের সংবিধানে যাঁদের আস্থা নেই, তাঁদের বিরুদ্ধে এখনই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত কেন্দ্রের। কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি জানিয়েছেন, ‘‘আমরা যে গণতান্ত্রিক দেশে থাকি, তালিবান রাজত্বে নয়, সে কথা ওঁরা ভুলে গিয়েছেন।’’

শুধু ভোটাধিকার তুলে নেওয়ার কথাই নয়, মুসলিম নেতা আসাদুদ্দিন ও আকবরুদ্দিন ওয়াইসির নামেও বিষোদগার করেছেন সঞ্জয় রাউত। তাঁদের ‘বিষধর সাপে’র সঙ্গে তুলনা করে ওই শিবসেনা নেতা লিখেছেন, ওঁরা মুসলিমদের শোষণ করছেন। এই ভাবে নেতারা আরও ফুলে ফেঁপে উঠবেন আর পিছিয়ে পড়তে থাকবে গোটা সম্প্রদায়— আক্ষেপ রাউতের।

বিতর্কিত মন্তব্য করায় ওই নেতার নামে ইতিমধ্যেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনে। দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়ে সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করেছে শিবসেনা। তাদের দলের নেতা নিলম গোড়ের কথায়, মুসলিম তোষণ যে ভাবে চলছে তাতে উন্নতির বদলে ওই সম্প্রদায়ের মানুষ আরও পিছিয়ে পড়ছেন। সঞ্জয় রাউত শুধু সে কথাই বলার চেষ্টা করেছেন বলে দাবি নিলমের।

শিবসেনার সুর নরমেও বিতর্ক কিন্তু থামছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন