Anti-Naxal Operations

মাওবাদী শীর্ষ নেতাদের খোঁজে বস্তারে আরও ৩০টি ঘাঁটি খুলছে আধাসেনা! থাকবে জঙ্গলযুদ্ধে পটু ‘কোবরা’ কমান্ডো বাহিনীও

শুক্রবারই ছত্তীসগঢ়ের রাজধানী রায়পুরে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব গোবিন্দ মোহন, আইবি প্রধান তপন ডেকা, সিআরপিএফের ডিজি জ্ঞানেন্দ্র প্রতাপ সিংহ, ছত্তীসগঢ় পুলিশের ডিজি অরুণ দেব গৌতম-সহ অন্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৩৯
Share:

জঙ্গলের মধ্যে আধাসেনা বাহিনীর জওয়ানদের নজরদারি। —ফাইল চিত্র।

মাওবাদীদমন অভিযানে আরও গতি আনছে আধাসেনা বাহিনী। ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী উপদ্রুত এলাকায় আরও ৩০টি ঘাঁটি খুলছে সিআরপিএফ। মাওবাদীদের শীর্ষ নেতাদের খোঁজে এই ঘাঁটিগুলি থেকেই অভিযান চালাবে সিআরপিএফ এবং তাদের কমান্ডো বাহিনী ‘কোবরা’। বস্তুত, আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে দেশ থেকে নকশালবাদ নির্মূল করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি ছত্তীসগঢ়ের বিভিন্ন প্রান্তে ধারাবাহিক অভিযান শুরু করেছে যৌথ বাহিনী। এরই মধ্যে নতুন ৩০টি ঘাঁটি খোলার সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।

Advertisement

শুক্রবারই ছত্তীসগঢ়ের রাজধানী রায়পুরে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব গোবিন্দ মোহন, আইবি প্রধান তপন ডেকা, সিআরপিএফের ডিজি জ্ঞানেন্দ্র প্রতাপ সিংহ, ছত্তীসগঢ় পুলিশের ডিজি অরুণ দেব গৌতম-সহ অন্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। ঘটনাচক্রে, শুক্রবারের ওই বৈঠকের পরেই সরকারি সূত্রে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানায়, ছত্তীসগঢ়ে আরও ৩০টি ঘাঁটি খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আধাসেনা। ওই সূত্রের দাবি, বস্তার অঞ্চলের বিভিন্ন প্রত্যন্ত জায়গায় এই ঘাঁটিগুলি খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মূলত সিআরপিএফ জওয়ানেরাই এই অভিযানগুলি চালাবে। তবে জঙ্গলযুদ্ধের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ‘কোবরা’ বাহিনীও মাওবাদী উপদ্রুত এলাকাগুলিতে সক্রিয় থাকবে। ছত্তীসগঢ় পুলিশের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ২৩০ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু বস্তার এলাকাতেই নিহত হয়েছেন ২০৯ জন মাওবাদী। সাম্প্রতিক সময়ে বস্তার-সহ ওই ডিভিশনের বিজাপুর, কাঙ্কের, সুকমা, দান্তেওয়াড়া-সহ বিভিন্ন জেলায় মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী।

Advertisement

বস্তুত, ছত্তীসগঢ়কে মাওবাদ-মুক্ত করতে মূলত দু’টি পদক্ষেপ করছে প্রশাসন। এক দিকে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে জঙ্গলে জঙ্গলে অভিযান চলছে। অন্য দিকে মাওবাদীদের অস্ত্রসমর্পণ করে সমাজের মূলস্রোতে ফেরার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার আগামী বছরের মার্চ মাসের সময়সীমা ঘোষণার পর থেকে আত্মসমর্পণের প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এর জন্য ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে ছত্তীসগঢ় সরকারও। গত বছর সেই লক্ষ্যে ছত্তীসগঢ় পুলিশ ‘নিয়া নার নিয়া পুলিশ’ (আমাদের গ্রাম, আমাদের পুলিশ) প্রচার কর্মসূচি শুরু করেছিল। তার আগে ২০২০ সালের জুনে শুরু হয়েছিল ‘লোন ভারাতু’ (গোন্ড ভাষায় যার অর্থ ‘তোমার বাড়ি ফিরে যাও’) পুনর্বাসন কর্মসূচি।

এ ছাড়া ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই গত মার্চে ‘নকশাল আত্মসমর্পণ এবং আক্রান্তদের পুনর্বাসন নীতি ২০২৫’ ঘোষণা করেছেন। আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের পুনর্বাসন, চাকরি, আর্থিক সহায়তা এবং আইনি সুরক্ষা প্রদান করার মতো নানা বিষয় রয়েছে ওই প্রকল্পে। নতুন আত্মসমর্পণ নীতিতে মাওবাদী সংগঠনের রাজ্য কমিটি, আঞ্চলিক কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটি এবং পলিটব্যুরোর সদস্যদের মতো উচ্চপদস্থ ক্যাডারদের পাঁচ লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement