আসাম রাইফেলসের নায়েব সুবেদার রমেশচাঁদ শর্মার স্বীকারোক্তিকে হাতিয়ার করে ‘ন্যায়বিচার’ চান মণিপুরী তরুণী লেইসাংথেম লতা।
বর্তমানে কোহিমায় কর্মরত রমেশ আসাম রাইফেলসের উচ্চপদস্থ কর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, পদোন্নতি এবং পুরস্কারের লোভে মণিপুরে নিরীহ তরুণ-তরুণীদের জঙ্গি সাজানো, ভুয়ো সংঘর্ষ, ভুয়ো অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ঘটে চলেছে। নীচুতলার জওয়ানদের নির্দেশ পালনে বাধ্য করছেন অফিসাররা। কর্তাদের নির্দেশে নিজে ‘জড়িত’ এমন বেশ কিছু ঘটনার কথা সাংবাদিকদের জানান ওই নায়েব সুবেদার। তাঁর বর্ণনা, ২০১৩ সালে অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে এক মণিপুরী তরুণীকে গ্রেফতারের ঘটনা সাজায় আসাম রাইফলস। সেই তরুণীই লতা। লতা জানান, ২০১৩ সালে তিনি বোনকে নিয়ে ওষুধ কিনতে যান। দুই ব্যক্তি এসে একটি বাক্স দিয়ে আসাম রাইফলসের চৌকি পার করে দিতে বলে। তিনি নারাজ হওয়ায় একজন চড় মেরে গোটা পরিবারকে শেষ করে দেওয়ার হুমকি দেয়। বোনকে বাড়ি পাঠিয়ে একাই বাক্স নিয়ে এগিয়ে যান লতা। আসাম রাইফলসের শিবিরের কাছে আসতেই জওয়ানরা তল্লাশি শুরু করেন। শিবির থেকে এক ব্যক্তি বেরিয়ে এসে দাবি করে লতা এক জঙ্গি সংগঠনের নেত্রী। তাঁর বাক্স থেকে বের হয় পিস্তল, গ্রেনেড। ২০ বছরের তরুণীকে গ্রেফতার করা হয়। আদালত তাঁকে জেলে পাঠায়। লতার মা ইয়ুমসাং জানান, গরু বিক্রি করে, জমি বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করে কয়েক মাস পরে লতার জামিনের ব্যবস্থা করেন তিনি। ২৫ বছরের লতা এখন একটি কাপড়কলে কাজ করেন।
শর্মা জানান, যাঁরা লতাকে বাক্সটি দেন তাঁরাও আসাম রাইফলসেরই জওয়ান। এই স্বীকারোক্তিকে সামনে রেখে ফের আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে ঠিক করেছেন লতা। পাশাপাশি, যে ভাবে মণিপুরে পুরস্কার ও পদোন্নতির লোভে দরিদ্র ও নিরীহ মানুষদের হেনস্তার ঘটনা ঘটছে, তা জানিয়ে রমেশচাঁদও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু লাভ হয়নি।