Seema Haider

নাম ভাঁড়িয়ে নেপালের হোটেলে দিনের পর দিন নিশিযাপন! পাকিস্তানি সীমাকে স্ত্রী হিসাবে পরিচয় দেন সচিন

চলতি বছরের মার্চ মাসে নেপালের কাঠমান্ডুর কাছে একটি হোটেলে নাম ভাঁড়িয়ে প্রায় এক সপ্তাহ ছিলেন সীমা হায়দার এবং তাঁর ভারতীয় প্রেমিক সচিন মিনা। বুধবার এমনটাই দাবি করলেন ওই হোটেলের মালিক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কাঠমান্ডু শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৩ ১১:২৬
Share:

ভারতীয় প্রেমিক সচিনের সঙ্গে পাক বধূ সীমা। —ফাইল চিত্র ।

চলতি বছরের মার্চ মাসে নেপালের কাঠমান্ডুর কাছে একটি হোটেলে নাম ভাঁড়িয়ে প্রায় এক সপ্তাহ ছিলেন সীমা হায়দার এবং তাঁর ভারতীয় প্রেমিক সচিন মিনা। তখন অবশ্য চার সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে আসেননি তিনি। বুধবার এমনটাই দাবি করলেন ওই হোটেলের মালিক।

Advertisement

ওই হোটেল মালিক গণেশের দাবি, মার্চ মাসে তাঁর হোটেলে এসেছিলেন সীমা এবং সচিন। হোটেল ভাড়া করার সময় সচিন নিজের নাম ‘শিবাংশ’ বলে জানিয়েছিলেন। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে গণেশ বলেন, ‘‘সচিন এবং সীমা মার্চ মাসে ৭-৮ দিন আমাদের হোটেলের ২০৪ নম্বর কামরায় ছিলেন। বেশিরভাগ সময় তাঁরা হোটেলের ঘরেই থাকতেন। মাঝে মাঝে সন্ধ্যার দিকে বাইরে গিয়ে আবার রাত ১০টার মধ্যে হোটেল ঢুকে যেতেন।’’

গণেশ আরও জানান, সচিন ওই হোটেলে আগেভাগেই পৌঁছে গিয়েছিলেন এবং হোটেল কর্মীদের জানিয়েছিলেন, তাঁর ‘স্ত্রী’ সীমা পরের দিন আসবেন। সেই মতোই সীমা পরের দিন হোটেলে পৌঁছন। তবে তিনি একাই হোটেলে এসেছিলেন বলেও গণেশ জানিয়েছেন।

Advertisement

গণেশ বলেন, ‘‘সচিন ভুয়ো নাম ব্যবহার করে হোটেলে ছিলেন। তিনি নিজের নাম ‘শিবাংশ’ বলে জানিয়েছিলেন। ভারতীয় টাকা ব্যবহার করে হোটেলের ভাড়া মেটানো হয়েছিল।’’

হোটেলে প্রায় এক সপ্তাহ থাকার পর সীমা এবং সচিন আলাদা আলাদা ভাবে হোটেল থেকে বেরিয়ে যান বলেও জানিয়েছেন গণেশ।

প্রসঙ্গত, অনলাইন গেম পাবজি খেলার সময় ২০১৯ সালে সচিনের সঙ্গে পরিচয় হয় সীমার। সেখান থেকে প্রেম। ২২ বছরের যুবকের প্রেমে পড়ে প্রায় ১,৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে ছুটে আসেন ৩০ বছরের সীমা। শুধু একা নন। সঙ্গে ছিল তাঁর চার সন্তান, যাদের সবার বয়সই সাত বছরের কম। ভিসা ছাড়া নেপাল হয়ে বেআইনি ভাবে ভারতে প্রবেশ করার অভিযোগে ৪ জুলাই গ্রেফতার হন সীমা। তাঁকে আশ্রয় দিয়ে গ্রেফতার হন সচিন এবং তাঁর বাবা নেত্রপাল। পরে জামিনে ছাড়াও পান তাঁরা।

জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সীমা দাবি করেন, তিনি হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তিনি আর তাঁর পদবি ব্যবহার করবেন না বলেও জানান। তাঁর কথায়, ‘‘সীমা নামটি হিন্দু এবং মুসলমান যে কোনও ধর্মের মেয়েরই হয়। তাই আমি এখন থেকে শুধুই সীমা। অথবা, নিজেকে সীমা সচিন বলে পরিচয় দেব। আমার সন্তানদেরও নাম পরিবর্তন করে রাজ, প্রিয়ঙ্কা, পরি এবং মুন্নি রেখেছি।’’ তিনি এখন প্রতি দিন ঈশ্বরের পুজো করার পর হাত জোড় করে সকলকে নমস্কার করেন এবং বড়দের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন বলেও দাবি করেন তিনি। তাঁর দাবি, হিন্দু ধর্ম গ্রহণের জন্য তিনি নিরামিষ খাবার খাওয়া শুরু করেছেন।

অন্য দিকে, সীমার পাক প্রতিবেশীরা নাকি জানিয়েছেন, সীমা ছোটবেলা থেকেই চঞ্চল স্বভাবের। মাঝেমধ্যেই কাজের জন্য বাইরে যেতেন। তবে তিনি আসলে কোথায় যেতেন বা কী কাজ করতেন, তা নিয়ে আলোকপাত করতে পারেননি তাঁর প্রতিবেশীরা।

মঙ্গলবার রাতে সীমা, তাঁর প্রেমিক সচিন, সচিনের বাবা এবং সীমার সন্তানদের নিয়ে নয়ডা অফিস থেকে বার হয় এটিএসের দল। রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে দলটি সবাইকে রাবুপুরা থানায় নিয়ে যায়। সীমার ভারতে প্রবেশের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তাঁকে নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছিলেন এটিএস আধিকারিকেরা। সেই তদন্ত চলাকালীন একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বলে এটিএস সূত্রে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন