মুজফ্ফরপুরের আবাসিক হোমে শিশুদের যৌন হেনস্থার তদন্তে গাফিলতিতে ক্রুদ্ধ সুপ্রিম কোর্ট আদালত অবমাননায় অভিযুক্ত করল সিবিআইকে। সিবিআইয়ের সদ্য-প্রাক্তন অন্তর্বর্তী প্রধান এম নাগেশ্বর রাওকে মঙ্গলবার জবাবদিহির জন্য তলব করলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। মামলাও স্থানান্তর করা হল দিল্লির সাকেত পকসো নিম্ন আদালতে।
অলোক বর্মা ও রাকেশ আস্থানাকে নিয়ে জটিলতার সময়ে অন্তর্বর্তী প্রধানের দায়িত্বে এসে এক ঝাঁক অফিসারকে বদলি করে দেন নাগেশ্বর রাও। আবাসিক হোমে যৌন কেলেঙ্কারির তদন্তকারী অফিসার জয়েন্ট ডিরেক্টর এ কে শর্মাকেও সিআরপি-তে বদলি করা হয়। তখনই এ নিয়ে হইচই হয়। কারণ শর্মাকে বদলি না করার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এ দিন জানতে চান, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিল তদন্তকারী আধিকারিককে সরানো যাবে না। তা সত্ত্বেও কী ভাবে তাঁকে সরানো হল? আদালতের নির্দেশ কি বদলির দায়িত্বে থাকা কর্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়নি?’’
বেলা দু’টোর মধ্যে সিবিআইকে এই প্রশ্নের লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। সিবিআইয়ের আইনজীবীকে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আমাদের নির্দেশ নিয়ে আপনারা খেলা করছেন। ভগবান আপনাদের রক্ষা করুন!’’ পরে আদালত বলে, মনে হচ্ছে মন্ত্রিসভার অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিটির কাছে শর্মার বদলিতে নিষেধাজ্ঞা রদের নির্দেশ পৌঁছয়নি। সিবিআইয়ের দুই বড়কর্তাকে ছুটিতে পাঠানোর ফলে হট্টগোল তৈরি হওয়াতেই এটা হয়েছে। এর পরেই তৎকালীন অন্তর্বর্তী প্রধানকে জবাবদিহির জন্য মঙ্গলবার আদালতে তলব করা হয়।
সিবিআইকে চাপে রাখার পাশাপাশি ডিভিশন বেঞ্চ আবাসিক হোমে যৌন হেনস্থার মামলাটি দিল্লির সাকেত আদালতে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। এক সপ্তাহের মধ্যে বিহারের সিবিআই আদালত থেকে সমস্ত নথিপত্র দিল্লির সাকেত পকসো নিম্ন আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাকেত আদালতকে আগামী ছ’মাসের মধ্যে মামলার শুনানি শেষ করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এ ছাড়া আবাসিক হোমগুলি বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকেও তিরস্কার করেছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘শিশুদের সঙ্গে এমন ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। আপনাদের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছি না।’’
সুপ্রিম কোর্টে বিহার সরকারকে তিরস্কারের প্রেক্ষিতে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেন, ‘‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে খোঁজ নিচ্ছি। কোনও ভাবেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের অবহেলা করা হবে না।’’ উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পালন করা হবে।’’