অবশেষে জয়। সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের পর মিছিল। ছবি: পিটিআই।
প্রথম থেকে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন ওঁরা পাঁচ জন। সমকামী-রূপান্তরকামী-উভকামীদের অধিকার রক্ষায় নির্ভীক ওই পাঁচ জনই এখন শিরোনামে।
ভরতনাট্যম শিল্পী এবং সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কারজয়ী নভতেজ সিংহ জোহর ২৫ বছরের সমকামী সঙ্গী সুনীল মেহরার সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে বলেছিলেন, ৩৭৭ ধারা জীবনের এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ভঙ্গ করে। নভতেজ এখন ৫৬। সুনীল ৬৩। লড়াইয়ের সময়ে তাঁদের মনে ছিল একটাই আশা, এমন একটা পথ তৈরি করে যাবেন, যাতে ভবিষ্যতে সমকামীরা নিগৃহীত না হন।
সুনীল মেহরা পেশায় সাংবাদিক। জনপ্রিয় পত্রিকার ভারতীয় সংস্করণের সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৯-২০০১ সালের মধ্যে দূরদর্শনের অনুষ্ঠানের জন্য ৮৬টি পর্বের দায়িত্বে ছিলেন। এখন নভতেজের সঙ্গে তৈরি করেছেন ‘স্টুডিয়ো অভ্যাস।’ যোগাসন, নাচ, এবং পথ-পশুদের যত্ন, দিল্লিতে নগরোন্নয়ন সংক্রান্ত কাজ করে তারা।
আরও পড়ুন: সমকাম অপরাধ নয়, ঐতিহাসিক রায় শীর্ষ আদালতের
লড়াইয়ে এগিয়ে এসেছিলেন রীতু ডালমিয়াও। বছর ৪৫-এর এই সেলিব্রিটি শেফ রেস্তরাঁ চেনেরও মালিক। পর্যটনে খুবই উৎসাহ। কলকাতার মারোয়াড়ি ব্যবসায়ী পরিবারে জন্ম। ২৩ বছর বয়সে বুঝেছিলেন, তিনি সমকামী। বাবা-মাকে বলেওছিলেন। তাঁরা পাশে ছিলেন। রীতু বলেন, যে দিন বাবা-মাকে খবরটা দিয়েছিলাম, তার পর দিন ওঁরা এক বাক্স আম পাঠিয়েছিলেন আমার সঙ্গীকে।
আমন নাথ (বাঁ দিক থেকে), রীতু ডালমিয়া এবং নভতেজ সিংহ জোহর। ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে।
চতুর্থ আবেদনকারী ৬১ বছরের আমন নাথ। নিমরানা চেন অব হোটেলস-এর মালিক। ইতিহাস এবং স্থাপত্যবিদ্যায় আগ্রহ। লিখেছেন বেশ কিছু বই। ফ্রান্সিস ওয়াজ়িয়ার্গের সঙ্গে ২৩ বছরের তাঁর সম্পর্কে ইতি পড়ে সঙ্গীর মৃত্যুতে। ২০১৪ সালে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক দু’জনকেই সারা জীবনের কাজের জন্য পুরস্কৃত করেছিল।
পঞ্চম জন আয়েষা কপূর। ৪৪-এর আয়েষা ম্যাসাচুসেটসের ক্লার্ক ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনার পরে ১৯৯৮ সালে ভারতে ফেরেন। ই-কমার্সে জনপ্রিয়তা পেলেও লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশের ভয়ে কাজ ছেড়ে দেন। এখন খাবার এবং পানীয় প্রস্তুতকারক শিল্পে যুক্ত। লিঙ্গ পরিচয় জানানোর পরেও সামাজিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীকে নিয়ে যেতে পারেননি। সেখান থেকেই তাঁর লড়াইয়ের শুরু।