মনমোহন সিংহের উদ্দেশে তাঁর কটাক্ষ নিয়ে বিতর্ক ক্রমে বাড়ছে। তার মধ্যেই ফের আক্রমণাত্মক প্রধানমন্ত্রী। —ফাইল চিত্র।
লোকসভায় দাঁড়িয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে তিনি যে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যে সেই বিতর্ককে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দিচ্ছেন না, তা আবার বুঝিয়ে দিলেন। এ বার রাহুল গাঁধীকে তীব্র কটাক্ষ করলেন উত্তরপ্রদেশের বিজনৌরের জনসভা থেকে। রাহুল গাঁধীকে নিয়ে যে পরিমাণ হাসি-ঠাট্টা হয়, তা আর কোনও নেতাকে নিয়ে হয় না, মন্তব্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর।
বিজনৌরের জনসভায় ‘হাসি-ঠাট্টা’ প্রসঙ্গে কটাক্ষ করতে গিয়ে রাহুল গাঁধীর নাম কিন্তু মোদী উচ্চারণ করেননি। তিনি রাহুলকে ‘কংগ্রেসের নেতা’ বলে উল্লেখ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘গুগলে যদি খোঁজেন, তা হলে দেখবেন, কংগ্রেসের নেতাকে নিয়ে সেখানে যে পরিমান রসিকতা হয়, আর কোনও নেতাকে নিয়ে তা হয় না।’’ মোদী আরও বলেন, ‘‘যে ভাবে তিনি কথা বলেন, তাঁর রঙ্গ-তামাশাগুলো সব এমন যে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতারাও তাঁর থেকে ১০ ফুট দূরে থাকেন।’’ এর পরই রাহুল-অখিলেশকে এক সঙ্গে খোঁচা দেন মোদী। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘‘অখিলেশ আপনি এমন এক জন নেতাকে বুকে টেনে নিলেন, যাঁর নিজের দলই তাঁকে এড়িয়ে চলে? আপনার বুদ্ধিমত্তা নিয়ে এখন সত্যিই আমার সংশয় হচ্ছে।’’
রাহুল গাঁধীর সঙ্গে হাত মেলানোয় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবও প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষের সম্মুখীন হলেন। —ফাইল চিত্র।
সপা-কংগ্রেস জোটের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশে জোর টক্কর হচ্ছে বিজেপির। গোড়া থেকেই এই জোটকে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা আক্রমণ করছেন। কিন্তু শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী রাহুল গাঁধীকে যে ভাষায় কটাক্ষ করলেন, তা বেশ নজিরবিহীন।
আরও পড়ুন: মোদীকে ক্ষমা চাইতে হবে, ক্রমে সুর চড়াচ্ছে বিরোধীরা
কয়েক দিন আগে সংসদে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের জবাবি ভাষণ দিতে গিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে কটাক্ষ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগগুলিকে সে দিন টেনে এনেছিলেন মোদী। বলেছিলেন, ‘‘এতগুলো কেলেঙ্কারি, কিন্তু মনমোহন সিংহের গায়ে কোনও দাগ নেই। তাঁর থেকে আমাদের শেখা উচিত, কী ভাবে রেনকোট পরে স্নান করতে হয়।’’ দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা প্রবীণ নেতা সম্পর্কে মোদীর এই মন্তব্য শুনেই সংসদে তুমুল হইচই শুরু করে দেন বিরোধীরা। বিভিন্ন বিরোধী দল এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা শুরু করেছে। নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতা চাইতে হবে, এই দাবি তুলে বিরোধীরা ক্রমশ সুর চড়াচ্ছেন। তার মধ্যেই ফের রাহুল গাঁধীকেও নাম না করে তীক্ষ্ণ শ্লেষে বিদ্ধ করলেন মোদী। রাজনৈতিক সৌজন্যে ফেরার পথ তিনি ধরলেন না।