কী করে হয়? সেই প্রশ্নই মধ্যরাতে

কংগ্রেস-জেডি(এস) অবশ্য বৃহস্পতিবার সকালে ইয়েদুরাপ্পার শপথগ্রহণই ঠেকাতে চেয়েছিল। তাই শপথের আগেই মাঝরাতে শুনানির দাবি তুলে রাত দশটার পরে সুপ্রিম কোর্টে যান কংগ্রেসের আইনজীবীরা।  

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৮ ০৪:০০
Share:

ইয়েদুরাপ্পার শপথগ্রহণ আটকাল না সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু কোন যুক্তিতে রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে ইয়েদুরাপ্পা সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছিলেন, তা তলব করল।

Advertisement

ইয়েদুরাপ্পার শপথগ্রহণ আটকাতে বুধবার গভীর রাতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কংগ্রেস ও জেডি(এস)। অভিযোগ ছিল, কংগ্রেস-জেডি(এস)-এর পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। তাদের ১১৭ জন বিধায়ক। বিজেপির ১০৪ জন। তা-ও রাজ্যপাল বিজেপিকেই সরকার গড়তে ডেকেছেন। রাজ্যপালের নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করেনি সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ইয়েদুরাপ্পা শপথও নিয়েছেন। কিন্তু বিচারপতি এ কে সিক্রির বেঞ্চ জানিয়েছে, রাজ্যপালের সিদ্ধান্তের আইনি বিচার হতেই পারে।

রাজ্যপালকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমনও পাঠানো যায় না। তাই কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালকে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্যপাল বজুভাই বালাকে যে দু’টি চিঠি লিখে ইয়েদুরাপ্পা সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছিলেন, তা শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে হাজির করতে হবে। সেই চিঠির বক্তব্যের উপরেই নির্ভর করবে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ইয়েদুরাপ্পার ভবিতব্য। রাজ্যপাল কেন তাঁকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ১৫ দিন সময় দিলেন, তারও বিচার হবে।

Advertisement

কংগ্রেস-জেডি(এস) অবশ্য বৃহস্পতিবার সকালে ইয়েদুরাপ্পার শপথগ্রহণই ঠেকাতে চেয়েছিল। তাই শপথের আগেই মাঝরাতে শুনানির দাবি তুলে রাত দশটার পরে সুপ্রিম কোর্টে যান কংগ্রেসের আইনজীবীরা।

প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র সেই দাবি মেনে রাত একটা নাগাদ বিচারপতি এ কে সিক্রির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করেন। সুপ্রিম কোর্টের তালা খুলে রাত পৌনে দু’টো থেকে ভোর সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত শুনানি চলে। কংগ্রেসের আইনজীবী অভিষেক মনুসিঙ্ঘভির বিরুদ্ধে দাঁড়ান কেন্দ্রের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল। সঙ্গে দুই অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল। বিজেপির দুই বিধায়কের হয়ে প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি।

এই চক্রব্যুহে দাঁড়িয়ে মনুসিঙ্ঘভি প্রশ্ন তোলেন, কর্নাটক বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ১১৩ জন বিধায়ক দরকার। বিজেপির ১০৪ জন আছেন। তা হলে রাজ্যপাল বিজেপিকে ডাকেন কী করে?

বিচারপতি সিক্রিও বলেন, ‘কংগ্রেস-জেডি(এস)-এর পক্ষে ১১৭ জন। তা হলে বিজেপি কীভাবে ১১১ জনের সমর্থন রয়েছে বলে দাবি করতে পারে? কীভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করবে বলে দাবি করে?’

কেন রাজ্যপাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য ইয়েদুরাপ্পাকে ১৫ দিন সময় দিলেন, তাও দেখতে চান বিচারপতিরা। মনুসিঙ্ঘভি বলেন, ইয়েদুরাপ্পা নিজে ৭ দিন সময় চেয়েছেন। সময়সীমা কমিয়ে ৪৮ ঘণ্টা করা হোক।

বিজেপির কৌশল ছিল, সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের সময় কমলে কমুক। এমনকী পরে কোনও কারণে ৩৫৬ ধারা জারি হলে হোক। কিন্তু এ যাত্রায় শপথগ্রহণটা হয়ে যাক। তাই কেন্দ্র ও বিজেপির আইনজীবীরা যুক্তি দেন, রাজ্যপালের কাজে স্থগিতাদেশ জারি করা যায় না। শপথ হোক। পরে দরকারে উলট-পুরাণ হবে।

বুধবার রাতের শুনানিতে ইয়েদুরাপ্পার কোনও আইনজীবী ছিলেন না। কংগ্রেসের অভিযোগ নিয়ে তাঁর পাশাপাশি কেন্দ্র ও রাজ্যের বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিস দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যপাল ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, এই অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবারই মামলা করেছেন প্রবীণ আইনজীবী রাম জেঠমলানী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন