১৯৭১ সালের ভারত-পাক যুদ্ধের পর প্রথম দেশ জুড়ে অসামরিক মহড়া হতে চলেছে বুধবার। —ফাইল চিত্র।
যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কী করা যাবে, আর কী করা যাবে না, সাধারণ নাগরিকদের সচেতনতার পাঠ দিতে দেশ জুড়ে অসামরিক মহড়া হতে চলেছে বুধবার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ২০১০ সালের একটি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী দেশের ২৭টি রাজ্য এবং আটটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মোট ২৫৯টি ‘অসামরিক প্রতিরক্ষা জেলা’ বা ‘সিভিল ডিফেন্স ডিস্ট্রিক্ট’ রয়েছে। তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ৩১টি জায়গাও। কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে মহড়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে। এই প্রেক্ষিতে মনে করা হচ্ছে এই জেলাগুলিতেও অসামরিক মহড়া চলবে। ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর এই প্রথম দেশ জুড়ে এমন অসামরিক মহড়া হতে চলেছে।
দেশের সব রাজ্যকে পাঠানো নির্দেশে মূলত বিমান হামলা হলে কী ধরনের পদক্ষেপ করতে হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যগুলিকে পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে, আগামী বুধবারের মহড়ায় খতিয়ে দেখে নিতে হবে যে, বিমান হামলার সময়ে সতর্কতামূলক সাইরেন ব্যবস্থা সক্রিয় রয়েছে কি না। পাশাপাশি রাতে হামলার ক্ষেত্রে যুদ্ধবিমানের খবর পাওয়া মাত্র যাতে হঠাৎ করে সমস্ত আলো নিভিয়ে দিয়ে ‘ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউট’ করে শত্রু বিমানবাহিনীকে বিভ্রান্ত করে দেওয়া যায়, তারও মহড়া সেরে রাখতে বলা হয়েছে।
এর পাশাপাশি, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার আবহে সম্ভাব্য হামলা থেকে যথাসম্ভব ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভবন, সেতু, তেলের ডিপো, রেলস্টেশন বা বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো আগে থেকেই ঢেকে দেওয়া বা সেগুলিকে যথাসম্ভব লুকিয়ে ফেলার প্রস্তুতিও সেরে রাখতে রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে মোদী সরকার।
এ ছাড়া সিভিল ডিফেন্স বা অসামরিক প্রতিরক্ষা প্রোটোকল সম্পর্কে নাগরিক ও পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, হামলার সময়ে বা জরুরি অবস্থায় নাগরিকদের মধ্যে যথাসম্ভব সমন্বয় রেখে দ্রুততার সঙ্গে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার প্রশ্নে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা বানিয়ে তা অভ্যাস করে রাখতেও বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে। এ জন্য জেলাশাসক, অসামরিক প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক, হোমগার্ডদের সঙ্গে স্কুল ও কলেজপড়ুয়াদের প্রশিক্ষণের কথা বলা হয়েছে।
মহড়ায় কী করতে হবে
বিমান হামলার সময়ে সতর্কতামূলক সাইরেন ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা।
নাগরিক, পড়ুয়াদের নাগরিক প্রতিরক্ষা প্রোটোকলের প্রশিক্ষণ।
হঠাৎ আলো নিবিয়ে দিয়ে ‘ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউট’ মহড়া।
গুরুত্বপূর্ণ ভবন, পরিকাঠামো আগে থেকে ঢেকে দেওয়ার প্রস্তুতি।
জরুরি অবস্থায় দ্রুত নিরাপদ স্থানে যাওয়ার নির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং তা অনুশীলন করা।
নিকটবর্তী বায়ুসেনা ঘাঁটির সঙ্গে কার্যকরী ‘হটলাইন’ সংযোগ স্থাপন।
‘কন্ট্রোল রুম’ এবং ‘ছায়া কন্ট্রোল রুম’ কতটা তৈরি, তারও মহড়া।