শশিকলা
ক্ষমতা ধরে রাখতে গোল্ডেন বে রিসর্টে ‘বন্দি’ বিধায়কদের সামনে শুধু চোখের জলই ফেলেননি শশিকলা, স্মৃতি উস্কে দিয়ে তাঁদের মনে জায়গা করে নিতে আম্মার বলা শেষ কথাটাও তাঁদের বলেন তিনি। শশিকলা জানান, শেষ দিন পর্যন্ত আম্মা তাঁর দল আঁকড়ে রেখেছিলেন। এমনকী হাসপাতালে থাকাকালীন নাকি আম্মা তাঁকে বলেছিলেন, ‘‘কেউ দলটাকে নষ্ট করতে পারবেন না।’’ যা ছিল তাঁকে বলা জয়ললিতার শেষ কথা। এখানেই থেমে থাকেননি শশিকলা। অতি কৌশলে জানিয়ে দেন, ব্যক্তিগত ফায়দা তুলতে নয়, বরং আম্মার নির্দেশেই তিনি মুখ্যমন্ত্রী হতে চাইছেন। আম্মার সেই ইচ্ছাপূরণে যে কতটা মরিয়া তিনি তা ঠারেঠোরে বোঝান ওই বিধায়কদের। তাঁর সমর্থকদের ভরসা জোগাতে পনীরের প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি বলেন, ‘‘ওরকম হাজার পনীর দেখা আছে। আমি কাউকে ভয় পাই না।’’ এমনকী প্রয়োজনে দলের স্বার্থে ফের জেলে যেতেও রাজি আছেন তিনি।
বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের সামনে শশিকলা।
পনীর-শিবিরের কাছে অবশ্য সবটাই কুমিরের কান্না আর মিথ্যা আস্ফালন। হাওয়া উল্টো দিকে বইতে শুরু করেছে। প্রভাবশালী মন্ত্রী, বিধায়ক, দুই অভিনেতা এবং আম-জনতার দাপটে ক্রমশ ভারী হচ্ছে পনীরের পাল্লা। তার উপর ভাগ্যের অনেকটাই ঝুলে রয়েছে আদালতের রায়ে। যা তাঁর বিপক্ষে গেলে দলের রাশ নিজের হাতে ধরার আর কোনও সম্ভাবনাই থাকবে না তাঁর। এ সব কিছু অনুমান করেই তড়িঘড়ি মুখ্যমন্ত্রীত্বের শপথ নিতে উঠেপড়ে লেগেছেন শশিকলা। রাজ্যপাল বিদ্যাসাগর রাওকে চিঠি দিয়ে, তামিলনাড়ুর স্বার্থের কথা বলে দ্রুত শপথ অনুষ্ঠান সেরে নিতে চাইছেন। তাতে কাজ না হওয়ায় এ বার তামিল ভাবাবেগকেই বেশি করে কাজে লাগাতে চাইছেন তিনি। আর কোনও বিধায়ক যাতে পনীর-শিবিরে যোগ না দেয় তার পাকা ব্যবস্থা করতেই ওই দিন গোল্ডেন বে রিসর্টে ছুটে যান তিনি। বিধায়কদের সামনেই আম্মার কথা তুলে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। চোখের জল মুছতে মুছতে শশিকলা বলেন, ‘‘আমি আমার জীবন দিয়ে এই দলটাকে রক্ষা করব। খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা। তবুও কেউ আমাকে নাড়াতে পারবে না। আম্মা এবং আপনারা আমার উপর ভরসা করে এই দায়িত্ব দিয়েছেন। আমার সব সময় সেই দায়িত্বের কথা মনে থাকে।’’
আরও পড়ুন: সমর্থন কমছে শশিকলার, তামিলমাড়ুতে পাল্লা ক্রমশই ভারী হচ্ছে পনীরের
ছবি: পিটিআই।