রাজ্যের ভাগ্য ঝুলেই, আজ থেকে আন্দোলনে শশী

ঝুলে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রায়। সেই সঙ্গে ঝুলে আছে তামিলনাড়ুর ভাগ্যও। সেই সুযোগে চলছে দল বদলের খেলা। বহু চেষ্টা করেও পনীরসেলভমের পাল্লা ভারি হওয়া রুখতে পারছে না শশিকলা নটরাজনের শিবির।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩৭
Share:

বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করতে এলেন শশিকলা। শনিবার মহাবলীপুরমের কাছে গোল্ডেন বে রিসর্টে। — পিটিআই

ঝুলে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রায়। সেই সঙ্গে ঝুলে আছে তামিলনাড়ুর ভাগ্যও। সেই সুযোগে চলছে দল বদলের খেলা। বহু চেষ্টা করেও পনীরসেলভমের পাল্লা ভারি হওয়া রুখতে পারছে না শশিকলা নটরাজনের শিবির।

Advertisement

শশিকলার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায় এক সপ্তাহের মধ্যে ঘোষণা হবে বলে জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। সেই রায়ের জন্য যে রাজ্যপাল বিদ্যাসাগর রাও অন্তত আগামী সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন তা কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু শীর্ষ আদালতে সোমবারের কার্যতালিকায় এখনও নেই এই মামলা। ফলে কবে এই রায় ঘোষণা হবে তা আরও অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। রাজ্যপালের উপরে চাপ আরও বাড়াতে চাইছে শশিকলা নটরাজনের শিবির। রাজ্যপালকে আজ ফের একটি চিঠি পাঠিয়ে শশিকলা জানিয়েছেন, পনীরসেলভম মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেওয়ার পরে সাত দিন কেটে গিয়েছে। এখনই তাঁকে শপথ নিতে দেওয়া উচিত। চিঠিতে শশিকলা লিখেছেন, ‘‘আমরা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারি। তার পরে সকলে মিলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।’’ পরে তিনি জানিয়েছেন, সময় নিয়ে এডিএমকে-তে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা চলছে। আগামিকাল থেকে নতুন ধরনের প্রতিবাদ শুরু হবে। তবে সেই প্রতিবাদ কেমন হবে, তা তিনি জানাতে চাননি।

তামিলনাড়ুর রাজনীতিকদের মতে, এখনও দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়ক শশিকলার পাশেই রয়েছেন। মহাবলীপুরমের কাছে গোল্ডেন বে রিসর্টে তাঁদের মধ্যে প্রায় ১২০ জন রয়েছেন। কিন্তু দলের একের পর এক শীর্ষ নেতা পনীরসেলভমের শিবিরে ভিড়ছেন। এ দিন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীকে সমর্থন করেছেন রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী কে পান্ডিয়ারাজন ও পি বেঞ্জামিন, শীর্ষ নেতা সি পন্নিয়ান এবং সাংসদ পি আর সুন্দরম, কে অশোক কুমার, আর ভানারোজা ও সত্যভামা।

Advertisement

দলীয় সূত্রের মতে, আদতে ব্যবসায়ী পান্ডিয়ারাজন দল ভাঙানো ও গোপনে সমঝোতা করানোয় বিশেষ পারদর্শী। অন্তত ১৫০ জন বিধায়কের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে বলে দাবিও করেছেন ওই মন্ত্রী। ফলে, বিধায়কদের বড় অংশ পরে ভোল বদলে পনীরসেলভমের শিবিরে যোগ দিতে পারেন বলে আশঙ্কা শশিকলার। তাই রাজ্যপালের উপরে চাপ বাড়াচ্ছেন তিনি।

পনীরসেলভমকে এ দিন পাল্টা চাপ দিতে চেয়েছে শশিকলা শিবির। গোল্ডেন বে রিসর্টে বিধায়কদের অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী। বিধায়কদের ওই রিসর্টে আটকে রাখা হয়েছে কি না তা জানতে চেয়েছিল মাদ্রাজ হাইকোর্টও। এ দিন ভোরে পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের কয়েকটি দল গিয়ে বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলে। তাঁদের কাছ থেকে লিখিত জবানবন্দিও নেয় পুলিশ। পরে দুই বিধায়ক জানান, তাঁদের কেউ অপহরণ করে আনেনি। পনীরসেলভম শিবির তাঁদের খুনের হুমকি দিচ্ছে। তাই ভয়ে তাঁরা চেন্নাইয়ে বিধায়ক হস্টেল ছেড়ে গোল্ডেন বে-তে আশ্রয় নিয়েছেন।

পরে গোল্ডেন বে রিসর্টে এসে বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করেন শশিকলা। সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টের রায় বিরুদ্ধে গেলে ঘনিষ্ঠ কোনও ব্যক্তিকে মুখ্যমন্ত্রী করার চেষ্টা করতে পারেন শশিকলা। এর মধ্যে‌ রাজ্যপাল বিদ্যাসাগর রাওয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। এক কালে জয়ললিতা-শশিকলার দুর্নীতি নিয়ে মামলা করে তাঁদের বিপাকে ফেলেছিলেন স্বামী। কিন্তু সম্প্রতি শশিকলাকে দ্রুত শপথ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার পক্ষে সরব হয়েছেন তিনি। তবে রাজ্যপালের সঙ্গে নেহাতই ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ করেছেন বলে দাবি স্বামীর।

বিক্ষোভ, প্রতিবাদ চলবেই। কিন্তু সংবিধান মেনে চললে যে দুই শিবিরেরই আপাতত অপেক্ষা করা ছাড়া পথ নেই তা মেনে নিচ্ছেন সকলেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement