এখানেই মিলেছে ওই রহস্যময় মাটির পাত্র।
খ্রিস্ট পূর্ব ৬০০ সালে কি মানুষের হাতে চলে এসেছিল আণুবীক্ষণিক প্রযুক্তি? বিস্ময়ে চোখ কপালে ওঠার মতো এই কথাই বলছেন ভেলোর ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির এক দল গবেষক। সম্প্রতি তামিলনাড়ুর কীলাড়ি এলাকায় প্রত্নতাত্ত্বিক খনন চলাকালীন মিলেছে এক ধরনের মাটির পাত্র, যার গায়ে দেওয়া রয়েছে ‘কালো প্রলেপ’। গবেষকদের মতে, সেই ‘কালো প্রলেপ’ আসলে কার্বন ন্যানোটিউবের।
সম্প্রতি ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ নামে একটি অনলাইন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণাপত্র। তাতে দাবি করা হয়েছে, কীলাড়িতে পাওয়া প্রাচীন মাটির পাত্রের গায়ে রয়েছে কার্বন ন্যানোটিউবের প্রলেপ। কার্বনের প্রতিরূপকে ব্যবহার করার ওই প্রযুক্তি মানুষের হাতে এসেছে ১৯৯৩ সালে। মজবুত কিন্তু হালকা ওই জিনিস দেখতে খাঁচার মতো। সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতি নির্মাণ, চিকিৎসাবিজ্ঞান, টেক্সটাইল শিল্প-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তির ব্যবহার হয়ে থাকে।
আজ থেকে আড়াই হাজারেরও বেশি বছর আগে, ব্যাবিলন, আসিরীয় বা বাইজ্যানটিয়াম সভ্যতার সময়ে ভারতের বুকে বসে কী ভাবে ওই প্রযুক্তি আয়ত্ত করল মানুষ? এই প্রশ্নই এখন ভাবিয়ে তুলেছে প্রত্নতাত্ত্বিকদের। ভেলোর ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানীদের মত, কীলাড়িতে পাওয়া ওই জিনিসটি আসলে ‘মানুষের তৈরি প্রাচীনতম আণুবীক্ষণিক বস্তু ’। গবেষণাপত্রটির অন্যতম লেখক বিজয়ানন্দ চন্দ্রশেখরন বলেন, ‘‘আমাদের ধারণা ছিল, মানুষের তৈরি করা প্রাচীনতম ক্ষুদ্র জিনিস পাওয়া গিয়েছিল অষ্টম অথবা নবম শতাব্দীতেই।’’ কিন্তু কীলাড়ির ওই নিদর্শন সেই ধারণা ভেঙে দিয়েছে বলেই তাঁদের মত। চন্দ্রশেখরনের মত, মাটির পাত্রে কোনও গাছের রস বা নির্যাস দেওয়া হয়েছিল। তা থেকেই হয়তো তৈরি হয়েছে কার্বন ন্যানোটিউব।
আরও পড়ুন: মাছি তাড়াচ্ছে হল, বন্ধ হয়ে গেল মেনকা, প্রিয়া, প্রাচী, জয়ার মতো সিঙ্গল স্ক্রিন
আরও পড়ুন: দু’এক দিনেই মেঘ কেটে শীত-শীত আমেজ ফিরে আসবে হাওয়ায়
তিরুঅনন্তপুরমের আইআইএসইআর-এর বিজ্ঞানী এমএম শাইজুমনের মত, ‘‘ওই সময়ের মানুষজন হয়তো ইচ্ছাকৃত ভাবে ওই কার্বন ন্যানোটিউব তৈরি করেনি। উচ্চ তাপে কাকতালীয় ভাবে হয়তো তা তৈরি হয়ে গিয়েছিল।’’