Chaitanyananda Saraswati Arrested

আগরার হোটেল থেকে ধৃত চৈতন্যানন্দ সরস্বতী, ছাত্রীদের যৌন হেনস্থা করায় অভিযুক্ত দিল্লির স্বঘোষিত ‘বাবা’

চৈতন্যানন্দের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মেসেজ পাঠানো, যৌন হেনস্থা এবং কটু মন্তব্য করার অভিযোগ তোলেন দিল্লির একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৭ জন পড়ুয়া। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হলেও এত দিন অধরাই ছিলেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:০১
Share:

চৈতন্যানন্দ সরস্বতী। —ফাইল চিত্র।

উত্তরপ্রদেশের আগরার একটি হোটেল থেকে স্বঘোষিত ‘বাবা’ স্বামী চৈতন্যানন্দ সরস্বতীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মেসেজ পাঠানো, যৌন হেনস্থা এবং কটু মন্তব্য করার অভিযোগ তোলেন দিল্লির একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৭ জন পড়ুয়া। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হলেও এত দিন অধরাই ছিলেন তিনি। ৬২ বছর বয়সি চৈতন্যানন্দের বিরুদ্ধে ‘লুক আউট’ নোটিসও জারি করা হয়েছিল। অবশেষে রবিবার রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

Advertisement

দিল্লির বসন্ত কুঞ্জ এলাকায় একটি ম্যানেজমেন্ট কলেজের ডিরেক্টর ছিলেন চৈতন্যানন্দ ওরফে পার্থসারথি। এফআইআর-এ উল্লেখ করা হয়েছে যে, তাঁর নির্দেশে ছাত্রীদের হস্টেলে স্নানঘরের সামনে ক্যামেরা বসানো দাবি করা হত, নিরাপত্তার স্বার্থে এই ক্যামেরা বসানো হয়েছে। কিন্তু ছাত্রীদের অভিযোগ, ক্যামেরার মাধ্যমে ছাত্রীদের স্নানের দৃশ্য দেখতেন তিনি। এ ছাড়াও হস্টেলের ঘরে ছাত্রীরা কী কী করছেন, সব কিছুর উপর নজরদারি চালাতেন ‘বাবা’।

ছাত্রীদের আরও অভিযোগ, হোয়াট্‌সঅ্যাপে রাতে মেসেজ পাঠাতেন ‘বাবা’। নানা রকম অশ্লীল প্রশ্ন করতেন। একইসঙ্গে কুপ্রস্তাবও দিতেন। এক ছাত্রীর দাবি, তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, প্রেমিকের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে কখনও লিপ্ত হয়েছেন কি না। যদি শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন, তা হলে গর্ভনিরোধক ব্যবহার করেছিলেন কি না। ছাত্রীদের বেশির ভাগই অভিযোগ তুলেছেন, তাঁদের গভীর রাতে মেসেজ পাঠিয়ে ‘বাবা’ বলতেন, ‘বেবি, আই লভ ইউ।’ ‘আই অ্যাডোর ইউ’। ‘সুইটি আই লাইক ইউ’। এ ছাড়াও তাঁর নিজের ঘরে ডেকে পাঠিয়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার জন্য জোরজবরদস্তি করা হত বলে অভিযোগ। ছাত্রীদের অভিযোগ, একটু বেশি রাত হলেই ‘বাবা’র ঘরে ডাক পড়ত। তার পর ‘বাবা’র সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হত। বিদেশ এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণের টোপ দেওয়া হত। কেউ রাজি না হলে তাঁকে জোর করে নিয়ে যাওয়া হত। এমনকি ‘বাবা’র প্রস্তাব না-মানলে ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হত বলেও অভিযোগ।

Advertisement

ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তে নেমে চৈতন্যানন্দের বেশ কয়েকটি ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস পেয়েছে দিল্লি পুলিশ। শুধু তা-ই নয়, তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হওয়ার পরেও ওই অ্যাকাউন্ট থেকে ‘বাবা’ ৫৫ লক্ষ টাকা তুলেছেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। অভিযোগ ওঠার পরেই ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সংস্থা শ্রী শ্রীনগেরি মঠ চৈতন্যানন্দকে ডিরেক্টরের পদ থেকে সরিয়ে দেয়। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে দিল্লির একটি আদালতে মামলাও করেন মঠ কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার আদালত এই মামলায় চৈতন্যানন্দের আগাম জামিনের আর্জি খারিজ করে দেয়।

দিল্লির এই ‘বাবা’ আদতে ওড়িশার বাসিন্দা। অভিযোগ উঠেছে গত ১৬ বছর ধরে একের পর এক মহিলার শ্লীলতাহানি করেছেন তিনি। এক অভিযোগকারিণীর দাবি, অতীতে কেউ কেউ ‘বাবা’র বিরুদ্ধে মুখও খুলেছেন। আশ্রম তথা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জানিয়েছেন। পুলিশেরও দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement