বেআইনি লেনদেনের অভিযোগে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার (এসবিআই) হংকং শাখাকে ১০ লক্ষ ডলার জরিমানা করল সে দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক হংকং মনিটারি অথরিটি (এইচকেএমএ)।
হংকংয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সমতুল ব্যাঙ্কটির দাবি, গ্রাহকদের সম্পর্কে যথেষ্ট খোঁজখবর না নিয়েই তাঁদের আর্থিক লেনদেন করতে দিয়েছে এসবিআই। খতিয়ে দেখা হয়নি সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের সঙ্গে রাজনীতির যোগ আছে কি না। সব মিলিয়ে স্টেট
ব্যাঙ্ক হংকংয়ের কালো টাকা ও সন্ত্রাসবাদী কাজে টাকার জোগান আটকানো সংক্রান্ত (অ্যান্টি মানি লন্ডারিং অ্যান্ড কাউন্টার টেরর ফিনান্সিং) আইন ভেঙেছে বলে অভিযোগ এনেছে তারা।
তবে এ বিষয়ে নিজেদের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে মুখ খোলেননি স্টেট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ অস্বীকার না-করলেও, বিদেশে স্টেট ব্যাঙ্কের ব্যবসা দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সিদ্ধার্থ সেনগুপ্ত আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘এই অভিযোগগুলি পুরনো। ২০১২ ও ২০১৩ সালের। তারপর থেকে কোনও রকম সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট খোলা অথবা লেনদেন যাতে সেখানে কোনও ভাবে না-ঘটে, তা নিশ্চিত করতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছি। এইচকেএমএ তা স্বীকারও করেছে।’’
উল্লেখ্য, শুক্রবার বিবৃতিতে এইচকেএমএ-র অভিযোগ, ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের নভেম্বরের মধ্যে যে সমস্ত গ্রাহকের সঙ্গে এসবিআইয়ের হংকং শাখা আর্থিক লেনদেনে করেছে, তাদের ব্যাপারে যথেষ্ট খোঁজ খবর নেয়নি তারা। এবং বেশ কিছু ক্ষেত্রে লেনদেন আইনসম্মত হয়নি।
শুধু জরিমানা নয়। আগামী দিনে যাতে এ ধরনের অনিয়ম ফের না-ঘটে, এসবিআই-কে তা নিশ্চিত করতে বলেছে এইচকেএমএ। তাদের নির্দেশ, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে স্টেট ব্যাঙ্ক যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তা কতটা কার্যকর হবে, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখুক ভারতের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক। এ জন্য একটি নিরপেক্ষ পরামর্শদাতা সংস্থাকে দিয়ে রিপোর্ট তৈরি করিয়ে স্টেট ব্যাঙ্ককে তা জমাও দিতে বলেছে এইচকেএমএ।
এ নিয়ে সিদ্ধার্থবাবু জানান, ‘‘ইতিমধ্যেই এইচকেএমএ-র নির্দেশ মেনে রিপোর্ট তৈরি করেছি। তাতে দেখা গিয়েছে, ২০১৩ সালের পর থেকে আমাদের হংকং শাখায় কোনও বেআইনি লেনদেনের ঘটনা ঘটেনি।’’ তবে কোন সংস্থাকে দিয়ে তাঁরা
রিপোর্ট তৈরি করিয়েছেন, তা অবশ্য জানাননি সিদ্ধার্থবাবু।
হংকংয়ে কালো টাকা আটকাতে এই আইন চালু হয় ২০১২ সালে। তারপর থেকে এই প্রথম ওই আইনের আওতায় এ ধরনের কোনও পদক্ষেপ করল সে দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক।
স্টেট ব্যাঙ্কের দাবি, ‘‘আমরা হংকংয়ে ৩৫ বছর ব্যবসা করছি। গ্রাহকদের সঙ্গে লেনদেনের সময় সে দেশের আইন যাতে কোনও ভাবে লঙ্ঘিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বেআইনি লেনদেন রুখতে এইচকেএমএ-র পদক্ষেপ আমরা সম্পূর্ণ ভাবে সমর্থন করি। এ ধরনের ঘটনা যাতে ফের না-ঘটে, তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপই করা হয়েছে।’’