নিখোঁজ বিএলও-কে (ইনেসেটে) খুঁজে বার করার কথা পুলিশকে বলল কমিশন। — ফাইল চিত্র।
ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজে চাপের জন্য নয়, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার বিএলও অমিতকুমার মণ্ডলের নিখোঁজ হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে অন্য কারণ। বিএলও-র অন্তর্ধানের নেপথ্যে ৫০ লক্ষ টাকা ঋণের গল্প! পুলিশকে উদ্ধৃত করে এমনই জানাল নির্বাচন কমিশন।
এসআইআরে জনশুনানির কাজ পশ্চিমবঙ্গে শুরু হবে শনিবার থেকে। তবে তার আগে অমিতের অন্তর্ধান নিয়ে রহস্য ঘনাচ্ছে। গত চার দিন ধরে খোঁজ নেই কাটোয়া বিধানসভার ২৩ নম্বর বুথের বিএলও অমিতের। তাঁর খোঁজে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে পরিবার। এই ঘটনায় পুলিশের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিল কমিশন।
পুলিশ কমিশনকে রিপোর্ট দিয়ে অমিতের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানায়। কমিশন সূত্রের খবর, পুলিশ জানিয়েছে, অমিত ব্যাঙ্ক থেকে ৫০ লক্ষ টাকার কাছাকাছি ঋণ নিয়েছিলেন। সেই ঋণের টাকা শেয়ার বাজারে খাটিয়েছিলেন। তবে তা করতে গিয়েই বিপদে পড়েন অমিত। শেয়ার বাজারে খাটিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েন তিনি। মাথায় ছিল ঋণের বোঝা। আর সেই ‘কারণেই’ বাড়ি ছেড়েছেন কাটোয়ার বিএলও! কমিশন পুলিশকে নিখোঁজ বিএলও-কে খুঁজে বার করার কথা বলেছে।
অমিত কাটোয়া-১ ব্লকের খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের বিকিহাট এলাকার বাসিন্দা। পেশায় শিক্ষক অমিত কেতুগ্রামের উদ্ধারণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত। পরিবার সূত্রে দাবি, গত মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ বাজার থেকে বাড়ি ফিরে বাইক রেখে অমিত জানান, বিএলও সংক্রান্ত একটি বৈঠক রয়েছে। কিন্তু বাড়ি থেকে বেরোনোর পর আর ফেরেননি তিনি। বিকেল গড়িয়ে গেলেও যোগাযোগ না হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে পরিবার। খোঁজ শুরু করতে বাড়ির মধ্যেই পাওয়া যায় তাঁর মোবাইল ফোন, বিএলও পরিচয়পত্র এবং এসআইআর সংক্রান্ত কাগজপত্র।
পরিবারের তরফে আত্মীয়স্বজন ও পরিচিত নানা জায়গায় খোঁজ করা হলেও সন্ধান মেলেনি। ফলে মঙ্গলবার রাতেই কাটোয়া থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে ‘মিসিং ডায়েরি’ করা হয়। পরিবারের সদস্যদের দাবি, বিএলওর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই মানসিক চাপে ছিলেন অমিত। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়। তৃণমূলের দাবি, কমিশনের অতিরিক্ত চাপে বিএলও-রা দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। তবে বিজেপির বক্তব্য, শাসকদলের চাপে ওই বিএলও অনেক নাম শুনানিতে ডাকতে বাধ্য হয়েছেন। সেই কারণেই এখন গা ঢাকা দিয়েছেন। ঘটনা নিয়ে শোরগোল শুরু হতেই পুলিশের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিল কমিশন। সেই রিপোর্টেই ঋণের বিষয়টি প্রকাশ্যে এল।